রোবটটির নাম সেপিওস। বিশেষত্ব হলো, এটির শরীরে লম্বভাবে যুক্ত রয়েছে চারটি পাখনা। আর এগুলোর সাহায্যে সাগরতলে কোনো জীবন্ত মাছের মতোই সাঁতার কাটতে পারে সেপিওস।
সাঁতারে পটু সামুদ্রিক প্রাণী কাটলফিশের আদলে রোবটটি তৈরি করেছেন সুইজারল্যান্ডের ইটিএইচ জুরিখ অটোনোমাস সিস্টেমস ল্যাবের একদল প্রযুক্তিবিদ। এটি গত বছরের মে মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে সাঁতার কাটে। আর সে জন্য এটি শুঁড়ওয়ালা শামুকের মতো ঢেউ খেলানো জোড়া পাখনা ব্যবহার করে।
কাটলফিশ খুব সতর্কভাবে সমুদ্রে চলাফেরা করতে পারে। কিন্তু সেপিওসের শারীরিক গঠন তার চেয়েও উন্নত। ৭০ সেন্টিমিটার লম্বা শরীরে যুক্ত চারটি পাখনা স্বাধীনভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে রোবটটি। আর প্রয়োজন অনুযায়ী যেকোনো দিকে ঘুরে গতি পরিবর্তনও করতে পারে। এটির গঠনে কাটলফিশ আর নাইফফিশের সমন্বিত রূপটাই যেন চোখে পড়ে। অথচ ওই দুটি মাছের গঠন পরস্পরের বিপরীত।
সেপিওসের গতিশীল পাখনায় নির্দিষ্ট গতি ও পরিধির চেয়ে এর নিয়ন্ত্রিত কার্যপদ্ধতিই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি পাখনার বিস্তার ৯৫ সেন্টিমিটার। এগুলো ২৭০ ডিগ্রি কোণ পর্যন্ত নড়াচড়া করতে পারে। একক প্রচেষ্টায় সেপিওস সর্বোচ্চ ১০ মিটার গভীরতায় ঘণ্টায় ১ দশমিক ৮ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারে। এটির শরীরে সংযুক্ত ব্যাটারি দেড় ঘণ্টা সক্রিয় থাকে। মহাসাগরে অভিযানে ব্যবহারের জন্য রোবটটি বিশেষ উপযোগী বলে দাবি করছেন গবেষকেরা।
ঘন সামুদ্রিক ঘাসের মধ্য দিয়ে চলাচল করতে সেপিওসের মোটেও বেগ পেতে হয় না। উত্তাল ঢেউয়েও রোবটটি অবাধে চলতে পারে, যা পানির নিচ দিয়ে চলাচলকারী অন্যান্য যানের পক্ষে প্রায় অসম্ভব ব্যাপার। সেপিওসের অভ্যন্তরীণ যান্ত্রিক গোলযোগের হার সর্বনিম্ন বলে দাবি করছেন ইটিএইচের গবেষকেরা। আর তাই সমুদ্র পর্যবেক্ষণ বা অনুসন্ধানের কাজে ব্যবহারের জন্য এই রোবট একটি আদর্শ উপকরণ হতে পারে। ভবিষ্যতে সেপিওসে বিশেষ কিছু সংবেদী বা সেন্সর যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। এতে রোবটটির কার্যকারিতা আরও বাড়বে।
Posted by Ab Emon