শিল্প ও বন্দর নগরী খুলনায় বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে টেস্ট ম্যাচকে সামনে রেখে সাজ সাজ রব চলছে। এখন খুলনার রাস্তায় দেখা যাচ্ছে ব্যস্ত শ্রমিকদের ছোটাছুটি। কেউ সড়ক ডিভাইডারগুলো ঘষা-মাজা করছেন, আবার কেউ রঙ করছেন। কেউ বা গাছগুলো ছেঁটে পরিষ্কার করছেন। সড়কদ্বীপে হ্যালোজেন বাতি লাগাচ্ছেন সিটি করপোরেশনের কর্মীরা। গুরুত্বপূর্ণ ভাস্কর্যগুলোয় পড়ছে নতুন রঙের প্রলেপ। তোরণ নির্মাণের ব্যস্ততা তো আছেই। সব মিলিয়ে বিশাল এক কর্মযজ্ঞ। সিটি করপোরেশনের সঙ্গে এ যজ্ঞে শামিল হয়েছে বিভিন্ন ব্যাংক, বিজ্ঞাপনী সংস্থা সহ ক্রীড়ানুরাগীরা। কেনই বা হবেন না? প্রায় দুই বছর পর আবারও আন্তর্জাতিক টেস্ট ম্যাচের আসর বসছে খুলনায়। আগামী ৩রা নভেম্বর শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দলের সঙ্গে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে মুখোমুখি হবে বেঙ্গল টাইগাররা। ভিনদেশী অতিথিদের বরণ করতে ঘঁষে-মেজে চকচকে করা হচ্ছে মহানগরী খুলনাকে।
বিসিবি থেকে জানা গেছে, আগামীকাল ৩০শে অক্টোবর খুলনা পৌঁছাবে জিম্বাবুয়ে ও বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। বিশ্রাম শেষে ৩১শে অক্টোবর অনুশীলন শুরু করবে তারা। তাদের সঙ্গে থাকবে আইসিসি’র কর্তাব্যক্তিরা। এর আগেই সাজসজ্জার সব প্রস্তুতি শেষ করতে চায় স্থানীয় আয়োজকরা।
সূত্র জানায়, নগরীর সড়কগুলো হকারমুক্ত করতে গত ১৫ই অক্টোবর থেকেই অভিযান শুরু করেছে কেসিসি। ইতিমধ্যে নগরীর প্রধান প্রধান সড়কের দু’পাশ এবং ডিভাইডার থেকে অবৈধ স্থাপনা, বিভিন্ন দলের ব্যানার, বিলবোর্ড ও ফেস্টুন অপসারণ করা হয়েছে। সড়ক ডিভাইডারগুলো নতুন করে রঙ করা হচ্ছে। নগরীর রয়েল মোড়ের চিংড়ি ভাস্কর্য, ময়লাপোতা মোড়ের ক্রীড়া ভাস্কর্য মৈত্রী এবং ষাটগম্বুজ মসজিদের রেপ্লিকা, নতুন রাস্তার মোড়ে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য পরিষ্কার করে নতুন রঙ করার কাজ শুরু হয়েছে। সাতরাস্তা মোড়ের সড়কদ্বীপের গাছের ভাঙাচোরা অংশ অপসারণ করে ঠিকঠাক করা হচ্ছে। এসব স্থানে অতিরিক্ত আলোর ব্যবস্থাসহ খুলনা নগরীর প্রবেশদ্বার আফিল গেট এলাকার ‘খুলনা গেট’-এ করা হয়েছে আলোকসজ্জা। এতো গেল সিটি করপোরেশনের প্রস্তুতি। ব্যক্তিগত উদ্যোগে নগরীর শিববাড়ি, ময়লাপোতা ও রয়েল চত্বরে আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করেছেন খুলনা বিভাগের বিসিবি পরিচালক শেখ সোহেল। এছাড়া সুন্দরবনের বাঘ, হরিণসহ বিভিন্ন প্রতিকৃতি স্থাপনের পাশাপাশি একাধিক স্থানে তোরণ নির্মাণ করছেন তিনি।
খুলনার সিটি মেয়র মনিরুজ্জামান মনি বলেন, নগরীর সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য কয়েক ধাপে কাজ চলছে। গুরুত্বপূর্ণ মোড় সুসজ্জিতকরণের পাশাপাশি খেলোয়াড়রা যেসব সড়ক দিয়ে যাবে সেখানকার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। সড়ক ডিভাইডার নতুন করে রঙ ও ভাস্কর্যগুলো পরিষ্কার করতে বিজ্ঞাপনী সংস্থাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। হোটেলসহ ও বড় স্থাপনার মালিকদের আলোকসজ্জা করতে চিঠি দেয়া হয়েছে। তিনি নিজে এসব কাজ সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছেন।
বিসিবি পরিচালক শেখ সোহেল জানান, খুলনার সড়কদ্বীপসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় আলোকসজ্জার জন্য ঢাকা থেকে টিম এসেছে। সোমবার বিকাল থেকে শিববাড়ি মোড় আলোকসজ্জা করা হয়েছে। দু’একদিনের মধ্যে অন্য রূপে দেখা যাবে খুলনাকে।