আইটেম গানের নামে আবারও চলচ্চিত্রে ঢুকে পড়ছে অশ্লীলতা। এখন প্রায় প্রতিটি ছবিতেই থাকছে আইটেম গান। এবং এর অধিকাংশ গানের কথিত শিল্পীরা প্রায় নগ্ন অবস্থায় ক্যামেরার সামনে দাঁড়াচ্ছেন। গানের কথাতেও থাকছে অশ্লীলতা। সুস্থ বিনোদনমূলক সিনেমা নির্মাণের দাবিকারীরাও আইটেম গানের মাধ্যমে খোলামেলা দৃশ্যের আশ্রয় নিচ্ছেন। আইটেম গানে অভিনয় করার জন্য এমন কিছু অভিনেত্রীর আবির্ভাব ঘটেছে যারা বিদেশের ডিস্কো কিংবা ক্যাবারের নর্তকীদেরও হার মানাচ্ছেন। ভাল-মন্দ দুই ধরনের ছবির পরিচালকরাও এখন আইটেম গানের প্রেমে মশগুল। প্রযোজকদের চাহিদার কারণে অনেক সুস্থ ধারার পরিচালক বাধ্য হচ্ছেন আপস করতে। কিন্তু দর্শক সব ধরনের আইটেম গান পছন্দ করছে না। অধিকাংশ প্রযোজক পরিচালকই আইটেম গানের শিল্পীদের নগ্নভাবে উপস্থাপন করেও দর্শকদের মন জয় করতে পারছেন না। দর্শক সব ছবিতে আইটেম গানের নামে নগ্নতা গ্রহণ করছে না। চলচ্চিত্রে অবস্থান গড়তে ব্যর্থ কিছু নায়িকাও এখন আইটেম গানের নামে গা খোলা হয়ে ক্যামেরার সামনে দাঁড়াচ্ছেন। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। আইটেম গান ছবির সাফল্যে কোন ভূমিকাই রাখতে পারছে না। এ বিষয়ে চলচ্চিত্র ব্যবসায়ীদের অভিযোগ- কোন আইটেম গানই গল্পের মধ্যে পড়ছে না। হঠাৎ হঠাৎ চলে আসছে অনেকটা খাপছাড়াভাবেই। ফলে দর্শক মনে দাগ কাটতে পারছে না। চলচ্চিত্র ব্যবসায়ীরা বলেন, এখনকার আইটেম গান হচ্ছে ‘নতুন বোতলে পুরানো মদ’। তারা বলেন, আইটেম গান চলচ্চিত্রের শুরু থেকেই ছিল ‘ক্লাইমেক্স গান’ নামে। সামাজিক অ্যাকশনধর্মী, পোশাকি ইত্যাদি সব ধরনের ছবির শেষ দৃশ্যের আগে একটি নাচ-গান থাকতো। অনেক বড় বড় নায়িকাও এসব গানে অভিনয় করতেন। শাবানা, ববিতার মতো শিল্পীরাও এসব গানে অভিনয় করেছেন। এরপর আসেন শর্বরী, লাভলী, ইয়াসমিন, স্বপ্নরা। তারপর নাসরিন, জেসমিনরা। এখন আসছেন বিপাশা কবীর, লায়লা নাঈম, সিন্ডি রোলিং, সাদিয়া আফরিন থেকে শুরু করে নায়িকা সিমলারা। ভারতীয় দু-একজনকেও দেখা গেছে আইটেম গানে অংশ নিতে। কিন্তু তখন এ গানগুলো আসতো গল্পের প্রয়োজনে আর এখন বাধ্যতামূলক। গল্প দাবি করুক বা না করুক আইটেম গান থাকা চাই-ই চাই। আর এ আইটেম গানের মাধ্যমে ঢুকছে অশ্লীলতা। আর এ অশ্লীলতার কারণে মহিলা দর্শকরা প্রেক্ষাগৃহবিমুখ হয়ে উঠছেন। চলচ্চিত্র ব্যবসায় বিরূপ প্রভাব পড়ছে। আইটেম গানের নামে অশ্লীলতা প্রতিহত করা না হলে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে আসা চলচ্চিত্র শিল্পের শেষ পরিণতি কি হবে তা নিয়ে অজানা আশঙ্কায় দুলছে চলচ্চিত্র শিল্প। কারণ, বর্তমানে চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড যে কঠোর মনোভাব প্রকাশ করছে তাতে করে এসব ছবির ভবিষ্যৎ নিয়েও সন্দিহান হয়ে উঠেছেন অনেকেই।