তালেবানি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দুর্ধর্ষ জঙ্গিরা একজোট হয়ে দেশে শুরু করেছে নতুন জঙ্গি সংগঠন গড়ার কার্যক্রম। আল-কায়েদা, আইএস, আল শাবাব, আল নুসরাসহ বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের আদলে দেশে আরেকটা নতুন জঙ্গি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নেমেছেন তারা। তাদের মধ্যে রয়েছেন আফগানিস্তানে তালেবানি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মীর আনিস, মাওলানা হাবিবুল্লাহ কাসেমী, আসাদ, হাবিব, সোহাগসহ কমপক্ষে ৩০ দুর্ধর্ষ জঙ্গি। নতুন জঙ্গি সংগঠনের তৎপরতার খবর পেয়ে দুর্ধর্ষ এসব জঙ্গিকে গ্রেফতারে মাঠে নেমেছে পুলিশ।
র্যাব-৭-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘হাটহাজারী ও বাঁশখালী থেকে আল-কায়েদা, আইএসসহ বিদেশি বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের প্রশিক্ষণ এবং নেতাদের সাক্ষাৎকারের ভিডিওচিত্র ও গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার করা হয়েছে। ওই ভিডিওচিত্র এবং বিভিন্ন তথ্য পর্যালোচনা করে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি নতুন এই জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে বিদেশি কয়েকটি জঙ্গি সংগঠনের যোগাযোগ রয়েছে। এ ছাড়া আফগানফেরত জঙ্গিদের সঙ্গে নতুন এই জঙ্গি সংগঠনের যোগাযোগ থাকার বিষয়টিও গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে।’ র্যাব-৭-এর সহকারী পরিচালক সোহেল মাহমুদ বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি আফগানফেরত দুর্ধর্ষ জঙ্গিরা নতুন এই জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছেন। তাই আফগান জঙ্গিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।’ মহানগর ও জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নতুন করে জঙ্গি সংগঠনের তৎপরতার বিষয়ে সতর্ক করে ১১ আগস্ট পুলিশ সদর দফতর থেকে চট্টগ্রাম নগর ও জেলা পুলিশের কাছে একটি সতর্ক বার্তা পাঠানো হয়। ওই সতর্ক বার্তায় বলা হয়- বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মুসলমানদের ওপর হামলা ও হত্যাকে পুঁজি করে জঙ্গিগোষ্ঠীগুলো একজোট হতে পারে। এর কিছু দিন আগে দেশের দুটি গোয়েন্দা সংস্থা চট্টগ্রামের জঙ্গি তৎপরতার প্রতিবেদন ঊধর্্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠায়। প্রতিবেদনে বলা হয়- আনসারুল্লাহ বাংলা টিম নামে একটি জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশ (হুজি), হিযবুত তাহ্রীর, জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর জঙ্গিদের সংগঠিত করতে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তারা তালেবানের আদলে জঙ্গি তৈরি করতে বিভিন্ন এলাকায় তরুণ যুবকদের সামরিক ও প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করছে।
৩০ জঙ্গিকে হন্যে হয়ে খুঁজছে পুলিশ : নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হুজি ও জেএমবির কমপক্ষে ৩০ দুর্ধর্ষ জঙ্গিকে হন্যে হয়ে খুঁজছে পুলিশ। দীর্ঘদিন ধরে ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকলেও চট্টগ্রামে কয়েক দিনের ব্যবধানে নতুন জঙ্গি সংগঠনের ১৭ জনকে গ্রেফতারের পর আফগানফেরত দুর্ধর্ষ জঙ্গিদের গ্রেফতারে তৎপর হয়ে ওঠে পুলিশ। জেলা বিশেষ শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাঈমুল হাছান বলেন, ‘চট্টগ্রাম অঞ্চলে নতুন করে জঙ্গি তৎপরতা শুরু হওয়ায় তালেবানি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দুর্ধর্ষ জঙ্গিদের গ্রেফতারের জন্য বিভিন্ন থানা পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বিগত সময়ে জঙ্গিদের সঙ্গে অভিযুক্ত মাদ্রাসাগুলোয় নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে।’