ব্যাপারটা এমন যে আপনি বাইরে বের হয়ে যেদিকেই দৃষ্টি দেবেন, দেখবেন কিছু মানুষ তাদের স্মার্টফোন হাতে নিয়ে বসে আছেন। এটা তেমন খারাপ কিছু না হলেও মিটিং এ গিয়ে, অন্য কারো সাথে দেখা করতে গিয়ে বা আড্ডার মাঝে স্মার্টফোন ব্যবহারের ব্যাপারটা যেমন বিরক্তিকর তেমনি দৃষ্টিকটু। স্মার্টফোন ব্যবহার করতে গিয়ে অনেকেই এমন কিছু কাজ করে ফেলেন যা আসলে স্বাভাবিক ভদ্রতার সাথে যায় না। দেখে নিন স্মার্টফোন ব্যবহারের কিছু স্বাভাবিক ভদ্রতা।
অনেকের ফোনই দেখতে এক রকম লাগে। আপনার ফোনে কল/টেক্সট আসলে যখন তাতে আলো জ্বলে উঠবে, তখন স্বাভাবিকভাবেই সবার মনোযোগ সেদিকে চলে যাবে এবং আড্ডা বা মিটিং এর পুরো আমেজটাই নষ্ট হয়ে যাবে।
অনেক সময়ে জরুরী কোনো কাজের জন্যই স্মার্টফোনটি ব্যবহার করা লাগতে পারে। সেক্ষেত্রে মিটিং বা আড্ডার সবাইকে বলে নিন যে আপনি দরকারি কোনো কাজ করছেন। এতে তারাও বিরক্ত হবেন না।
মিটিং বা আড্ডায় বোর হলেও স্মার্টফোন বের করে অযথাই টেপাটেপি করতে থাকবেন না। এতে অন্যরা বুঝতে পারে যে আপনি বোর হচ্ছেন এবং তারা কষ্ট পাবেন। বরং তাদের দিকে মনোযোগ দেবার চেষ্টা করুন। একটু বোর হলে আপনার তেমন কোনো ক্ষতি হয়ে যাবে না।
গাড়ি চালানোর সময়ে টেক্সটিং করাটা কেবল দৃষ্টিকটু নয়, তা ভয়াবহ ঝুঁকির একটি কাজ। হাঁটার সময়ে, সাইকেল চালানোর সময়ে, কথা বলতে বলতে, খেতে খেতে টেক্সট করাটা মোটেই ভালো নয়। এটা তো আর চুইং গাম চিবানোর মতো নয় যে আনমনেই করা যেতে পারে। হাতের কাজটি শেষ করে তবেই টেক্সট করতে বসুন।
আপনাকে যে টেক্সট পাঠাচ্ছেন তিনি এতটুকু আশা করবেন যে ব্যাপারটা ব্যক্তিগতই থাকবে, আপনি ছাড়া অন্য কেউ তা দেখতে পাবে না। হোম স্ক্রিনে টেক্সট প্রিভিউ দেখা গেলে অন্যদের দেখে ফেলার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই এই অপশন বন্ধ করে রাখাটাই ভদ্রতা হবে।
অনেক সময়ে বন্ধু তার একটি ছবি দেখার জন্য স্মার্টফোনটি আমাদের হাতে দেয়। তখন ওই একটি ছবি দেখার পর পরই অনেকে তার আগে-পরের ছবিও দেখা শুরু করেন। এ কাজটিতে বিরক্ত হন অনেকেই। যে ছবিটি আপনাকে দেখতে দেওয়া হয়েছে সেটি দেখে ফোন ফেরত দিয়ে দিন। পুরো অ্যালবাম দেখার আগে অবশ্যই অনুমতি নিয়ে নিন।
বন্ধু বা প্রিয়জনের সাথে সময় কাটানোর স্মৃতি ক্যামেরায় ধরে রাখতে ইচ্ছে হতেই পারে আপনার। কিন্তু সব সময় যদি আপনি ছবি তুলতেই ব্যস্ত থাকেন তবে বন্ধুদের সময় দেবেন কি করে? তাই স্থান-কাল-পাত্র বুঝে ছবি তুলুন।
আপনি যদি এতোই শব্দ বাড়িয়ে দেন যে আশেপাশের সবাই গানটি শুনতে পারে এবং এতে বিরক্ত হয়, তবে অবশ্যই তা ভদ্রতার পরিপন্থি। আর মাঝে মাঝে কান থেকে হেডফোনটি কিছু সময়ের জন্য খুলেও রাখুন। আপনার আশেপাশের মানুষেরা হয়তো আপনার সাথে কথা বলতে চাইছে কিন্তু হেডফোনের কারণে কথা বলতে সাহস করছে না।
এটা বর্তমানে সবারই একটু একটু করে জানা হয়ে যাচ্ছে যে প্রযুক্তি থেকে কিছু সময় আলাদা কাটানো স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। তার মানে এই নয় যে পুরো সপ্তাহ বা পুরো দিন স্মার্টফোন ছাড়া চলতে হবে আপনাকে। ছোট ছোট সময়ের জন্য তা করতে পারেন। পরিবারের সবার সাথে বাড়ির কাছে কোথাও খেতে যাচ্ছেন? ফোন না নিয়ে যেতে পারেন। অথবা বাইরে হাঁটতে বা দৌড়াতে যেতে পারেন ফোন ছাড়া। পোষা কুকুর বা বিড়াল নিয়ে খেলতেও যেতে পারেন ফোন ছাড়া। তবে অবশ্যই পরিবারের মানুষদের জানিয়ে যান যে আপনি ফোন সাথে নিচ্ছেন না।