আব্দুল মতিন ॥ তালা(সাতীরা)সংবাদদাতা:
সাতক্ষীরার তালায় তেরছি আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কৃষি বিভাগ শিক্ষক নিয়োগে যোগ্য প্রার্থীকে বাদ দিয়ে অবৈধ টাকার বিনিময়ে অযোগ্যকে প্রার্থীকে চাকুরীতে নিয়োগ পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। তাছাড়া এই অনিয়মকে কেন্দ্র করে বেরিয়ে এসেছে বিদ্যালয়ের নানান অনিয়ম আর দূণিতির খবর।
সুত্রে জানা গেছে, উক্ত বিদ্যালয়ের কৃষি বিভাগ শিক্ষক নিয়োগের জন্য ২৭ আগস্ট অর্নাস মাস্টার্সের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিয়োগের সার্কুলার দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তির প্রেক্ষিতে ১১জন প্রার্থী চাকুরী জন্য আবেদন করে। আগামী ৫ নভেম্বর এই নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু পূর্ব থেকেই যোগ্য প্রার্থীদের বাদ দিয়ে ৮ লাখ টাকা বানিজ্যের মাধ্যমে কলিয়া গ্রামের এরফান আলী শেখের ছেলে মো: শহিদুল ইসলামকে নিয়োগ পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তাছাড়া ৫ লাখ টাকার বিনিময়ে চাকুরীর প্রত্যাশায় রয়েছে আড়ংপাড়া গ্রামের খলিলুর রহমান। এসব কিছুই ম্যানেজ করছে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আমির মোড়লের ছেলে মিজানুর রহমান ও প্রধান শিক্ষক আতিয়ার রহমান।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আতিয়ার রহমান অনিয়ম দূর্ণিতির কথা অস্বীকার করলেও বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সদস্য বজলুর রহমান জানান, অনিয়ম আর দূর্ণিতির মহাৎসব চলছে তেরছি আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অনেক আগ থেকেই। বিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষক নিয়োগে উত্তোলন করা হয় ৪/৫ লাখ টাকা। বলা হয় বিদ্যালয়ের উন্নয়ন খাতে এই অর্থ ব্যায় করা হবে কিন্তু অদ্যবদি কোন টাকা খরচ না করে উক্ত টাকা ভাগবাটোয়ারা করা হয়। বিদ্যালয়ে বর্তমানে কৃষি শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম চলছে। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর এই নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু আগে থেকেই ৮ লাখ টাকা বানিজ্যের মাধ্যমে প্রার্থী বাছাই সম্পন্ন করেছে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির ছেলে ও প্রধান শিক্ষক। নিয়োগের জন্য ১১ জন প্রার্থী আবেদন করেন। যার মধ্য থেকে তিন জনকে আলোচনায় আনা হয়। তালার আড়ংপাড়া গ্রামের এইচএসসি পাশ করে ডিপ্লোমা শিক্ষার্থী খলিলুর রহমান, কলিয়া গ্রামের এরফান শেখের ছেলে এসএসসি পাশ করে ডিপ্লোমা শিক্ষার্থী শহিদুল ইসলাম ও ধলবাড়িয়া গ্রামের অনার্স শেষ করে মাস্টার্স শিক্ষার্থী আব্দুল মান্নান। শুরু হয় দেন-দরবার। নিয়োগের জন্য চাহিদা মোতাবেক টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় প্রার্থী আব্দুল মান্নানের আবেদন বাতিল করে দেওয়া হয়। অন্যদিকে, আড়ংপাড়ার খলিলুর রহমানের ৫ লাখ টাকা ও কলিয়া গ্রামের শহিদুল ইসলামের সাথে ৮ লাখ টাকার চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। এদের দুইজনের মধ্য থেকেই একজনকে নিয়োগ করা হবে। আর বাকি পরীক্ষার্থীরা অংশগ্রহন করবে নিয়ম রক্ষায়। এসব অনিয়ম দূর্ণিতির ব্যাপারে সাতক্ষীরা সহকারি জজ আদলতে ২৭ অক্টোবর একটি মামলা করেছেন তিনি বলে জানান।
বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির ছেলে ঘটনার হোতা মিজানুর রহমান কোন অনিয়ম দূণিতি হচ্ছে না। যোগ্য প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া হবে।
বিদ্যালয়ের প্রাক্তন সভাপতি ও তেঁতুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মিয়াজান আলী মোড়ল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন আমার বাবার হাতে গড়া তেরছি আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় আজ আর আদর্শ নেই।
এসব ব্যাপরে ডিজি প্রতিনিধি তালা বিদে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গাজী মো: রফিক জানান, অনিয়ম দূর্ণিতির ব্যাপারে আমাকে কেউ কিছু জানায়নি বা জানালেও আমার কিছুই করার নেই।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো: জাহিদুল ইসলাম অনিয়ম দূর্ণিতির কথা স্বীকার করে বলেন, এখন আর টাকা না হয়ে নিয়োগ হয় না এটা সবাই জানে।
তেরছি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এসব ঘটনায় এলাকাবাসি উদ্বিগ্ন আর এভাবেই চলছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। এলাকাবাসী উক্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল সহ সুষ্ঠ নিরপেক্ষ ও যোগ্য প্রার্থীকে উক্ত পদে নিয়োগরে জন্য জরুরী ভিত্তিতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।