1. ccadminrafi@gmail.com : Writer Admin : Writer Admin
  2. 123junayedahmed@gmail.com : জুনায়েদ আহমেদ, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর : জুনায়েদ আহমেদ, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর
  3. swadesh.tv24@gmail.com : Newsdesk ,স্বদেশ নিউজ২৪.কম : Newsdesk ,স্বদেশ নিউজ২৪.কম
  4. swadeshnews24@gmail.com : নিউজ ডেস্ক, স্বদেশ নিউজ২৪.কম, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর: : নিউজ ডেস্ক, স্বদেশ নিউজ২৪.কম, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর:
  5. hamim_ovi@gmail.com : Rj Rafi, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান : Rj Rafi, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান
  6. skhshadi@gmail.com : শেখ সাদি, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান: : শেখ সাদি, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান:
  7. srahmanbd@gmail.com : এডমিন, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান : এডমিন, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান
  8. sumaiyaislamtisha19@gmail.com : তিশা, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান : তিশা, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান
তারেক রহমানের উদ্দেশ্য কি সফল? - Swadeshnews24.com
শিরোনাম
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা সোনার দাম আরও কমল রাজধানীতে পানি, স্যালাইন ও শরবত বিতরণ বিএনপির জায়েদ খানের এফডিসিতে ফেরা হবে কিনা, জানালেন ডিপজল কক্সবাজার জেলায় কত রোহিঙ্গা ভোটার, তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট সিনেমা হলে দেওয়া হচ্ছে টিকিটের সঙ্গে ফ্রি বিরিয়ানি ঢাকায় বড় জমায়েত করতে চায় বিএনপি ১৫ বছর পর নতুন গানে জেনস সুমন যশোরে আদালতের নির্দেশ অমান্য করে জমি দখলের অভিযোগ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে মিশা-ডিপজল প্যানেলের জয়লাভ গোবিন্দগঞ্জে অটোচালক দুলা হত্যার মূল আসামি আটক চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু পলাশবাড়ীতে উপজেলা নির্বাচনে অনলাইন মনোনয়নপত্র দাখিলের বিষয়ে সম্ভাব্য প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময় ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিলেই বিএনপি বলে বিরোধীদল দমন’ এবার বুবলী-শাকিবের ‘কোয়ালিটি টাইম’ নিয়ে মুখ খুললেন অপু

তারেক রহমানের উদ্দেশ্য কি সফল?

  • Update Time : রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৪
  • ১৮৬ Time View

addd_52563আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির রাজনীতি যে কত দেউলিয়া হয়ে পড়েছে তার সাম্প্রতিকতম প্রমাণ হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে বিএনপির দ্বিতীয় প্রধান নেতা তারেক রহমানের একটি মন্তব্য নিয়ে দেশব্যাপী তুলকালাম কাণ্ড। তারেক রহমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে ‘রাজাকার’ ও ‘পাকবন্ধু’ বলে মন্তব্য করেছেন। তার এই ‘বিলেতি’ মন্তব্যে তাৎক্ষণিক তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে আওয়ামী লীগের সর্বমহলে। কিন্তু সর্বোচ্চ থেকে সর্বনিম্ন সব পর্যায়ে প্রতিক্রিয়ার ধরনটা দেখে মনে হয়, এই বুঝি সর্বনাশ হয়ে গেল শাসকলীগের! তারেক রহমানের মন্তব্যে বঙ্গবন্ধু বুঝি ‘রাজাকার’ আর ‘পাকবন্ধু’ হয়ে গেলেন! এটা সত্য যে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং শহীদ জিয়াউর রহমান শাসক আওয়ামী লীগ এবং তাদের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির প্রেরণার উৎসই শুধু নন, দল দুটির প্রাণের স্পন্দনও বটে। শাসকলীগের তরফ থেকে যখন জিয়াউর রহমান সম্পর্কে কটূক্তি করা হয়, যখন তাকে ‘রাজাকার’ ‘হঠাৎ মুক্তিযোদ্ধা’ বা আইএসআই’র এজেন্ট বলা হয়, বিএনপি ও এর সব অঙ্গ-সহযোগী দলের নেতা-কর্মীদের হৃদয়ে তখন রক্তক্ষরণ হওয়া স্বাভাবিক। বঙ্গবন্ধুকেও যদি একইভাবে একই ভাষায় আক্রমণ করা হয়, আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের মনের অবস্থাও একই রকম হওয়ার কথা।

