সৌদি আরবের শ্রমবাজার আরও কড়াকড়ি হচ্ছে। সে দেশের অনেক প্রতিষ্ঠান নতুন করে আর কোন বিদেশী শ্রমিককে কাজ দিতে পারবে না। পারবে না ভিসার জন্য আবেদন করতে। স্পন্সর পরিবর্তন করাতে পারবে না। আবার কোন কোন ক্ষেত্রে বিদেশী শ্রমিকদের অবস্থানের মেয়াদ কমপক্ষে দু’বছর করে কমিয়ে দেয়া হচ্ছে। এ নিয়ে বিদেশী শ্রমিকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে হতাশা। বিশেষ করে সৌদি আরবে কর্মরত বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশী শ্রমিক রয়েছেন। রয়েছেন ভারত, পাকিস্তান সহ এ অঞ্চলের বিভিন্ন দেশের শ্রমিক। এ নিয়ে সৌদি আরবের পত্রপত্রিকায় বড় বড় করে রিপোর্ট প্রকাশিত হচ্ছে। তাতে বলা হচ্ছে- হলুদ (ইয়েলো) ও লাল (রেড) ক্যাটিগরিভুক্ত সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠানগুলো আর নতুন করে কোন বিদেশী শ্রমিককে ওয়ার্ক পারমিট দিতে পারবে না। এ দু’ক্যাটিগরির প্রতিষ্ঠান থেকে নতুন ভিসা আবেদন গ্রহণ করা হবে না। স্পন্সর পরিবর্তন করতে পারবে না। তাদের শ্রমিক বা কর্মীদের পেশা পরিবর্তন করাতে পারবে না। সৌদি আরবের শ্রম মন্ত্রণালয় এসব বিধি-নিষেধ দিয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১১ সালে নিতাকাত নামে সৌদিকরণ কর্মসূচি চালু করা হয়। এর ডেডলাইন পেরিয়ে যায় ২০১৩ সালে। ওই সময়ের মধ্যে সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিদেশী শ্রমিকদের সঙ্গে সৌদি আরবের নাগরিকদের অনুপাত হিসাব করে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে মোট চারটি ক্যাটিগরিতে ভাগ করা হয়। এগুলো হলো- প্রিমিয়াম, গ্রিন, ইয়েলো ও রেড। যেসব প্রতিষ্ঠানে বা কোম্পানিতে সৌদি নাগরিকদের অনুপাত বেশি সেগুলোকে ফেলা হয়েছে প্রিমিয়াম ও গ্রিন ক্যাটিগরিতে। অন্যদিকে যেসব কোম্পানিতে সৌদি আরবের নাগরিকদের অনুপাত খুব কম সেগুলোকে ফেলা হয়েছে ইয়েলো ও রেড ক্যাটিগরিতে। ওদিকে সৌদি আরবের শ্রম মন্ত্রণালয় সম্প্রতি তাদের নিতাকাতে যে সংস্কার করেছে সে অনুযায়ী, যেসব কোম্পানি অবস্থান করছে গ্রিন জোনের অনেক নিচে তাদেরকে স্পন্সরশিপ পরিবর্তন ও ভিসা আবেদন করতে দেয়া হবে না। এ বিধিনিষেধ কার্যকর হয়েছে গত শনিবার। তবে এসব প্রতিষ্ঠান শ্রমিকদের পেশা পরিবর্তন, ওয়ার্ক পারমিট নবায়ন করাতে পারবে। যদি শ্রমিকের জাকাত ও আয়কর সার্টিফিকেটের মেয়াদ শেষ হয়ে যায় তাহলে কাজের ক্ষেত্রে বাড়তি ৬ মাস সময় দেয়া হবে। তবে ইয়েলো জোনে রয়েছে যেসব কোম্পানি তাতে কর্মরত বিদেশী শ্রমিকদের অবস্থানের মেয়াদ ৬ বছর থেকে কমিয়ে ৪ বছর করা হবে। এই সময় আগামী বছরের ২০শে এপ্রিল আরও দু’ বছর করে কমানো হতে পারে। ওদিকে সৌদি আরবে সৌদিকরণ নামে যে নতুন কর্মসূচি চালু হয়েছে তার ফল কি হয়েছে সেটা যাচাই করতে আগামী ২৩শে ডিসেম্বর থেকে বেসরকারি কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানে শতকরা কত ভাগ সৌদি নাগরিক রয়েছেন তা পরিমাপ শুরু করবে মন্ত্রণালয়।