আসন্ন বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের মধ্যকার দ্বিতীয় টেস্ট নির্বিঘ্ন করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। গতকাল বিকাল ৩টায় খুলনা শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে আর্চওয়ে, ডগ স্কোয়াড ও বাম্ব সার্চ মেশিনে সার্বিক পর্যবেক্ষণ করে র্যাব-৬। যশোর বিমানবন্দর থেকে স্বাগত জানিয়ে ভিনদেশী অতিথি ও জাতীয় ক্রিকেটারদের নিরাপদে হোটেল ও স্টেডিয়ামে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়। মনিটরিং টিমের প্রধান কেএমপি’র উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) আবদুল মান্নান ও (উত্তর) এসএম ফজলুর রহমান জানান, খেলোয়াড়দের নিরাপত্তার জন্যে ৭৩১ জন পুলিশ ও ২ প্লাটুন বিজিবি সদস্য বিরতিহীনভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। ডিউটি শিডিউল শেষ হলে যথাস্থলে অনুরূপ সদস্য সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবেন।
আজ দু’দলের অনুশীলন
সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচ খেলতে গতকাল রাতে খুলনায় এসে পৌঁছে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দল। বিসিবি থেকে জানা গেছে, বিকাল সাড়ে পাঁচটায় ঢাকা থেকে বিমানযোগে রওনা হয় তারা। যশোর হয়ে রাত সাড়ে ৮টায় খুলনার হোটেল সিটি ইন এ উঠে দল দুটি।
আজ থেকেই অনুশীলনে নেমে পড়বে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দল। আগামী ৩রা নভেম্বর মাঠে নামার আগে ৩ দিনই অনুশীলন করবে তারা। শুক্রবার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অনুশীলন করবে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দল। শুক্রবার দুপুর ২টা থেকে শুরু হবে মুশফিকদের অনুশীলন সেশন। শনি ও রোববার সকাল ১০টা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত বাংলাদেশ দল ও দুপুর ২টা থেকে ৫টা পর্যন্ত জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দল অনুশীলন করার কথা রয়েছে।
আউট ফিল্ডের প্রশংসায় চিফ কিউরেটর
চারটি ওয়ানডে আর একটি টি-টোয়েন্টির সবই জিতেছে টাইগাররা। এ মাঠের উইকেট আর আউট ফিল্ডের প্রশংসা করেছেন এখানে খেলে যাওয়া দেশ-বিদেশের সব ক্রিকেটার। বিসিবি’র চিফ কিউরেটর গামা ডি সিলভা আউট ফিল্ডকে দেশের সেরা আউট ফিল্ড হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন।
শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে ভেন্যু ম্যানেজার আবদুস সাত্তার কচি বলেন উইকেট, আউট ফিল্ড পরিচর্যাসহ মাঠের সব কাজ শেষ হয়েছে। আধুনিকায়ন করা হয়েছে খেলোয়াড়দের ড্রেসিং রুম ও অতিথিদের হসপিটালিটি বক্সও। ড্রেসিং রুমে বসানো হয়েছে পর্দা। হসপিটালিটি বক্সে চেয়ারও বসানো হয়েছে। পূর্ব পাশের ভেঙে যাওয়া প্রায় আড়াই হাজার নতুন চেয়ার পুনঃস্থাপন করা হয়েছে। নিয়মিত ঘাসকাটা ও রোলার দেয়া হচ্ছে। সব মিলিয়ে ১২ হাজার দর্শক চেয়ারে বসে খেলা দেখতে পারবেন। তিনি আশা করেন, সকলের সহযোগিতা পেলে এবারও খুলনা সফলভাবে টেস্ট ম্যাচ আয়োজন করতে সক্ষম হবে। লাকি ভেন্যুতে টাইগাররা জয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রাখবে।
নগরজুড়ে নতুনত্বের ছোঁয়া
খেলোয়াড়সহ কর্মকর্তা ও অন্যদের থাকার আবাসস্থল, নগরীজুড়ে বিউটিফিকেশন, যেসব সড়ক দিয়ে খেলোয়াড়রা যাতায়াত করবেন তার সংস্কারসহ নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো গ্রামীণ অবকাঠামোর আদলে গড়ে তোলা হচ্ছে। সবকিছুতেই যেন নতুনত্বের ছোঁয়া। ব্যক্তিগত উদ্যোগে নগরীর শিববাড়ি, ময়লাপোতা ও রয়্যাল চত্বরে আলোজসজ্জার ব্যবস্থা করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ও খুলনা বিভাগীয় প্রতিনিধি শেখ সোহেল। বিশ্বখ্যাত ম্যানগ্রোভ সুন্দরবনের কোল ঘেঁষে গড়ে ওঠা শিল্পনগরী খুলনার প্রবেশ পথে যেদিক চোখ যাবে সেদিকেই বাংলাদেশ আর জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দলকে স্বাগত জানাতে তৈরি হয়েছে বড় বড় তোরণ। তোরণগুলো ঠাঁই পেয়েছে দুই দলের ক্রিকেটারদের ছবি। আর শহরের প্রধান কয়েকটি স্থানে এভাবে তৈরি করা হয়েছে কৃষক, জেলে আর তার পরিবারের সদস্যদের প্রাত্যহিক জীবনের প্রতিকৃতি।