বরিশালের উজিরপুর উপজেলার হারতা ইউনিয়নের জামবাড়ি গ্রামে এক যুবক নিহত হওয়ার ঘটনায় তাঁর কথিত প্রেমিকার বাড়িতে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী আগুন দিয়েছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে ও ২৫ টি ফাঁকা গুলি ছুড়েছে। হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে কথিত প্রেমিকাসহ তাঁর পরিবারের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রামবাসী, নিহত যুবকের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জামবাড়ি গ্রামের প্রভাবশালী বাসিন্দা যশোরথ সমাদ্দারের মেয়ে মিতু সমাদ্দারের (১৮) সঙ্গে একই গ্রামের সুপেন মিস্ত্রীর ছেলে তিতুমীর কলেজের ছাত্র সুখদেব মিস্ত্রীর (২৬) প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সুখদেব এক আত্মীয়র বিয়ে উপলক্ষে গতকাল সোমবার সকালে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে যান।
সুখদেবের পরিবারের লোকজন বলেছেন, গতকাল সোমবার রাত ১১ টার দিকে মিতু সুখদেবকে ফোনে তাঁদের বাড়িতে ডেকে নিয়ে যান।
আজ সকাল সাড়ে আটটার দিকে স্থানীয় লোকজন যশোরথ সমাদ্দারের বাড়ির পশ্চিম পাশে বাগানে সুখদেব মিস্ত্রীর লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন। সুখদেব মিস্ত্রীর হত্যার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পরলে গ্রামবাসী বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। একপর্যায়ে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে দুই থেকে আড়াই হাজার লোক যশোরথ সমাদ্দারের বাড়িতে হামলা চালায়। বিক্ষুব্ধ লোকজন বাড়ি ভাঙচুর করে বসতঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আগুন দেওয়ার পরে ঘরে থাকা লোকজন বেরিয়ে এলে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী তাদের ওপর হামলা চালানোর চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশ তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়ার জন্য রওনা হলে পুলিশের সামনে তাদের ওপর হামলা চালায়। উজিরপুর মডেল থানার পুলিশ লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হয়ে ২৫ টি ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এ ঘটনায় ১০ জন আহত হয়।
উজিরপুর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সঞ্জিব কুমার শীল জানান, লাশের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। মৃতদেহের বিভিন্ন অংশে নির্যাতনের ও গলায় ফাঁসের দাগ রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, নির্যাতনের পর গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করে লাশ বাগানে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
তবে উজিরপুর থানা হাজতে আটক লোকজনের কাছে হত্যার অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তাঁরা কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
প্রতিবেশী অমিতাভ রায় জানান, মিতুর সঙ্গে সুখদেবের প্রেমের সম্পর্ক মিতুর পরিবার মেনে নিতে পারেনি। এর আগে একাধিকবার সুখদেবকে যশোরথ ও তাঁর স্বজনেরা হুমকি দিয়ে আসছিল। হারতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হরেন রায় এ প্রসঙ্গে বলেন, এ ধরনের হত্যাকাণ্ড নিঃসন্দেহে অমানবিক। জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।