জিয়াউর রহমানকে রাজাকার ডাকা শাসকলীগের লোকজনের মুখে নতুন নয়। মুক্তিযুদ্ধকালে তার ভূমিকা নিয়েও কটাক্ষ কম করা হয়নি। এটা লক্ষ্য করার বিষয় যে, বিএনপির পক্ষ থেকে শহীদ জিয়ার ডিফেন্সে কার্যকর কোনো প্রচার-উদ্যোগ দেখা যায়নি- কথায় কথায় স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া, এই রপ্ত বাক্যটি সভা-সমাবেশে উচ্চারণ করা ছাড়া। অথচ শোনা যায়, বেগম খালেদা জিয়ার গুলশান অফিসে এবং কোনো ঈদ-পার্বণের অনুষ্ঠানে লেখক-সাংবাদিক-বুদ্ধিজীবী নাকি কিলবিল করে। জানি না, বেগম জিয়া এদের কখনো প্রশ্ন করেছেন কিনা যে, দলের রাজনীতি, আদর্শ, দর্শন, কর্মসূচি এবং মুক্তিযুদ্ধে শহীদ জিয়ার ভূমিকা ও অবদানের পক্ষে মতাদর্শগত লড়াইয়ে কে কি করেছেন? কে কয়টা লেখা এ পর্যন্ত লিখেছেন এবং কটা সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, কর্মশালার আয়োজন করেছেন? আওয়ামী লীগ এই ব্যাপারে অগ্রণী। সাবেক মস্কোপন্থি শিক্ষক-সাংবাদিক, লেখক-বুদ্ধিজীবীরা বাকশাল আমলে সেই যে ঢুকেছে আর আওয়ামী লীগ ছাড়েননি। এরা যোগ দেওয়ায় বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষেত্রে শাসকলীগ এখন অনেক শক্তিশালী। প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া এখন তারা রীতিমতো শাসন করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়ান-ইলেভেনের পর ক্ষমতায় এসে দলের লোকদের হাতে অনেক ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া তুলে দিয়েছেন। তারা দলকে ও দলীয় সরকারকে যে সার্ভিস দিচ্ছে, দলের লোকজনও তা দিতে পারছে না। বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকাকালেও মুখ দেখে দেখে বেশ কটি টিভি চ্যানেল দিয়েছিলেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাবেক এমপি মুশফিকুর রহমানকে দেওয়া চ্যানেলটির মালিক এখন লীগদলীয় এমপি এবং অপরজন সরকারের একজন মন্ত্রী। তাদের কাছে চ্যানেলটি বেচে দেওয়া হয়েছে। আরেক বড় নেতাকে দেওয়া চ্যানেলটি বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে এক এমএলএম কোম্পানির কাছে। ঢাকার দুই এমপিকে দেওয়া চ্যানেলটি নাকি অভ্যন্তরীণ কামড়াকামড়ির জন্য চালুই করা যায়নি। সাকা চৌধুরীর নিউজ চ্যানেল অবৈধ পন্থা অনুসরণের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে চ্যানেল ওয়ান, ইসলামী টেলিভিশন ও জামায়াতের দিগন্ত টিভি রাজনৈতিক কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে মানুষ বিশ্বাস করে। দুটি চ্যানেলকে এখন বিএনপির চ্যানেল বলা হয়। সবাই জানে বাংলাভিশনের আসল মালিক সাদেক হোসেন খোকা এবং এনটিভির মালিক মোসাদ্দেক আলী ফালু। এনটিভি দেখে বোঝার কোনো কায়দা নেই এটি কাকে সার্ভ করছে। বাংলাভিশন ‘মা’রও ‘মাসি’রও। ফলে বাণিজ্যিক কারণে বিএনপি যেটুকু সার্ভিস সব পত্রিকা ও টিভি চ্যানেল থেকে পায় তা নিয়েই দলটিকে সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে।

