নতুন বছর আসতেই আরও এক দফা বাড়ছে বাড়িভাড়া। নগরবাসীর অভিযোগ, বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ ও তদারকিতে সরকারের উদাসীনতার কারণেই এ সমস্যার সমাধান সম্ভব হচ্ছে না। অন্যদিকে, সিটি কর্পোরেশন বলছে, বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন থাকলেও তদারকির জন্য কোন নির্দিষ্ট সংস্থা না থাকায় আইনের তোয়াক্কা করছে না কেউ।
বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলতে গেলে বাড়ির মালিক ও ভাড়াটিয়ারা জড়িয়ে পড়েন বিতর্কে। চলে পাল্টাপাল্টি যুক্তি। বছরের শেষ দিনগুলো যেন আরও দু:সহ হয়ে ওঠে নগরবাসীর কাছে। কারণ, নতুন বছর এলেই বাড়ে বাড়িভাড়া, শিশুর নতুন ক্লাসে ভর্তিসহ নানা খরচ। তবে বাড়ি মালিকরা বলছেন, বাড়ি নির্মাণ খরচের সাথে সমন্বয় রেখেই তারা ভাড়া বাড়িয়ে থাকেন।
বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণে সর্বশেষ ২০০৭ সালে ঢাকা শহরকে ১০টি রাজস্ব অঞ্চলে ভাগ করে ভাড়ার হার নির্ধারণ করে দেয় সিটি কর্পোরেশন। অভিজাত এলাকাগুলোতে পাকাবাড়ি প্রতি বর্গফুট ১২-১৩ টাকা আর মিরপুর যাত্রাবাড়ীর দিকে পাকা বাড়ি প্রতি বর্গফুট ৬ টাকা হিসাবে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু সে হারের তোয়াক্কা না করে নির্ধারিত অঙ্কের ৩ গুণেরও বেশি ভাড়া আদায় করছেন রাজধানীর বাড়ি মালিকরা।
বাড়িভাড়া ২০১১ ২০১২ ২০১৩
পাকাবাড়ি (২ রুম) ১২,৮০০ ১৩,৪৪০ ১৫,৩৯৫
টিনশেড (২ রুম) ৭,৮০০ ৮,৪২৮ ৯,২৭০
মেসরুম (২ রুম) ১৩,৫০০ ১৪,৩৫০ ১৫,৭৮৫
বস্তিবাড়ি (২ রুম) ৪,৬০০ ৫,৫০০ ৬,০০০
সূত্র: কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)
ভোক্তা স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সংগঠন ক্যাব বলছে, ২০১১-র তুলনায় ২০১২ সালে প্রায় ১০ শতাংশ বাড়িভাড়া বেড়েছে। ২০১৩ সালে বাড়ে প্রায় ১১ শতাংশে। নতুন বছরে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ার অজুহাতে বাড়িভাড়া আরও বাড়ানোর আশঙ্কা ক্যাবের।
ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবির বলেন, ‘গ্যাস, বিদ্যুৎ ও বাড়িভাড়া বৃদ্ধি করলে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়বে এবং বহন করার ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে বলে আমরা মনে করি’।
সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তারা বলছেন, বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ সিটি কর্পোরেশনের এক্তিয়ারভুক্ত নয়। এজন্য পৃথক প্রতিষ্ঠান প্রয়োজন।
এই বিষয়ে ডিসিসি দক্ষিণের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনছার আলী খান বলেন, ‘এটি এখন পর্যন্ত সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্ব না, তবে দায়িত্ব দেয়া হলে কাজ করা হবে’।
লাগামহীন বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণে সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানান ভাড়াটিয়ারা।