সক্ষমতার চেয়ে কম বগি বা কোচ নিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। অধিকাংশ বগি’র বয়স বিশ থেকে পঞ্চাশ বছরের পুরনো হওয়ায় বছরের পর বছর এর মেরামত ব্যয় বেড়েই চলেছে। রেল বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যাত্রী চাপ সামাল দিতে বিদ্যমান ইঞ্জিনগুলোতে বগি’র সংখ্যা বাড়ানো প্রয়োজন। অন্যদিকে, আগামী ২ বছরে পর্যায়ক্রমে ৮০০ কোচ সংযোজনের আশ্বাস দিয়েছেন রেলমন্ত্রী।
বাংলাদেশ রেলওয়েতে গত বিশ বছরে বুলেট ট্রেন, পাতাল ট্রেন, ইলেকট্রিক ও মেট্রোরেলের স্বপ্ন দেখানো ছাড়া দৃশ্যমান পরিবর্তন এসেছে ওই ডেমু ট্রেন পর্যন্তই। ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে পাওয়া ট্রেনগুলোই চলছে জোড়াতালি দিয়ে। গাদাগাদি করে একে অন্যের ওপর বাদুর-ঝোলার দৃশ্যই বলে দেয় রেলের জনপ্রিয়তা। উন্নত সেবার আশ্বাসে কয়েক দফা বাড়ানো হয়েছে ভাড়া। কিন্তু যাত্রীর কপালে জুটেছে স্যাঁতস্যাঁতে অপরিচ্ছন্ন বগি, বিকল ইমার্জেন্সি চেইন, পানিবিহীন অপরিচ্ছন্ন টয়লেট ও ছারপোকার উপদ্রব।
যাত্রীরা জানালেন, সবসময়ই ট্রেনগুলোকে এমন অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় দেখা যায়। আসন বিন্যাস ঠিক নেই আর রাত হলেই বাড়ে ছারপোকার উপদ্রব।
মন্ত্রণালয়ের ওয়েব সাইট বলছে, রেলে বর্তমানে বগি আছে ৯২০০ টি। এর মাঝে ২১ থেকে ৪৬ বছর বয়সী বগি’র সংখ্যা ৮৮৭৬ টি। এগুলোর রক্ষণাবেক্ষণে বাৎসরিক ব্যয় মোট বাজেটের ৩৩.৩৬ শতাংশ।
দ্রুত ও নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করতে সড়ক পথের পাশাপাশি বাংলাদেশে রেল-নেটওয়ার্ক বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন রেল বিশেষজ্ঞরা।
বাংলাদেশ রেলওয়ের সাবেক মহা-পরিচালক এ কে এম রেজাউল করিম বলেন, ‘পুরনো বগি দিয়ে চলছে বলেই রেলওয়ের এমন দুরবস্থা, এ সংকট থেকে উত্তরণে নতুন বগি সংযোজনের কোনো বিকল্প নেই।’
অন্যদিকে রেলমন্ত্রী বলছেন, এডিবি, জাইকা ও ভারত সরকারের সহায়তায় নতুন বগি সংযোজনের কাজ শুরু করেছে মন্ত্রণালয়।
রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক বলেন, ‘ভারত সরকারের অর্থায়নে ১২০টি বগি সংযোজিত হচ্ছে, মালয়েশিয়ার সাথে আমাদের ৪০০ কোচ আনার ব্যাপারে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। এগুলো আনার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। আর অন্যান্য সমস্যার সমাধানে বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।’
এছাড়াও প্রক্রিয়াধীন ৪১ টি প্রকল্পের কাজ শেষ হলে দ্রুতই এর সুফল ভোগ করবেন দেশের মানুষ এমনটাই প্রত্যাশা রেল মন্ত্রীর।