অপরদিকে সরকারপন্থি বাদবাকি সব পত্রিকা ও চ্যানেল সরকারকে বেশি সার্ভ করতে গিয়ে বিতর্ক ও বিবাদ-বিসম্বাদ বাড়িয়ে দিচ্ছে বলেই মনে হয়। সাম্প্রতিক তিনটি বিষয়ের প্রতি নজর দিলে তা কিছুটা স্পষ্ট হতে পারে। ১. মুক্তিবাহিনীর সহঅধিনায়ক এ কে খন্দকার তার লেখা বহুল পঠিত ‘১৯৭১ : ভেতরে বাইরে’ গ্রন্থের ৩২ পৃষ্ঠায় লিখেছেন- বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের শেষ শব্দগুলো ছিল ‘জয় বাংলা, জয় পাকিস্তান’। লীগপন্থি মিডিয়া তার বিরুদ্ধে এমন লাগা লেগেছিল যে, পারে তো মারে। খন্দকারবিরোধী অভিযানে দলীয় মিডিয়াই আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিয়েছে বলে মনে হয়েছে। ২. লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী ও শাসকলীগের সাবেক নীতি-নির্ধারক লতিফ সিদ্দিকী পবিত্র হজ এবং আমাদের প্রিয় নবী সম্পর্কে কটূক্তি করে যে গর্হিত অপরাধ করেছেন এমন একটি ঘটনা ৩-৪ দিন পরই মিডিয়া থেকে অনেকটা ‘হাওয়া’ হয়ে গেছে। চার দিন আগে তার ছোটভাই বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী একটি তাৎপর্যপূর্ণ কথা বলেছেন যে, ‘লতিফ সিদ্দিকী শেখ হাসিনার কথা ছাড়া থুতুও ফেলেন না।’ শেখ হাসিনা তো দলের নীতিগত ও আদর্শিক অবস্থানের বাইরে কথা বলতে পারেন না। তবে কী আমরা ধরে নেব যে, লতিফ সিদ্দিকীর মুখ থেকে বেরুনো বক্তব্য তার নিজের নয়, দলের। মিডিয়ায় এই বক্তব্যটি চেপে যাওয়া হয়েছে। একমাত্র বাংলাদেশ প্রতিদিন ছেপেছে বক্তব্যটি। ৩. সুদূর বিলাত থেকে দেওয়া তারেক রহমানের বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে উক্তি বা কটূক্তি।

সরকার সমর্থক বা সরকারপন্থি মিডিয়া উপরোক্ত তিনটি বিষয়ের মধ্যে দুটিতে ভীষণ রি-অ্যাক্ট করেছে, যেন তাদের ওপরই ‘ড্রোন হামলা’ হয়েছে। অপরটি চেপে যাওয়া হয়েছে অবস্থান ধামাচাপা দেওয়ার জন্য। এ কে খন্দকারের বক্তব্য নিয়ে সংসদে, সংসদের বাইরে ও লীগপন্থি মিডিয়ায় হৈচৈ ফেলে দেওয়ার কারণ হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের যুগান্তকারী ভাষণের ঐতিহাসিক তাৎপর্য অনুধাবনে ব্যর্থতা। প্রথম কথা হচ্ছে, বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণের ‘র’-ভার্সন বের করে জাতিকে শোনানো এখন বোধহয় সময়ের ব্যাপার। কেননা, যারা বলছেন, বঙ্গবন্ধু জয় বাংলার পর ‘জয় পাকিস্তান’ বলেছেন, এটা প্রমাণ করা তাদের জন্য চ্যালেঞ্জ স্বরূপ। খন্দকারকে যারা চেনেন তারা জানেন যে, তিনি দুর্বল কোনো লোক নন। দুর্বল হলে এতদিনে তার খবর হয়ে যাওয়ার কথা। যারা সেই বক্তব্যের বিরোধিতা করছেন, কেন করছেন তা বুঝি না। ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা ঘোষণা করে দিলে ইয়াহিয়া-ভুট্টোসহ পশ্চিম পাকিস্তানি নেতাদের সঙ্গে ১৫ মার্চ থেকে টানা এক সপ্তাহ কী তার কোনো আলোচনা বৈঠক হওয়া সম্ভব ছিল? বঙ্গবন্ধুর কূটনৈতিক চাল এবং সুদূরপ্রসারী চিন্তার গভীরতা স্পর্শ করতে পারলে আওয়ামী লীগ ও তাদের পক্ষের মিডিয়া এ কে খন্দকারকে এভাবে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিত না। খন্দকার সাহেব তো চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছেন বলেই মনে হয়।

