রানা আহমেদ, নলডাঙ্গা (নাটোর) প্রতিনিধি: তিন বন্ধুর মহুতি উদ্দ্যেগে নির্মিত কাঠের সাঁকো বদলে দিয়েছে নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার ১৫ গ্রামের ২ লক্ষাধিক মানুষের দুর্ভোগ আর কমিয়ে দিয়েছে ২০ কিঃমিঃ রাস্তার দুরত্ব । বন্ধ হয়েছে ছিনতাই সহ বহু অপরাধ । সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, উপজেলার মাধনগরের আদ্বুল আলিম, রহিদুল ও দুর্লভপুরের পলাশ তিন বন্ধু মিলে বীরকুৎসা রেলষ্টেশনের দক্ষিনে কুচিয়ামারা রেলওয়ে বধীজের পশ্চিম পাশে খালের উপর সম্পন্ন ব্যক্তিগত উদ্দ্যেগ গত বছরের সেপ্টম্বর মাসে প্রায় ৭ লাখ টাকা ব্যায়ে নির্মিত এ কাঠের সাঁকো নলডাঙ্গা উপজেলার সাধনগর, দুর্ভলপুর, মহিষডাঙ্গা, গৌরইপুর, ধুলাউরি, মিরপুর রাজশাহীর বাগমারা থানার বীরকুৎসা, শান্তিপুর, বনগ্রাম, গোপিনাথপুর, ভাগলদী, কোন্যাবাড়িয়া, হামিরকুৎসা সহ ১৫ গ্রামের বদলে দিয়েছে ২ লক্ষাধিক মানুষের দুর্ভোগ । আর এই কাঠের সাকো কমিয়ে দিয়েছে ২০ কিলোমিটার রাস্তার দুরত্ত এবং মাধনগর রেলষ্টেশন থেকে বীরকুৎসা রেলষ্টেশন পযন্ত আড়াই কিলোমিটার রেললাইন ঘেষে বয়ে যাওয়া রাস্তায় রাতে পাহাড়া বসিয়ে চলাচলকারী পথচারীর পূর্বের নিত্যদিনের ছিনতাই, রাহাজানি সহ বহু অপরাধ বন্ধ হয়েছে । স্থানীয় পথচারী ব্যাংককার বিপুল জানায়, এই কাঠের সাকো নির্মানের আগে এই সড়ক দিয়ে চলাচলে দুর্ভোগ সহ ছিনতাই রাহাজানীর কবলে পড়তে হত। এখন পাহাড়া থাকায় এবং কুচিয়ামার বধীজের পাশে নির্মিত কাঠের সাকো আমাদের পরিবার পরিজন নিয়ে ভ্যানযোগে চলাচলে ভোগান্তি কমেছে । দুর্লভপুর গ্রামের সেলিম জানায়, আগে উপজেলা জেলা সদরে যাওয়ার একমাত্র ট্রেনই আমাদের ভরসা ছিল । এখন আমরা টেধনের অপেক্ষা না করে ভ্যান,ভটভটি (শ্যালো গাড়ি) যোগে নির্বিঘ্নে তেল সার সহ নিত্যপণ্য ও নলডাঙ্গার হাটে ধান, গম, সরিষা সহ উৎপাদিত কৃষি পণ্য আনা নেয়া করতে পারি । ভ্যানচালক সম্মাট জানায়, আগে আমাদের ভ্যান বোঝাই মালামাল নিয়ে বর্ষা মৌসুমে নৌকা দিয়ে ও শুষ্ক মৌসুমে বধীজের নিজ দিয়ে পারাপার হতে ভোগান্তির শেষ থাকতো না । আর রাতে নৌকা না থাকায় রেল ব্রীজ পারাপার অত্যন্ত ঝুকিপূর্ন । এখন এ কাঠের সাকো আমাদের সেসব ভোগান্তি অনেক কমিয়েছে । বীরকুৎসা অবিনাস স্কুল এন্ড কলেজ শিক্ষক মামনুর রশিদ জানায়, আগে আমি নলডাঙ্গা থেকে স্কুলে যেতে বাইসাইকেল যোগে কষ্ট করে যাতায়াত করতে হত , এখন সাকো নিমার্নের পর আমি মোটরসাইকেল নিয়ে চলাচলে অনেক সুবিধা হয়েছে । খাজুরা ইউপি চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম ভুট্টু জানান, এই সাকো এ অঞ্চলের কয়েক লক্ষাধিক মানুষের একমাত্র ভরসা ।যা রীতিমত ব্যপক সাড়া ফেলে দিয়েছে । সংলিষ্ট সূত্র জানায়, এ অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থঅর উন্নয়নের জন্য ২০০৫ সালে একটি মহাসড়কের প্রস্তাব করা হয় । তৎকালিন বিএনপি সরকার সড়কটি বাস্তবায়নের জন্য ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। ২০০৮-২০০৯ অর্থ বছরে মধ্যে শুধু নওগাঁ অংশের কাজ সম্পন্ন হয় আর নলডাঙ্গা অংশের মাটি ভরাট ও সড়ক পকা করন কাজ হয় । কিন্তু হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে যায় এ মহাসড়কের কাজ । সাবেক প্রধান মন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের ৯ বছর পেরিয়ে গেলেও নাটোর-নলডাঙ্গা- আত্রাই-নওগাঁ আঞ্চলিক মহাসড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বাস্তবায়িত না হওয়ায় ঐ এলাকার সাথে যোগাযোগ স্থাপন অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। ফলে রেললাইনের ধার ঘেষে বয়ে যাওয়া মাটির কাচাঁ রাস্তা দিয়ে জীবনের ঝুকি নিয়ে চলাচল করতে হয় । নলডাঙ্গা- নওগাঁর সাথে যোগাযোগ করতে অতিরিক্ত সময় ব্যায় ও অর্থ ব্যায় হচ্ছে । আর এতে মোটরসাইকেল ,ভ্যান, বাইসাইকেল নিয়ে রেলওয়ে ব্রীজ পারাপার হতে পধতিনিয়ত দুঘর্নার শিকার হতে হয় । সড়কটি নির্মান না হওয়ায় এ অঞ্চলটি অবহেলিত ও উন্নয়ন বঞ্চিত হতে হচ্ছে । এ কারনে শিক্ষা , সাস্থ্য , ব্যবসা সহ নানা মুখি উন্নয়ন থেকে পিছিয়ে পরছে । মানুষের যাতায়াতে বিড়াম্বনা কথা চিন্তা করে এবং কষ্ট লাঘবের জন্য তিন বন্ধু আলিম , রহিদুলও পলাশ মিলে এই মহতি উদ্দ্যেগ গ্রহন করে । এদের মধ্যে আলিম জানায়, এলাকার মানুষের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে প্রায় ৭ লাখ টাকা খরচ করে নির্মান করি কাঠ ও বাশের সাঁকো । পথচারীরা পারাপারে সময় তাদের ২ টাকা , ভ্যান ৫ টাকা,শ্যালোগাড়ি ১৫ টাকা ও মোটরসাইকেল ৫ টাকা করে আদায় করি । এতে আমাদের চাহিদা মাফিক রোজগার হয় ।