আরিফ উদ্দিন, গাইবান্ধা থেকেঃ নিকটাতীতে খাদ্য ঘাটতির দেশ ছিল বাংলাদেশ। কৃষিখাতে আধুনিক প্রযুক্তি ও উৎকর্ষতার ছোঁয়ায় খাদ্য উৎপাদনে পুরাতন কলাকৌশলের আমল পরিবর্তন ঘটে দেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পুর্ণ। নিজ দেশ তথা অঞ্চলের চাহিদা মিটিয়ে এখন বিদেশে রপ্তানী করা হ”েছ চাল। পলাশবাড়ী থেকে ৫’শ মেঃ টন চাল শ্রীলঙ্কায় রফতানি করা হবে। ইতোমধ্যেই ২’শ ১০ মেঃ টন চাল রফতানি সম্পন্ন করা হয়েছে। দেশের অন্যতম মঙ্গাকবলিত-দারিদ্রপীড়িত ও অভাব-অনটনের জেলা হিসেবে পরিচিত গাইবান্ধা অঞ্চল। কিš‘ বর্তমান প্রোপটে এ জেলার চিত্র ভিন্ন। পলাশবাড়ীসহ জেলার সব সরকারি খাদ্য গুদামগুলো বর্তমানে খাদ্য শস্যের মজুদে টই-টম্বুর। পলাশবাড়ী ¯’ানীয় খাদ্য গুদামে চলতি আমন ক্রয় মৌসুমে ৮’শ ৩৩ মেঃ টন চাল সংগ্রহের ল্যমাত্রা নির্ধারণ করে গত ৭ ডিসেম্বর চাল ক্রয় উদ্বোধন করা হয়। গতকাল রোববার পর্যন্ত ৪’শ মেঃ টন চাল সংগ্রহ করা হয়েছে। খাদ্য গুদামের সাথেই উপজেলার ৭৬ জন চাউল কল মালিকের ইতোপূর্বেই চুক্তিপত্র সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ২৮ ফেব্র“য়ারী পর্যন্ত চাল সংগ্রহ অভিযান অব্যাহত থাকবে। বিগত বছরগুলোতেও মানসম্পন্ন চাল ক্রয় করা হয়। চলতি মৌসুমে খাদ্য বিভাগ আগের চেয়ে আরো তৎপর। কারণ ক্রয়কৃত চাল শ্রীলঙ্কায় যা”েছ। এ জন্য উপজেলা ছাড়াও খোদ জেলা খাদ্য বিভাগ সরাসরি উন্নত ও আধুনিক প্রযুক্তির প্যারামিটার দিয়ে চালের গুণগতমান নিখুঁতভাবে যাচাই-বাছাই, মজুদ, সরবরাহ সার্বনিক পর্যবেণ অব্যাহত রেখেছেন। ভারপ্রাপ্ত খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা হালিমুর রহমান ও খাদ্য পরিদর্শক আঃ লতিফ জানান, শ্রীলঙ্কায় চাল সরবরাহের সাথে দেশের মান-সম্মান জড়িত। যাতে বদনাম না হয় সেদিকে কড়া দৃষ্টি রেখেই বিদেশী মানের চাল শ্রীলঙ্কায় সরবরাহ অব্যাহত রয়েছে। পলাশবাড়ী ¯’ানীয় খাদ্য গুদামে পৃথক চারটি (এফএস) খাদ্য গুদামে মোট সাধারণ ধারণ মতা ২ হাজার ৫’শ মেঃ টন। সর্বো”চ ধারণ মতা ৩ হাজার মেঃ টন। গতকাল রোববার পর্যন্ত ৮৩ মেঃ টন গমসহ ২ হাজার ২’শ ৫০ মেঃ টন খাদ্য গুদামে মজুদ ছিল। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রফিকুল ইসলাম জানান, বাংলাদেশ থেকে পর্যায়ক্রমে দুই দফায় ৫০ হাজার মেঃ টন চাল শ্রীলঙ্কায় রফতানি করা হবে। প্রাথমিক ভাবে প্রথম দফায় ২৫ হাজার মেঃ টন চাল রফতানি হবে মর্মে দু’দেশের মধ্যে চুক্তিপত্র সম্পন্ন করা হয়। আমন ও বোরো দুই ধরনের চাল রফতানি হবে। প্রতি কেজি ৩২ টাকা দরে ক্রয় করে প্রতি টন ৪৫০ ডলারের বিনিময়ে শ্রীলঙ্কায় চাল রফতানি করা হ”েছ। খাদ্য বিভাগের সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার মেসার্স মরিয়ম এন্ড ব্রাদার্স, মেসার্স শেখ ট্রেডার্স, মেসার্স লতিফ এন্ড কোং ও মেসার্স আব্দুল হক মিয়ার মাধ্যমে প্রথম দফায় চাল রফতানি করা হয়। চালের বস্তায় শ্রীলঙ্কার সীল এবং মেড-ইন-বাংলাদেশ সীল দিয়ে গত ২৭ নভেম্বর থেকে গতকাল ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫ দিনে ৫’শ মেঃ টনের মধ্যে ২’শ ১০ মেঃ টন চাল শ্রীলঙ্কার উদ্দেশ্যে চট্টগ্রামের হালিশহর সিএসডি খাদ্য গুদামে প্রেরণ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, গাইবান্ধার পলাশবাড়ী ছাড়াও জেলা সদর, গোবিন্দগঞ্জ ও মহিমাগঞ্জ খাদ্য গুদাম হতে শ্রীলঙ্কায় চাল রফতানি করা হবে বলে খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়।