নারায়নগঞ্জের বুড়িগঙ্গা নদীতে বালুবাহী নৌকার ধাক্কায় যাত্রীবাহী ট্রলারডুবির ঘটনায় আটজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় এখনো দুজন নিখোঁজ রয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সোয়া ছয়টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কোস্টগার্ডের ডুবুরি দল ও স্থানীয় লোকজনের সমন্বয়ে উদ্ধার অভিযান চলছে। দুপুর পৌনে একটার দিকে ফতুল্লার আলীগঞ্জ এলাকায় বুড়িগঙ্গা মাঝনদীতে ট্রলারটি ডুবে যায়।
রাজধানীর লালবাগ থানার শহীদনগর এলাকার খোরশেদ আলমের ছেলে মো. জাকির (৩৫), ওহাব মিয়ার ছেলে মো. রুবেল (১৮), সোহরাব চৌধুরীর ছেলে রুবেল মিয়া (২২), নিজামের ছেলে মো. সাগর (১১), আজিজ ঢালীর ছেলে শিশু হৃদয় ঢালী (১২), মৃত আইয়ুব আলীর স্ত্রী করমজান বিবি (৬৫) ও অজ্ঞাতনামা একজন। এ ঘটনায় লাট মিয়ার ছেলে ছমিরউদ্দিনকে (৫০) আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্ত্যব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ সকালে ট্রলারটি চাঁদপুরের বেলতলী লেংটার মেলা থেকে ৭০-৮০ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়। দুপুর পৌনে একটার দিকে আলীগঞ্জ এলাকায় বুডিগঙ্গা নদীতে ‘সাথীবুল বাহার ২’ নামের বালুবাহী একটি নৌকা ওই ট্রলারটিকে ধাক্কা দিলে তা ঘটনাস্থলে ডুবে যায়। আশপাশের লোকজনের সহায়তায় ট্রলারটির বেশির ভাগ যাত্রী সাঁতরে তীরে উঠলেও নিখোঁজ থাকেন অনেকেই। খবর পেয়ে ফতুল্লা মডেল থানা-পুলিশ ও কোস্টগার্ডের ডুবুরি দল উদ্ধার অভিযান শুরু করে। রাত সোয়া আটটা নাগাদ নদী থেকে সাতটি লাশ উদ্ধার করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় ছমিরউদ্দিনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়।
ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান জানান, ট্রলারডুবির ঘটনায় এখন পর্যন্ত আটজনের মৃত্যু হয়েছে। এখনো দুজন নিখোঁজ রয়েছে।
জেলা প্রশাসক আনিছুর রহমান মিঞা জানান, ‘ট্রলারডুবির ঘটনার খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসি। নিখোঁজদের খোঁজে উদ্ধার অভিযান চলছে।’
সদরঘাট ফায়ার সার্ভিস শাখার ডুবুরি হুমায়ুন কবির (৪০) বলেন, ‘আমি প্রথমেই ডুবে যাওয়া ট্রলারটির অবস্থান নিশ্চিত করি। পরে তিন থেকে চার ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে ওই ট্রলারের আশপাশ থেকে সাতটি মৃতদেহ উদ্ধার করি।’
কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান জানান, নিহত আটজনের মধ্যে সাতজনের মৃতদেহ তাঁদের পরিবারে কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রত্যেক নিহতের পরিবারকে নগদ ২০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তাও দেয়া হয়েছে।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জামাল উদ্দিন মীর বলেন, অজ্ঞাত মৃতদেহটি স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে ট্রলারডুবিতে প্রাণহারা স্বজনদের কান্নায় সেখানকার আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে উঠে। স্বজনহারা ব্যাথা কারো শান্তনাই যেই তাদের কানে লাগছেনা। একজন আরেকজনকে ধরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। আশপাশের লোকজনের সহায়তায় ট্রলারটির বেশির ভাগ যাত্রী সাঁতরে তীরে উঠেন। বেচেঁ যাওয়া যাত্রীরা জানান, আজ সকালে ট্রলারটি চাঁদপুরের বেলতলী লেংটার মেলা থেকে ৭০-৮০ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়। দুপুর পৌনে একটার দিকে আলীগঞ্জ এলাকায় বুডিগঙ্গা নদীতে ‘সাথীবুল বাহার ২’ নামের বালুবাহী একটি নৌকা ওই ট্রলারটিকে ধাক্কা দিলে তা ঘটনাস্থলে ডুবে যায়।