বিএনপির ভবিষ্যৎ কাণ্ডারি তারেক রহমানের মন্তব্য নিয়ে বিটিভি, রেডিও বাংলাদেশসহ বিভিন্ন সরকারপন্থি বেসরকারি চ্যানেল যেভাবে ‘যুদ্ধংদেহী’ ভূমিকা পালন করছে তা শাসকলীগকেও টেনে একই পথে নিয়ে গেছে। সারা দেশে তারেকের বিরুদ্ধে প্রায় শ’খানেক মামলা হয়েছে এবং কোথাও কোথাও গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি হয়েছে। তারেক রহমানের অতীত নিয়ে অনেক কথা আছে, সমালোচনা আছে, আছে বিতর্কও। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে তিনি যে মন্তব্য করেছেন তা ইতিহাসনির্ভর যেমন নয়, তেমনি শোভনও নয়। তিনি বিএনপির মতো একটি বড় দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান, পরবর্তী নেতা। দলীয় অবস্থানগত কারণে নেতা হিসেবে তার যে ‘হাইট’, সেই ‘হাইটের’ সঙ্গে উক্তিটি বেমানান। এমন অবস্থানে থেকে কোনো কোনো সময় সত্য কথা বলতেও নেতাদের সতর্ক থাকতে হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের দুটি পর্ব আছে- একটি আন্দোলন পর্ব, অপরটি যুদ্ধপর্ব। স্বাধীনতা আন্দোলন পর্বে হক-ভাসানী-সোহরাওয়ার্দী-বঙ্গবন্ধুসহ এ দেশের বাম প্রগতিশীলদের ভূমিকা গৌরবদীপ্ত। ছয় দফা ঘোষণার পর সবাইকে ছাপিয়ে নায়কের মর্যাদায় অভিষিক্ত হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সত্তরের নির্বাচন তাকে জাতির অবিসংবাদিত নেতার আসনে প্রতিষ্ঠিত করে। এই দীর্ঘ প্রক্রিয়া-পর্বে জিয়াউর রহমান নেই, অনুপস্থিত। যুদ্ধপর্বে বঙ্গবন্ধু সশরীরে অনুপস্থিত থাকলেও উপস্থিত ছিলেন স্বাধীনতাকামী প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ের মণিকোঠায়। হ্যাঁ, যুদ্ধপর্বে জিয়া ছিলেন সদম্ভে উপস্থিত। ‘আমি মেজর জিয়া বলছি…’ এখন ইতিহাসের অন্তর্গত বিষয়। তার দুটি ঘোষণার প্রথমটি বাদ দিয়ে দ্বিতীয়টির কথাও যদি ধরা হয় তাতেও তো কণ্ঠটি জিয়ারই, অন্য কারও নয়। এ জন্য হলেও তো বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার ইতিহাসের অংশ তিনি। তাকে সব কিছু থেকে বাদ দিয়ে ইতিহাস রচনার আওয়ামী প্রবণতা থেকেই নতুন পরিস্থিতির উদ্ভব বলে মনে করার যথেষ্ট কারণ আছে।

তারেক রহমানের মন্তব্যের পেছনে আমি দুটি কারণ খুঁজে পাই। (এক) জিয়াউর রহমান তার পিতা এবং তাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা। মুক্তিযুদ্ধে তার গৌরবদীপ্ত ভূমিকাকে অস্বীকার, অগ্রাহ্য করে তার সম্পর্কে শাসক লীগ ও লীগপন্থিদের নানা কটূক্তি তাকে কষ্ট দেয়। তাই বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে তিনি সেই কষ্টের জবাব দিতে চেয়েছেন- তার বক্তব্যের পেছনে কোনো যুক্তি ও ভিত্তি আছে কী না তা তিনি বোধহয় বিবেচনায় নেননি। (দুই) সরকারবিরোধী আন্দোলনে বিএনপি এবং তার নেতৃত্বাধীন জোট কোনো প্রকার ‘মোমেনটাম’ তৈরি করতে পারছে না। তাই এমন একটি ইস্যুকে তিনি উসকে দিতে চেয়েছেন, যাতে মাথা গরম শাসক লীগ ও তাদের লোকজন ক্ষোভে-বিক্ষোভে ফেটে পড়বে এবং সংঘাত-সংঘর্ষের রাজনীতির পথে পা বাড়াবে। এতে নুইয়ে পড়া নিস্তেজ বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী দলের নেতা-কর্মীরা অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব কোন্দল ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিপক্ষকে মোকাবিলায় সক্রিয় হবেন।

