জিসান আহমেদ, চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি(১৫.১১.১৪): সরকারীভাবে মনিটরিং ব্যবস্থা না থাকা ও কৃষি বিভাগের উদাসিনতার কারণে চুয়াডাঙ্গা জেলায় প্রতি বছর বাড়ছে জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাক্তক ক্ষতিকর তামাক আবাদের বি¯ৃÍতি। টোব্যাকো কোম্পানিগুলোর চাটুকাদার কথাবার্তা ও চাষিদের তামাক চাষ করতে আনুসাঙ্গিক খরজ বহন করাসহ সার কীটনাশক এবং নগদ অর্থের প্রলোভনে দিনে দিনে চাষীরা এ ক্ষতিকর চাষের দিকে ঝুঁকে পড়ছেন।
ফলে একদিকে যেমন তামাক চাষের সাথে জড়িত কৃষকরা মরণব্যধি ক্যান্সারসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। অন্যদিকে এই ক্ষতিকর চাষে মাটির উর্বরতা শক্তি হারিয়ে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ কৃষি জমি অনাবাদি থাকছে।
কয়েক বছর আগেও চুয়াডাঙ্গার কৃষকরা তামাক চাষ থেকে অনেকটা দুরে থাকতো। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে পাল্টে গেছে সেই চিত্র। এখন এ জেলার কৃষকরা ধান, পাট ও ভুট্রার পাশাপাশি আবাদ করছে মানব দেহের জন্য মারাক্তক ক্ষতিকর তামাক চাষ।
চুয়াডাঙ্গা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, চলতি বছর চুয়াডাঙ্গা জেলায় ৭২৫ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যো আলমডাঙ্গা উপজেলায় ৪শ হেক্টর, জীবননগর উপজেলায় ১১০ হেক্টর, সদর উপজেলায় ৩৮ হেক্টর ও দামুড়হুদা উপজেলায় ১৮০ হেক্টর জমিতে এই ক্ষতিকর আবাদ হয়েছে। যা বেসরকারী হিসাবে অনেক বেশি।
কৃষকরা বলছেন, গত কয়েক বছরে ধান, পাট ও ভুট্রা আবাদ করে বাজারে ভাল দাম পাওয়ায় আর্থিকভাবে তারা ক্ষতিগ্রস্থÍ হয়েছে। এ কারণে এসব আবাদ বাদ দিয়ে তারা তামাক চাষ শুরু করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলাতে তামাক চাষের বিস্তৃতি ঘটাতে অনেকটা নীরবে কাজ করেন, ব্রিটিশ আমেরিকা টোব্যাকো, আবুল খায়ের কোম্পানি লিঃ, ঢাকা টোব্যাকো ও আকিজ টোব্যাকোসহ বেশ কয়েকটি টোব্যাকো কোম্পানী।
এসব কোম্পানীর পক্ষ থেকেই কৃষকদের দেয়া হয় বিনামূল্যে বীজ এবং ঋণ হিসেবে স্বল্পমূল্যে সার, কীটনাশক এবং নগদ টাকাসহ আনুসাঙ্গিক খরজ। প্রত্যেকটি কোম্পানি তাদের আওতাধীন তামাক চাষিদের উৎপাদিত তামাক কেনার জন্য কৃষকদের কার্ড সরবরাহ করে থাকেন। ওই কার্ড দেখিয়েই কৃষকরা পরে স্ব স্ব কোম্পানির কাছে তামাক বিক্রি করে থাকে।
গত বছর এসব টোব্যাকো কোম্পানীগুলোর পক্ষ থেকে চুক্তিভিত্তিক চাষীদের কাছ থেকে ২৫ থেকে ২৭ টাকা কেজি দরে তামাক কিনলেও এ বছর তা ৫ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করেছে ৩২ টাকা।
স্থানীয় কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, চুয়াডাঙ্গা জেলাতে যেভাবে তামাক চাষ বাড়ছে তাতে এক দিকে যেমন ক্যান্সারসহ নানা জটিল রোগীর সংখ্যা বাড়ছে তেমনি জমির উর্বরা শক্তি হারিয়ে কমছে আবাদী জমি।
এখনই তামাক চাষ বন্ধে কৃষকদের নিরুসাহিত করা না হলে আগামীতে এর পরিধি আরো বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।