খলিল মোহাম্মদ, কিশোরগঞ্জ: ১৯৭১ সালের ২৭ অক্টোবর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী সাথে একটানা ৯ ঘন্টা যুদ্ধ করে বাজিতপুরকে শত্র“মুক্ত করে আনিসুর রহমান, অধ্যাপক ইয়াকুব মিয়া, আব্দুল হাই, আব্দুল মোতালিব বসু,আব্দুল বারী খান, হোসেন আলী সমন্বয়ে গড়ে বাহিনীরা।
১৯৭১ সালের ৪ মে প্রথম পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাজিতপুরে প্রবেশ করে। বাজিতপুর এবং এর আশপাশের বিভিন্ন গ্রামে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালায়, ঘর-বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। এ দিন হানাদার বাহিনীর গুলিতে ২ শতাধিক লোক শহীদ হন এবং অসংখ্য শিশু, যুবক, যুব মহিলা ও বয়স্ক লোকদের নিয়ে যাওয়া হয় অজানা স্থানে। তাদের লাশও আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। শুধু নদীতে কিছু বিকৃত লাশ ভাসতে দেখা গেছে।
নরসিংদীর রায়পুরায় অবস্থানরত বীর ইপিআর এর সহযোগিতায় মুক্তিযোদ্ধারা ২৭ অক্টোবর গুরুত্বপূর্ণ জুমাপুরের ব্রিজ ভেঙে দিয়ে চারদিক থেকে বাজিতপুর থানায় আক্রমণ চালায়। ভোর রাত হতে বিকাল ৩টা পর্যন্ত একটানা প্রচণ্ড যুদ্ধ চলে। অবশেষে থানা থেকে হানাদার বাহিনীর দোসর অনেকেই পালিয়ে যায়। অনেকে নিহত হয়। অনেকেই বীরমুক্তিযোদ্ধা ও দেশপ্রেমিক জনতার হাতে ধরা পড়ে। ২৭ অক্টোবর বিকালে বাজিতপুরের ঘরে ঘরে উড়তে থাকে বাংলাদেশের পতাকা।
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে ইতিহাস নতুন প্রজন্ম জানেনা, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক কোন কর্মসূচি নেই বাজিতপুরে। নির্মিত, অধ নির্মিত, স্মৃতি সৌধ গুলো দেখার কেও নাই। বাজিতপুর বাজার স্মৃতি সৌধটির চার পাশে অসঙ্খ বিলবোর্ড স্থাপন করে দিনের পর দিন মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের রক্তের ঋনকে অপমানিত করছে। দেখে মনে হবে এই যেন নির্বাচনের ভোট কেন্দ্র। অথচ এই স্মৃতি সৌধটির পাশদিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার বিবেকবান মানুষ, অসঙ্খ বীর মুক্তিযোদ্ধারা চলাচল করছে।
বাজিতপুরের ডাকবাংলায় অধ নির্মিত প্রধান স্মৃতি সৌধটি ২ যুগেও পূন্যতা পাইনি। অবহেলায় আগাছার আক্রমনে হাড়িয়ে যাচ্ছে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের রক্তের ঋন। দেখে মনে হবে কোন দিন কোন কালে দেখার কেও ছিলনা বাজিতপুরে।