আওয়ামী লীগারদের মাথা গরম করার জায়গাটা তারেক রহমান সঠিকভাবে বেছে নিতে পেরেছেন বলে মনে হচ্ছে। তিনি বোধহয় ঠিক জায়গাতেই ঢিল ছুড়েছেন। আওয়ামী লীগ বিষয়টি এড়িয়ে গেলে ভালো করত। কিন্তু তারা একে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে। ছাত্রলীগ তারেকের বক্তব্যের কারণে বেগম খালেদা জিয়ার জনসভা বানচালের কর্মসূচি নিয়েছে। এ লেখা যখন লিখছি তখন গাজীপুরে বেগম খালেদা জিয়ার সভাস্থল ছাত্রলীগ ও যুবলীগের দখলে। সভাস্থলে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এটা কেমন কথা? কোন ধরনের গণতন্ত্র? এ-তো রীতিমতো অপরের সাংবিধানিক অধিকার হরণ! এর নাম রাজনীতি? কিন্তু এতেই ঘটনার শেষ বলে মনে হচ্ছে না। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘাত ছড়াবে সারা দেশে। রাজনৈতিক পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটবে। এর প্রতিবাদে বিএনপি গাজীপুরে হরতাল ও সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি দিয়েছে। এ লেখা তৈরির সময় তাদের কর্মসূচি চলছে। যে বিএনপিকে নিয়ে শাসকলীগ অনেক তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে বলেছে যে, এদের কিছু করার ক্ষমতা নেই, সেই বিএনপিকে আওয়ামী লীগই যাতে খুঁচিয়ে জাগিয়ে দেয় সেই ব্যবস্থাটিই তারেক রহমান করেছেন বলে মনে হচ্ছে। বলা চলে তিনি সফলও হয়েছেন। তিনি যা করেছেন বুঝেশুনেই করেছেন। তিনিও নিশ্চয়ই জানেন, তার কথায় বঙ্গবন্ধু রাজাকার হয়ে যাবেন না, পাকবন্ধুও হয়ে যাবেন না। কিন্তু এ জায়গায় আঘাত করলে শাসকলীগ মাথা গরম করে ভুল করবে তা বোধহয় নিশ্চিত ছিলেন। শুধু ছাত্রলীগ-যুবলীগ নয়, মন্ত্রী-মিনিস্টার এবং সিনিয়র লীগ নেতারাও যেভাবে যুদ্ধ ঘোষণা করছেন তাতে মনে হয় আগামী ৫ জানুয়ারিকে কেন্দ্র করে দেশকে আবার হিংসাশ্রয়ী রাজনীতির পথেই ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। তারেক রহমান ইউরোপ-আমেরিকার কোনো দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের একটা সুযোগ সৃষ্টির চেষ্টা করছেন বলে লীগ নেতা-মন্ত্রীরা প্রায়শ যা বলে থাকেন তা সত্য হলে সেই ক্ষেত্রেও তিনি সফল হয়েছেন। এত মামলা, এত গ্রেফতারি পরোয়ানা রাজনৈতিক আশ্রয় পেতে তাকে সাহায্যই করবে যদি তিনি তা চান। শুরুর কথাটাই আবার বলতে হয়। দুই দলের কেউ সঠিক রাজনীতি ও আদর্শভিত্তিক অবস্থানে অটল নেই। রাজনীতি এখন অনেকটাই দুর্বৃত্তায়িত বলে অভিযোগ শোনা যায়। রাজনীতির নামে লুণ্ঠন সংস্কৃতির চর্চা করছে বড় সব রাজনৈতিক দল। ক্ষমতায় থাকতে পারলে বা যেতে পারলে এ কাজটা ভালো জমে। রাজনীতি হয়ে গেছে ক্ষমতাকেন্দ্রিক। তাই একপক্ষের বিরুদ্ধে আরেক পক্ষের রাজনৈতিক, আদর্শিক বা উন্নত কর্মসূচিগত কোনো লড়াই নেই; আছে পারস্পরিক কুৎসা, গালমন্দ ও খিস্তিখেউর। এরই পরিণতি বঙ্গবন্ধু ও শহীদ জিয়ার প্রতি নিষ্ঠুর বাক্হামলা-প্রতিহামলা। আর এর মাধ্যমে স্বার্থসিদ্ধির চেষ্টা বা অপচেষ্টা। সরকারের উচিত হবে উসকানিতে উত্তেজিত না হয়ে শান্তভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া। গণতন্ত্রের সব কটা দরজা-জানালা বন্ধ করে দিয়ে কিন্তু তা সম্ভব নয়।

