এনায়েত মজুমদার,চাঁদপুর প্রতিনিধি-
নুরজাহান বেগমের স্বামী মাঈনুদ্দিন প্রবাসী। দুই সন্তানসহ সারাদিন বাসায় বন্দী জীবন কাটান। ইতিমধ্যে তার বাসার (১তলা বিল্ডিং) জানালাগুলো ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। ভাঙ্গা হয়েছে রান্না ঘরটিও। এভাবে মানুষ কিভাবে বাঁচবে নুরজাহান প্রশ্ন রাখেন স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে।
ঘটনাটি চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন টোরাগড় গ্রামের সুলতান সর্দার বাড়ির। একই বাড়ির মৃত ইদ্রিস মিয়ার ছেলে খোকন মিয়া ওরফে সন্ত্রাসী খোকনের কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে বাড়ির লোকজন সাংবাদিকদের কথা গুলো বলেন। খোকন ছিলো একজন চিটকে চোর বর্তমানে সে এলাকায় সন্ত্রাসী হিসেবে রুপ নিয়েছে।
খোকন মিয়ার আপন চাচী হালিমা বেগম বলেন, মাস ছয়েক আগে রাতে প্রকৃতির ডাকে ঘর থেকে বের হন। ঘরে এসে খাটের উপর শোয়ার পর হঠাৎ আমার মুখ চেপে ধরে ছুরির ভয় দেখিয়ে আমাকে অপমান করতে চায় খোকন। পরে ডাক-চিৎকার দিলে মানুষ জেগে উঠলে সে সরে পড়ে।
গতকাল শুক্রবার সকালে সুলতান সর্দার বাড়িতে গেলে খোকন মিয়াও সাংবাদিকদের পিছনে বাড়িতে যায়। বাড়ির নারী পুরুষরা সাংবাদিকদের সামনে আসতে চাইলে সে প্রকাশ্যে না আসার জন্য তাদের হুমকি প্রদান করে এবং ভয়ভীতি দেখায়।
সর্দার বাড়ির মুরুব্বি আব্দুল মমিন জানান, গত ১ অক্টোবর খোকন মিয়া আমার ভাই আবুল বাসার সর্দারের পিঠে দারালো রামদা দিয়ে কোপ দেয়। তখন স্থানীয়রা তাকে গণপিটুনি দিয়ে থানা পুলিশে সোপর্দ করে। গত সপ্তাহে সে জামিনে বের হয়ে এসে উল্টো তাকে নির্যাতনের অভিযোগ এনে আমার ভাইসহ ৮ জনকে আসামী করে থানায় একটি মামলা দায়ের করে। তিনি বলেন, সন্ত্রাসী চোরের মামলায় আমার ভাই পলাতক।
বাড়ির বাসিন্দা ও ধড্ডা মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরী ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তার কারণে বাড়ির নারীরা সারাদিন আতঙ্কে থাকেন। কখন কার উপরে আক্রমণ করে বসেন বলা যায় না। তার কাছে চাচী, জেঠী, বোন কেউ নিরাপদ নন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আকবার হোসেন মৃধা, হুমায়ুন কবির, স্বপন ও বাড়ির শতাধিক নারী-পুরুষ।
আকবর হোসেন বলেন, পিছন থেকে একটি প্রভাবশালী চক্র তাকে দিয়ে এগুলো করাচ্ছে। এতদিন সে এলাকায় চোর হিসাবে চিহ্নিত ছিল। এখন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করেছে।
বাড়ির সাধারণ মানুষের অভিযোগ, সে ইতিমধ্যে সাতটি বিয়ে করেছে। তার অত্যাচার নির্যাতনের কারণে ৪/৫ মাসের বেশি কোন স্ত্রী থাকে নি। সে ঘরে ইয়াবা, ফেন্সিডিলসহ নারীদের নিয়ে আসর বসায়।
হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ শাহ্আলম জানান, তার বিরুদ্ধে পল্লী বিদ্যুতের ট্রান্সফর্মার চুরির ঘটনাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। তাকে পিটুনির বিষয়টি নিয়ে একটি মহল রাজনৈতিক রূপ দেয়ার চেষ্টা করছে।
তবে খোকন দাবি করেন, বাড়িতে তার সম্পত্তি দখল করার জন্যে প্রভাবশালী একটি গ্র“প তাকে সন্ত্রাসী, চোর বানানোর চেষ্টা করছেন। আবুল বাসার সর্দার এ গ্র“পের নেতৃত্বে রয়েছেন। বাড়ির নারীদের অভিযোগ প্রসঙ্গে খোকন বলেন, বাড়ির অর্ধেক নারী তার পে কথা বলার রয়েছে।