এ মাসেই ৩৫ শেষ করে ৩৬ শুরু করলেন বিপাশা বসু। লম্বা এই জীবনসফরে দেখেছেন অনেক চড়াই-উতড়াই। নানা সময় নানা রঙ নিয়ে ফাগুন লেগেছিল তাঁর মনে। আবার সেই ফাগুনের মৌসুম কেটে রুক্ষতা আর রূঢ়তার মুখোমুখিও হতে হয়েছে তাঁকে। কিন্তু মৌসুম যা-ই হোক, বিপাশা নিজের উত্তাপ দিয়ে বলিউডের তাপমান সব সময়ই রেখেছেন নিজের নিয়ন্ত্রণে। চলচ্চিত্র সফল হোক কিংবা ব্যর্থ, নতুন প্রেম কিংবা সম্পর্কের ভাঙন—বাঙালি এ ললনা সব সময় একাই নিজেকে একহাতে সামলে এসেছেন। খান, কুমার কিংবা কাপুরদের গ্ল্যামারকন্যা হয়ে কখনো পর্দায় নিজেকে তুলে ধরেননি। বিপাশার ভাষ্য একটাই, হোক ছবি ফ্লপ কিন্তু এর পরও এমন কোনো চরিত্রে কাজ করবেন না যেখানে তিনি হয়ে থাকবেন শুধুই একটা রংমাখা পুতুল!
কাজের বেলায় এ অভিনেত্রী আপসহীন। নিজের চরিত্রের বেলায় দারুণ কঠোর। এর উদাহরণ তো গেল বছরই পেয়েছে সবাই। হামসাকালস ছবিতে সংক্ষিপ্ত ও কম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হওয়ায় বিপাশা সে ছবিকে বয়কট করেছিলেন। ছবির শুটিং শেষ হওয়ার পর এর প্রচারসংক্রান্ত কোনো কাজেই অংশ নেননি। তাঁর কথা ছিল একটাই, পরিচালক তাঁর সততার জায়গায় অনড় ছিলেন না। তাই পেশাদার বিপাশা সুসম্পর্ক বজায় রাখার খাতিরে নিজের নীতির সঙ্গে কোনো রকম সমঝোতা করেননি। তবে এত কঠোর হয়ে যে খুব একটা সফল হচ্ছেন এই বলিউড সুন্দরী, এমনটাও নয়। আত্মা, ক্রিয়েচার-এর মতো তাঁর সাম্প্রতিক ছবি ফ্লপ। কিন্তু তাতে কী? ছবি ফ্লপ হলেও, এ মেয়ে খবরের শিরোনামে কী করে থাকতে হয়, তা খুব ভালো করেই জানেন। বিপাশা তাঁর নিজের ব্যক্তিত্বকে এমনভাবে উপস্থাপন করেছেন যে তাঁকে নিয়ে ভালো বলা যাবে, মন্দ বলা যাবে, কিন্তু তাঁকে এড়িয়ে যাওয়া যাবে না। কোনো না কোনোভাবে তিনি থাকবেনই আড্ডা কিংবা আলোচনার মধ্যমণি হয়ে।
বিপাশাকে নিয়ে হালের যে আলোচনা বলিউডে চড়ে বেড়াচ্ছে, তা হলো তাঁর একাকিত্ব। অ্যালোন ছবিতে অভিনয় করেছেন বলেই হয়তো ব্যক্তিজীবনেও এখন সেই আমেজই রাখতে চাইছেন বিপাশা। বলেছেন, ‘সেই ১৬ বছর বয়স থেকে প্রেম করছি। তখন থেকে এ পর্যন্ত প্রেমিক ছাড়া কোনো জন্মদিন পালন করিনি। কিন্তু এবারই হয়তো ব্যতিক্রম ঘটল। এবার প্রেমিক ছাড়া পালন করলাম জন্মদিন। অনেক দিন পর পুরোনো সেই একাকিত্বের স্বাদ পেলাম। নিজেকে স্বাধীন আর নিশ্চিন্ত মনে হয়েছে এবারের জন্মদিনে। শুধুই বন্ধুর আর পরিবারের সঙ্গে কাটিয়েছি ৭ জানুয়ারি দিনটি।’ ফুল, উপহার আর বই পড়ে উদ্যাপন করা হয়েছে বয়স বাড়ার আনন্দ। কী বই? শীর্ষেন্দু আর লীলা মজুমদারের ভূতের গল্প দারুণ প্রিয় তাঁর। তাই তো বলি, এ মেয়ে ভূতের প্রতি এতটা আসক্ত কেন!