ভিন্ন একটি প্রসঙ্গ দিয়ে লেখাটা শেষ করব। আগামীকাল ২৯ ডিসেম্বর। এ দিনটি ঊনসত্তরের ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান সূচনায় একটি মাইলফলক ছিল। ১৯৬৯ সালের ৬ ডিসেম্বর মওলানা ভাসানী বায়তুল মোকাররম প্রাঙ্গণে এক জনসভা শেষে পরদিন ঢাকা শহরে হরতাল ডেকেছিলেন। পুলিশের গুলিতে গুলিস্তানে নিহত হন দুজন। গণআন্দোলন গ্রামে-গঞ্জে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে ২৯ ডিসেম্বর সারা দেশে গ্রাম-গঞ্জের হাটে হাটে হরতাল আহ্বান করেন তিনি। সেদিন ছিল মনোহরদী থানার হাতিরদিয়া বাজারের হাটবার। বিএনপির সাবেক মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূঁইয়ার দিকনির্দেশনায় কৃষক সমিতি ও ‘পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের’ (মেনন গ্রুপ) নেতা-কর্মীরা সেই হাটে হরতাল সফল করার জন্য তৎপরতা চালান। তিন দিন স্থানীয় স্কুল-মাদ্রাসায় প্রচার চালান। হরতালে নেতৃত্ব দেন আসাদুজ্জামান, তোফাজ্জল হোসেন, তোফাজ্জল ভূঁইয়া, মান্নান খান, কালা মিয়া, নুরুল ইসলাম, শামসুজ্জামান মিলন, মানিক, আওলাদ খান প্রমুখ। সফল সেই হরতাল বানচাল করার জন্য পুলিশ নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করলে কৃষক নেতা সিদ্দিক মাস্টার, চানমিয়া ও চেরাগ আলী নিহত হন। আবদুল হাই গুলিবিদ্ধ হন। ছাত্রনেতা আসাদুজ্জামানও আহত হন। গ্রেফতার হন আসাদুজ্জামান, তোফাজ্জল হোসেন, আওলাদ খান, শাহজাহান ভূঁইয়া। হাতিরদিয়ার হাট হরতালের অন্যতম সংগঠক ও নেতা আসাদুজ্জামানই ২০ জানুয়ারি ঢাকার ছাত্র মিছিলে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন। তার হত্যাকাণ্ডের পরই সারা দেশে গণআন্দোলনের আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ২৪ জানুয়ারি মতিউরসহ অন্যদের রক্তের ফিন্কি সৃষ্টি করে ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান। সেই গণঅভ্যুত্থানই নিশ্চিত করে আইয়ুবের পতন এবং অবধারিত করে দেয় পাকিস্তানের ভাঙন ও বাংলাদেশের অভ্যুদয়। গত রবিবারের লেখায় মুক্তিযুদ্ধকালে শিবপুরের সাহসী যোদ্ধাদের তালিকায় আবদুল আলী মৃধার নাম ভুলবশত বাদ পড়ায় আমি দুঃখিত।

post by Usman gony

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2020 SwadeshNews24
Site Customized By NewsTech.Com