পুলিশের কাছেও নারীরা নিরাপদ নয় বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। তিনি বলেন, নারীদের নিরাপত্তার জন্য পুলিশের বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে এবং ঢাকাসহ সব শহরে রাতের টহলে পুরুষের সঙ্গে নারী পুলিশের টহলের ব্যবস্থা করতে হবে। গতকাল রাজধানীর একটি কনভেনশন সেন্টারে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। নারীর প্রতি যৌন সহিংসতা ও হয়রানি নিয়ে ‘অ্যাকশন এইড’ বাংলাদেশের করা গবেষণা তথ্য প্রকাশ ও ‘নারীর জন্য নিরাপদ নগরী’ শীর্ষক ক্যাম্পেইন-এর উদ্বোধন উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তথ্যমন্ত্রী বলেন, যারা নারী নির্যাতন করে তারা সাপ। সাপের কামড়ে লজ্জা পেতে নেই। তাই যারা নারী নির্যাতনের শিকার হবে তাদের লজ্জা পেলে চলবে না। নারী নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হবে। আর যারা নারী নির্যাতন করবে তাদের বলতে হবে ‘তুই জানোয়ার, তুই জানোয়ার’। মন্ত্রী বলেন, এই মুহূর্তে নারীদের পক্ষে বেশকিছু আইন আছে। কিন্তু এখনও নারীরা নির্ভয়ে চলাচল করতে পারে না। ‘নিরাপদ নগরী নির্ভয় নারী’ এটি মানসিক শক্তির বিষয়। যখন কোন নারী নির্যাতনের শিকার হয়, তখন বেশির ভাগ নারী নীরব থাকে। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। যেখানেই নারী নির্যাতন সেখানেই প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ করতে হবে। যৌন হয়রানি বন্ধে সচেতনতামূলক নাটক তৈরি করতে হবে। যারা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন তাদের অপবাদ না দিয়ে সম্মান দেখাতে হবে। ‘অ্যাকশন এইড’ বাংলাদেশের নির্বাহী পরিষদের কোষাধ্যক্ষ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক উন্নয়নবিষয়ক সংসদীয় সচিব লিন ফেদারস্টোন, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী প্রমুখ। অনুষ্ঠানে ‘অ্যাকশন এইডের’ গবেষণা তথ্য তুলে ধরেন ড. মান্নান। তিনি জানান, ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট ও নারায়ণগঞ্জ শহরের এক হাজার ২০০ নারী-পুরুষের উপর গবেষণাটি চালানো হয়। এরমধ্যে ৮০০ নারী ও কিশোরী, যাদের বয়স ১৫ থেকে ৫৯ বছরের মধ্যে এবং বাকি ৪০০ জন পুরুষ। গবেষণা তথ্যে আরও উল্লেখ করা হয়, নগরের সাড়ে ৪৭ ভাগ নারী গণপরিবহন, রাস্তা কিংবা উন্মুক্ত জনবহুল এলাকায় চলাফেরা করার ক্ষেত্রে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। ৮৮ ভাগ নারী পথচারী পুরুষযাত্রী ও ক্রেতার মাধ্যমে হয়রানির শিকার হন। শহরের ৯৭ শতাংশ নারী যৌন হয়রানিকে সহিংসতা মনে করেন। যৌন সহিংসতা এড়াতে ৬৪ ভাগ নারী রাতে ঘরের বাইরে যান না। ৬০ ভাগ নারী নিরাপত্তাহীনতার কারণে রাতে ঘরের বাইরে দলগতভাবে যেতে চান। গবেষণায় অংশ নেয়া ৮১ শতাংশ মানুষ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কাছে সহায়তার জন্য যেতে চান না। তারা মনে করেন, পুলিশের সাহায্য চাইলে সমস্যা বাড়ে।