দরপত্র ডাকা ছাড়াই চলতি অর্থবছরে নয় লাখ টন গম আমদানি করবে সরকার। প্রথম দফায় আমদানি হবে ইউক্রেন থেকে আড়াই লাখ টন গম। অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি গতকাল রোববার এ জন্য নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে এ গম আমদানি করার প্রস্তাবটি মন্ত্রিসভা কমিটিতে উপস্থাপন করে খাদ্য মন্ত্রণালয়।
সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ সম্মেলনকক্ষে গতকাল অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী মোশাররফ হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।
এরপর একই কক্ষে অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির একটি বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়। উভয় বৈঠকের পর সাংবাদিকেরা অনুরোধ করলেও অর্থমন্ত্রী কোনো কথা বলেননি।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে গম আমদানি করতে গেলে অনেক ক্ষেত্রে সময়মতো আমদানি করা যায় না। গত অর্থবছরে কার্যপত্র নিয়েও অনেকে গম আদানি করে সরকারকে দিতে পারেননি।
জানা গেছে, ইউক্রেন থেকে গম আমদানিতে প্রতি টনে খরচ পড়বে ২৯৭ দশমিক ৫০ ডলার। চলতি অর্থবছরে নয় লাখ টন গম আমদানির লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে সরকারের।
অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারির (পিপিপি) আওতায় চট্টগ্রামের কুমিরা অঞ্চলে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলপিজি) বোতল তৈরির প্লান্ট স্থাপনেরও অনুমোদন দেওয়া হয়। বিশ্বের পাঁচটি দেশ থেকে এক লাখ টন এলপিজি আমদানি করা হবে—যা বিক্রি হবে সারা দেশে। বর্তমানে পাঁচ লাখ টন এলপিজির চাহিদা রয়েছে বলে জ্বালানি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে ক্রয় কমিটির বৈঠকে এক লাখ টন ইউরিয়া সার আমদানি, বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের আধুনিকায়নে আন্তর্জাতিক পরামর্শক নিয়োগ ও ব্রুনাই থেকে ৬০ হাজার টন গ্যাস অয়েল আমদানিসহ ১২টি প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব মোস্তাফিজুর রহমান এ তথ্য জানান।
সূত্র জানায়, এক লাখ টন ইউরিয়া আমদানি হবে ২৫ হাজার টন করে। চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরের মাধ্যমে ৫০ হাজার টন করে এ সার আমদানি করা হবে। এতে মোট ব্যয় হবে ২৬৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।
এ ছাড়া সিভিল এভিয়েশনের আধুনিকায়নে আন্তর্জাতিক পরামর্শক নিয়োগে ২৩ কোটি ৬২ লাখ টাকা এবং ব্রুনাই থেকে ৬০ হাজার টন গ্যাস অয়েল আমদানিতে ৪০০ কোটি ১৬ লাখ টাকা ব্যয় হবে বলে জানান মোস্তাফিজুর রহমান।
বৈঠকে এডিবির অর্থায়নে রেলওয়ের জন্য ২০০টি মিটার গেজ ও ১০০টি ব্রড গেজ প্যাসেঞ্জার ক্যারেজ ক্রয়ের দুটি প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৭২৯ কোটি ১৮ লাখ টাকা।
এ ছাড়া ঢাকা পানি সরবরাহ উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য নিয়োগ করা পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের বর্ধিত কাজ ও সময়ের জন্য ১০৯ কোটি ৩৫ লাখ টাকার সংশোধিত ক্রয় প্রস্তাব এবং ৩৮৪ কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন প্রকল্পের পরামর্শক নিয়োগের প্রস্তাবও অনুমোদিত হয়েছে বৈঠকে।