বিশ্ব সামাজিক ব্যবসা সম্মেলনের পর্দা পড়ার ঠিক পরের দিন, শনিবার মেক্সিকোর মানুষের সামনে এ পর্যায়ে শেষবারের মতো মঞ্চে ওঠেন নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এক্সপো বানকোমারের জনকেন্দ্রে কাল ছিল সবার জন্য তাঁর উন্মুক্ত বক্তৃতা।
মুহাম্মদ ইউনূস বক্তৃতা শুরু করেন মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশের অভ্যুদয় এবং এর পরবর্তী সামাজিক পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে। সেই প্রেক্ষাপট থেকে তিনি ঢুকে পড়েন গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠা, প্রসার ও সাফল্যের গল্পে। খুলে ধরেন তাঁর চমকপ্রদ অভিজ্ঞতার ঝাঁপি। অর্থনীতির তত্ত্বের সঙ্গে বাস্তবের দূরত্ব, প্রচলিত ব্যাংকগুলোর সীমাবদ্ধতা, গ্রামের আত্মবিশ্বাসহীন নারীদের প্রত্যয়ী উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প তিনি একের পর এক বলে যান। স্বতঃস্ফূর্ত, সহজ ও অন্তর্দৃষ্টিময় বক্তৃতায় শ্রোতাদের তিনি টানা এক ঘণ্টা মুগ্ধ করে রাখেন।
মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, পৃথিবীতে যে অর্থনীতি চলছে, তা মানুষের দারিদ্র্য, বৈষম্য বা পরিবেশের মতো গভীর সংকট কোনোভাবেই দূর করতে পারবে না। এ অর্থনীতি মানুষের সৃষ্টিশীলতাকে রুদ্ধ করে রাখে। তিনি প্রশ্ন করেন, যে পৃথিবী মানুষের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে, তা কেন মেনে নিতে হবে? পৃথিবীকে বদলে দিতে হবে। যে যেভাবে চায়, সে রকম করে, নিজের নিজের উপায়ে।
মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘এ জীবনের লক্ষ্য কী? পৃথিবী নামের গ্রহের ওপর নিজের স্বাক্ষর রেখে যাওয়া। সামাজিক ব্যবসা সবাইকে সে সুযোগ এনে দিয়েছে। কারণ, এর মধ্য দিয়ে মানুষ নিজের আত্মমর্যাদা ও মূল্যবোধ নিয়ে উঠে দাঁড়ায়। একই সঙ্গে মানুষের কোনো একটি সংকটের সমাধান দেয়।’
বক্তৃতা শেষ হলে শ্রোতারা উঠে দাঁড়িয়ে দীর্ঘক্ষণ ধরে একটানা করতালি দিতে থাকেন। বাংলাদেশের বাইরে গ্রামীণ ব্যাংকের সবচেয়ে বড় কর্মযজ্ঞ মেক্সিকোতে চলছে বলে সেখানে মুহাম্মদ ইউনূস খুবই পরিচিত একটি নাম।
বক্তৃতার আগে মুহাম্মদ ইউনূস ও বিশ্ব সামাজিক ব্যবসা সম্মেলনের প্রধান হান্স রাইৎস এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
post by usman gony
www.swadeshnews24.com