প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর ব্যর্থ হয়েছে বলে দাবি করেছে বিএনপি। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা আয়োজিত ‘২৮শে অক্টোবর ট্র্যাজেডি-২০০৬: রুখে দাঁড়াও আওয়ামী জাহেলিয়াত’ শীর্ষক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ দাবি করেন। তিনি বলেন, বর্তমান অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী ঘটা করে সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর করেছেন। হোয়াট ইজ দ্য নিট রেজাল্ট? রেজাল্ট হচ্ছে- সেখানে আগে থেকেই নারী গৃহকর্মী নেয়া হতো, তা চলবে। কিন্তু শ্রমিক নিয়োগের ব্যাপারে কোন চুক্তি হয়নি। অর্থাৎ আরব আমিরাতে প্রধানমন্ত্রীর সফর ফেল হয়েছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশের বাইরে গেলে ‘সাকসেস সাকসেস’ বলে তার ফটোসেশনের ছবি গণমাধ্যমে ছাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। অথচ দেশের মানুষের ক্ষতি রোধে তারা কোন উদ্যোগ নিচ্ছে না। সরকারকে বলবো, মানুষজনকে শান্তিতে বসবাস করতে দিন। নইলে অতীতেও কেউ পার পায়নি, আপনিও পাবেন না। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, মিথ্যা মামলা দিয়ে বিরোধী জোটের নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে। অন্যদিকে বিচার বিভাগ, প্রশাসনসহ সব প্রতিষ্ঠানকে নিয়ন্ত্রণ করে সরকার দেশে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করতে চাইছে। এমন কোন ইউনিয়ন নেই বিরোধী নেতাকর্মীদের নামে মামলা হয়নি। আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ছয়টি মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে দু’টি মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়েছে, যার কোন ভিত্তিই নেই। অন্যদিকে ক্ষমতাসীনদের ৭৫০০ মামলা তুলে নিয়েছে সরকার। দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা আলমগীর বলেন, এই পরিস্থিতিতে আন্দোলন ছাড়া বিকল্প নেই। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে এই দানব সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সবাইকে রাস্তায় নেমে আসতে হবে। মির্জা আলমগীর বলেন, ২০০৬ সালের ২৮শে অক্টোবর একটি কালো দিন। ওই দিন থেকেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের পক্ষের শক্তিকে ধ্বংস করে তাঁবেদার সরকার প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্র শুরু হয়। এরই অংশ হিসেবে পরবর্তীতে ওয়ান ইলেভেনের সৃষ্টি হয়। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নামে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দেশের রাজনীতিতে বিরাজনীতিকরণের নীল-নকশা শুরু হয়। উল্লেখ্য, ২০০৬ সালে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতা ছাড়ার পরপরই রাজপথে রক্তক্ষয়ী সংঘাতে জড়ায় বিবদমান রাজনৈতিক দলগুলো। ২৮শে অক্টোবর নয়াপল্টনে ১৪ দলীয় জোট ও জামায়াতে ইসলামীর সংঘর্ষে উভয়পক্ষে ১৩ জন নিহত হয়। ওই ঘটনার স্মরণে দিনটিকে ‘২৮শে অক্টোবর ট্র্যাজেডি’ দিবস হিসাবে পালন করে বিএনপি ও শরিকরা। আলোচনার শুরুতে ওই দিনের ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয়। জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ইসলামিক পার্টির চেয়ারম্যান আবদুল মোবিন, ন্যাপ ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, ডিএল সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, জাগপা সাধারণ সম্পাদক খোন্দকার লুৎফর রহমান বক্তব্য দেন।