ঢাকার পিলখানায় চাঞ্চল্যকর বিডিআর হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৫২ আসামির করা আপিল এবং রাষ্ট্রপক্ষে মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন বিষয়ে শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্টে পেপারবুক (মামলার নথিসহ আনুষঙ্গিক কাগজ) ছাপা শুরু হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় তিনটি মেশিনে পেপারবুক ছাপানোর কাজ শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে ৪০ হাজার পৃষ্ঠার ২৩টি পেপারবুক তৈরি করা হবে। একেকটি পেপারবুক ৪০টি খণ্ডে ছাপানোর পর বাঁধাই করা হবে।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। এ ঘটনায় ৮৫০ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। দীর্ঘ শুনানি শেষে গত বছরের ৫ নভেম্বর রায় দেন ঢাকার একটি বিশেষ জজ আদালত। রায়ে ১৫২ বিডিআর জওয়ানকে মৃত্যুদণ্ড, ১৬১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং আটক ২৭৭ জনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৫২ আসামির মধ্যে ১৪ জন পলাতক। এর মধ্যে বন্দি অবস্থায় একজন মারা গেছেন। বাকিদের আপিল এবং মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের বিষয়ে করা আবেদনের শুনানি হবে হাইকোর্টে।
বিডিআর হত্যা মামলার দ্রুত শুনানি নিশ্চিত করতে ডিসেম্বরের মধ্যেই এ পেপারবুক তৈরির কাজ সম্পন্ন করা হবে। এর পর বাঁধাই করা পেপারবুক শুনানির জন্য প্রস্তুত হলে প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন বহুল আলোচিত এ হত্যা মামলার আপিল নিষ্পত্তি বিষয়ে হাইকোর্টে এক বা একাধিক বেঞ্চ গঠন করে দেবেন। আগামী বছরের জানুয়ারিতে আসামিপক্ষে আপিল ও রাষ্ট্রপক্ষে মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের বিষয়ে করা আবেদন নিয়ে এ শুনানি শুরু হতে পারে। প্রচলিত ব্যবস্থায় পেপারবুক তৈরিসহ সুপ্রিম কোর্টের আনুষঙ্গিক কাগজ ছাপানোর কাজ বিজি প্রেসের (বাংলাদেশ গভর্নমেন্ট প্রেস) মাধ্যমে হয়ে থাকে। তবে স্বাধীনতার পর এবারই প্রথম হত্যা মামলার আসামিদের আপিলের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে সুুপ্রিম কোর্টের নিজস্ব উদ্যোগে পেপারবুক তৈরি করা হচ্ছে। ৪০ হাজার পৃষ্ঠার একটি কম্পোজ কপি চূড়ান্ত হওয়ার পর পেপারবুক ছাপা শুরু করা হয়। হাইকোর্টের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো. আজিজুল হকের তত্ত্বাবধানে ছুটির দিনসহ প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এই ছাপার কাজ চলবে। এরই মধ্যে দুটি খণ্ডের ছাপা শেষ হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম কুদ্দুস জামান বলেন, ৪ নভেম্বর থেকে পেপারবুক ছাপানোর কাজ শুরু হয়েছে। বিডিআর হত্যা মামলার পেপারবুক মুদ্রণ শেষ হলে এ মামলার আপিল ও মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের আবেদন নিষ্পত্তির জন্য প্রধান বিচারপতি বিশেষ বেঞ্চ গঠন করবেন।