রাশিয়ার তৈরি নতুন পারমাণবিক সাবমেরিন (ডুবোজাহাজ) সমুদ্রে ভাসানোর জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। আগামী ১৯ ডিসেম্বর যাত্রা শুরু করবে নতুন প্রজন্মের ১৬টি পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্রবাহী এ সাবমেরিনটি।রাশিয়ার পরমাণু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুনরুজ্জীবনে প্রেসিডেন্ট পুতিন যে পদক্ষেপ নিয়েছেন তারই অংশ হিসেবে এটি নির্মাণ করা হয়েছে। নতুন এই সাবমেরিনটির নাম দেয়া হয়েছে কে-৫৫১ ভ্লাদিমির মনোমাখ। ইতোমধ্যে সাবমেরিনটিতে বুলাভা আইসিবিএস ক্ষেপণাস্ত্রের একটি সফল পরীক্ষাও সম্পন্ন হয়েছে। কর্মকর্তারা জানান, ডুবোজাহাজটি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করার সময় এটি একটি পরমাণু টর্পেডো বহন করবে।
গত ১০ সেপ্টেম্বর সাবমেরিনটি থেকে আন্তমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র বুলাভার ফায়ারিং পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। শ্বেত সাগরের এক স্থান থেকে রাশিয়ার ভেতরে একটি অঞ্চলকে লক্ষ্য করে বুলাভা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রটি নিক্ষেপ করা হয়। কে-৫৫১ ভ্লাদিমির মনোমাখ দেশটির বোরেই শ্রেণীর সাব সিরিজের তৃতীয় পারমাণবিক সাবমেরিন। প্রতিটি সাবমেরিন ১২ থেকে ১৬টি পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র বহন করতে সক্ষম। ২০২০ সালের মধ্যে বোরেই শ্রেণীর ৮টি পারমাণবিক সাবমেরিন রাশিয়া তার সাবমেরিন বহরে যোগ করার পরিকল্পনা নিয়েছে।
সাবমেরিনটি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যা পারমাণবিক যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়াকে একটি বৃহত্তর সুবিধা প্রদান করবে। যদি রাশিয়ার স্থল এবং বিমান ভিত্তিক কৌশলগত পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ পুরোপুরি থেমে অথবা কমে যায় তখন এটি রাশিয়াকে সহায়তা করবে। রাশিয়া তার শত্রুদেশের উপর আঘাত হানতে সাবমেরিন ভিত্তিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রস্তুত করছে, খুব সম্ভবত ক্রমবর্ধমান মার্কিন হুমকি মোকাবেলায়।
২০১৩ সালে প্রথম দুটি বোরেই শ্রেণীর সাবমেরিন রাশিয়ার নৌবাহিনীতে যুক্ত করা হয়েছে। নতুন কে-৫৫১ ভ্লাদিমির মনোমাখ সাবমেরিনটি ২০০৬ সাল হতে শ্বেতসাগরের তীরবর্তী সেভেরুডভিনস্কের সেভমাস সাবমেরিন ইয়ার্ডে নির্মাণাধীন অবস্থায় ছিল। সেভমাস রাশিয়ার বৃহত্তম জাহাজ নির্মাণ কোম্পানী এবং এটি একমাত্র সক্ষম সাবমেরিন ইয়ার্ড যেখানে একাধিক পারমাণবিক সাবমেরিন রাখা যায়। ১০৭ জন নাবিক নিয়ে ভ্লাদিমির মনোমাখ সাবমেরিনটি সাগরতলার প্রায় ১,৫০০ ফুট বা এক মাইলের এক চতুর্থাংশ গভীরতায় চলতে সক্ষম।
পানির নিচে ২৯ নটিকল মাইল গতিতে অর্থাৎ মোটামুটিভাবে প্রতিঘণ্টায় ৩৩ মাইল ভ্রমণ করতে পারে এটি। সাবমেরিনটি হতে ৫,০০০ মাইল দূরের লক্ষ্যবস্তুতে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা সম্ভব। তবে এতে ব্যবহৃত বুলাভা আইসিবিএস ক্ষেপণাস্ত্রটি পরীক্ষায় এর আগে সমস্যা দেখা দেয়। ২০০৯ সালে বুলাভার উন্নয়নের সময় থেকেই এতে বেশ কিছু সমস্যা ছিল। গত ৬ সেপ্টেম্বর বুলাভা ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানো হলেও সেটি ব্যর্থ হয়। পরে এর নির্মাতা কোম্পানি ক্ষেপণাস্ত্রটির ত্রুটি সংশোধন করে।
Post by আশিকুর রহমান স্বদেশনিউজ২৪.কম