উচ্চ আদালতে মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী খালাস পাবেন বলে আশা করেছেন জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমাদ ও ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান।
তারা বলেন, “ট্রাইব্যুনালের এ রায়ের বিরুদ্ধে মাওলানা নিজামী উচ্চ আদালতে আপিল করবেন। উচ্চ আদালত ন্যায়বিচার নিশ্চিত করলে মাওলানা নিজামী অবশ্যই বেকসুর খালাস পাবেন বলে আমরা গভীরভাবে বিশ্বাস করি। ট্রাইব্যুনালের এ রায়ে মাওলানা নিজামী ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।”
বুধবার দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর রায় ঘোষণার পর গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা একথা বলেন।
ভারপ্রাপ্ত আমির ও সেক্রেটারি বলেন, “সরকার জামায়াতে ইসলামীকে নেতৃত্বশূন্য করার জন্য মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীসহ শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে সরকার পক্ষ যে অভিযোগ উত্থাপন করেন, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও কাল্পনিক। যার প্রমাণ তার জন্মস্থান পাবনার একজন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারসহ তিনজন বিশিষ্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা। তারা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ট্রাইব্যুনালে যে সাক্ষ্য দিয়েছেন সেখানে তারা স্পষ্টভাবে বলেছেন, মাওলানা নিজামীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সঙ্গে তার দূরতম কোনো সম্পর্ক নেই।”
তারা অভিযোগ করে বলেন, “সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের নামে জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের হত্যার পরিকল্পনা গ্রহণ করে। শুরু থেকেই সরকার এই বিচার কার্যক্রমকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করার অপচেষ্টা চালায়। সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে দেশকে এক ভয়াবহ সংঘাতের দিকে ঠেলে দিতে চায়। সরকারের জুলুম, নির্যাতন ও মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে।”
তারা এ রায়ের প্রতিবাদে বৃহস্পতি-রবি ও সোমবার দেশব্যাপী হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
কর্মসূচিতে রয়েছে, ৩০ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে ৩১ অক্টোবর শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার হরতাল। ৩১ অক্টোবর শুক্রবার আমিরে জামায়াত মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর এই মুহূর্তে মুক্তি ও সাবেক আমির, ভাষা সৈনিক মরহুম অধ্যাপক গোলাম আযমের রূহের মাগফিরাত কামনায় দোয়াসহ সরকারের ষড়যন্ত্রের শিকার সব নেতার জন্য দেশব্যাপী দোয়ার অনুষ্ঠান। ১ নভেম্বর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীকে হত্যার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ও আটক সব নেতাকে নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি। ২ নভেম্বর রোববার সকাল ৬টা থেকে ৪ নভেম্বর মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত দেশব্যাপী ৪৮ ঘণ্টার সর্বাত্মক হরতাল।
উপরোক্ত কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ উপায়ে সফল করে তোলার জন্য জামায়াতে ইসলামীর সব শাখা এবং কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, সুশীলসমাজ ও পেশাজীবীসহ সব শ্রেণী-পেশার মানুষ তথা দেশের আপামর জনতার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতের এই শীর্ষ দুই নেতা।
অ্যাম্বুলেন্স, লাশবাহী গাড়ি, হাসপাতাল, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি হরতালের আওতামুক্ত থাকবে বলেও ঘোষণা দিয়েছে দলটির পক্ষ থেকে।