মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) ছাড়া আগামী বছরের নভেম্বরের পর কাজের অনুমতিপত্র (আকামা) মিলবে না-সৌদি আরব সরকারের এই সিদ্ধান্তে কর্মসংস্থান হারানোর শঙ্কা দেখা দিয়েছে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে। তারা বলছেন, এমআরপি ছাড়া যদি আকামা না পান তবে বাধ্য হয়ে লাখ লাখ প্রবাসী কর্মীকে ফিরতে হবে দেশে।
আর এত কম সময়ের মধ্যে সবাইকে এমআরপি সরবরাহ করাটাও ‘প্রায় অসম্ভব’ বলে মনে করে দেশটিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা। এবিষয়ে করণীয় ঠিক করতে মঙ্গলবার বৈঠকে বসতে যাচ্ছে তিন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা।
সরকারের নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে বৈঠকে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা থাকবেন। তিন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সচিবসহ ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারা যার যার মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিত্ব করবেন। এ ছাড়া সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও অংশ নেবেন বৈঠকে।
জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সোমবার রাতে বলেন, ‘সৌদি আরবে প্রায় ২৭ লাখ বাংলাদেশি প্রবাসী আছেন। তারা কোনো ধরনের জটিলতার মুখোমুখি হলে বিদেশে দেশের শ্রমবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এ ধরনের পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য আমরা কী করতে পারি সে বিষয়ে কাল (মঙ্গলবার) আলোচনা হবে।’ তিনি জানান, বৈঠকে সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ডাকা হয়েছে। তাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমেই করণীয় ঠিক করা হবে।
যোগাযোগ করা হলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বৈঠকের কথা নিশ্চিত করেন। তবে এর বেশি কিছু বলতে চাননি।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, সৌদিতে প্রায় ২৭ লাখ বাঙালি কর্মরত আছেন। তাদের সবাইকে যদি আগামী বছরের নভেম্বরের মধ্যে এমআরপি দিতে হয়, তবে প্রতিদিন গড়ে ১০ হাজারেরও বেশি পাসপোর্ট সরবরাহ করতে হবে। অথচ এটা অসম্ভব। কারণ, পাসপোর্টগুলো তৈরি করে নিতে হবে বাংলাদেশ থেকে। এত কম সময়ে এতগুলো পাসপোর্ট তৈরি করাও সহজ হবে না।
জনশক্তি রপ্তানিকারকরা মনে করেন, এনিয়ে সৌদি আরব সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। তাদের কাছে বাস্তবচিত্র তুলে ধরতে হবে। তা না হলে মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এবিষয়ে জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সংগঠন বায়রার সভাপতি মো. আবুল বাসার বলেন, ‘প্রবাসী শ্রমিকদের কল্যাণে সরকার বেশ আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের তুলনায় বিগত ছয় বছরে দ্বিগুণ জনশক্তি রপ্তানি হয়েছে। সৌদি সরকারের হঠাৎ কোনো সিদ্ধান্তে জনশক্তি রপ্তানিতে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হোক, এটা আমরা কেউ কামনা করি না।’
Posted by Ab Emon