যশোরের শার্শায় এবার যুবলীগ ক্যাডারদের হাতে ধর্ষণের শিকার হলেন এক কলেজছাত্রী। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১০টার দিকে নাভারণ-সাতক্ষীরা সড়কের কুচেমোড়া নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে। মুমূর্ষু অবস্থায় ওই কলেজছাত্রীকে প্রথমে বাঁগআচড়া সাতমাইলের জোহরা ক্লিনিকে ও পরে নাভারণ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে গতকাল সন্ধ্যায় স্থানীয় কুচেমোড়া গ্রামের যুবলীগ ক্যাডার হাতকাটা রাজুসহ তার গ্রুপের ৫ জনকে আসামি করে শার্শা থানায় ভিকটিমের ভাই বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ আসামিদের আটকের চেষ্টা করছেন বলে থানার ওসি আবদুর রহিম মোল্যা জানান।
মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১০টার দিকে নাভারণ বাজার থেকে শরিফুল ইসলাম তার কলেজপড়ুয়া বোনকে নিয়ে মোটরসাইকেল যোগে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছিলেন। নাভারণ-সাতক্ষীরা সড়কের কুচেমোড়া নামক স্থানে পৌঁছলে একদল যুবক তাদের গতি রোধ করে। যুবকদের বাঁধার মুখে শরিফুল মোটরসাইকেলটি থামিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন। কিন্তু তার আগেই ওই দুর্বৃত্তরা শরিফুলকে বেধড়ক মারপিট করে তার মোটরসাইকেলটি ছিনিয়ে নেয়। এসময় ভাইকে ঠেকাতে এগিয়ে গেলে দুর্বৃত্তদের কুনজর পড়ে ওই কলেজছাত্রীর ওপর। তারা ভাই শরিফুলকে রাস্তার পাশের একটি গাছের সঙ্গে পিঠমোড়া দিয়ে বেঁধে তার সামনেই বোনের ওপর নির্যাতন করে। ৫ যুবকের পালাক্রমে নির্যাতনে কলেজ ছাত্রীটি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। বুধবার ভোরে স্থানীয় লোকজন মুমূর্ষু অবস্থায় ভাই-বোনকে উদ্ধার করে স্থানীয় বাঁগআচড়া সাতমাইল এলাকার জোহরা ক্লিনিকে ভর্তি করেন। খবর পেয়ে শার্শা থানার এএসআই আশিকুজ্জামান ওই ক্লিনিকে যান। তিনি ঘটনা শোনার পর প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ভাই ও বোনকে শার্শায় নিয়ে যান এবং দুপুরের পর ওই কলেজ ছাত্রী ও তার ভাইকে ফের নাভারণ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এ বিষয়ে ভাই শরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে রাজুসহ ৫ যুবককে আসামি করে শার্শা থানায় মামলা করেছেন। গণধর্ষণের শিকার ওই কলেজ ছাত্রীটি জানান, তিনি হাতকাটা রাজুকে চিনতে পেরেছেন। এদিকে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত রাজু ও তার ক্যাডাররা স্থানীয় যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে জানান কুচেমোড়া গ্রামের বাসিন্দা আকবর আলী ও বিশে মণ্ডল। তারা জানান, প্রায় প্রতি রাতেই হাতকাটা রাজুর নেতৃত্বে এসব ক্যাডাররা নাভারণ-সাতক্ষীরা সড়কে ডাকাতি, ছিনতাইসহ নানা রকমের অপরাধ সংঘটিত করে। কিন্তু সরকারি দলের আশ্রিত হওয়ায় পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় তারা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।