২০১৪ সালে পত্রিকায় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী মোট ১৩৯৩ জন শিশু বিভিন্ন দুর্ঘটনায় মারা গেছে। ২০১৩ সালে এ সংখ্যা ছিলো ৮৩৮। ২০১৪ সালে দুর্ঘটনায় নিহত শিশুর মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ৫১৭ জন শিশু মারা গেছে।
এছাড়া, পানিতে ডুবে ৪৬৪ জন শিশু, বিদ্যুতায়িত হয়ে ৭৭ জন, পাহাড় ধসে ১১ জন, বজ্রপাতে ৫৮ জন, ভবন থেকে পড়ে ২৩ জন, বিষ্ফোরণে ৩৬ জন, জীবজন্তুর হামলায় ৩৭ জন, ঝড়ে ৩১ জন এবং বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডে ৮১ জন শিশু মারা যায়।
বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন আয়োজিত ও বাংলাদেশের শিশু পরিস্থিতি ২০১৪ সংবাদপত্রের পাতা থেকে শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের কর্মসূচি সমন্বয়ক আবদুল্লা আল মামুন। প্রতিদিন ৬টি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে এ তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ২০১৪ সালে ৩৯৪ জন শিশুকে বিভিন্ন কারণে হত্যা করা হয়েছে। ২০১৩ সালে সেই সংখ্যা ছিলো ৩৩৫ জন শিশু। শিশু হত্যার সবচেয়ে বড় কারণ পারিবারিক দ্বন্দ্ব ও জমি সংক্রান্ত মুক্তিপণ, ডাকাতি, বন্ধুদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও প্রেম।
একই বছরে ২১৩ জন শিশু আত্মহত্যা করেছে এবং ২৪৮টি শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এর আগের বছর এই সংখ্যা ছিলো যথাক্রমে ১৬৬ ও ২৬৭। আত্মহত্যার জন্য যে বিষয়টি সংবাদপত্রে বেশি উঠে আসে তা হচ্ছে, পারিবারিক কলহ, যৌন হয়রানি, পরীক্ষায় অকৃতকার্য, প্রেম ঘটিত বিষয়, পর্ণোগ্রাফিক ভিডিও প্রকাশ।
গত বছর রাজনৈতিক সহিংসতায় ৩ জন শিশু মারা গেছে, ১৫৩ জন শিশু হারিয়ে গেছে, ১২০ জন শিশু অপহৃত হয়েছে এবং ১৮ জন শিশুকে পাচার করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
শিশুদের সুরক্ষায় আবদুল্লা আল মামুন ৭টি সুপারিশ তুলে ধরেন। সুপারিশগুলো হচ্ছে-
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে শিশু সংক্রান্ত পৃথক একটি অধিদপ্তর স্থাপন করা; সরকারি-বেসরকারি ও বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয়ে একটি জাতীয় সুরক্ষা কাঠামো গঠন করা; শিশুশ্রম সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় পর্যবেক্ষণের জন্য শিশুশ্রম ইউনিটকে সক্রিয় করা; প্রাথমিক পর্যায়ে শিশুদের জন্য প্রধান বাজেট বরাদ্দ রাখা; শিশুদের পর্ণোগ্রাফি সম্পর্কে সচেতনতার পাশাপাশি প্রণীত আইনগুলোর বাস্তবায়ন; রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে শিশুদের ব্যবহার বন্ধ এবং শিশুর সুরক্ষা, বেঁচে থাকা, বিকাশ ও অংশগ্রহণ সম্পর্কিত প্রয়োজনগুলো মোকাবেলার জন্য একটি সমন্বিত জাতীয় পরিকল্পনা প্রণয়ন করা।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনের পরিচালক শাহীন আনাম, ড. তোফায়েল আহমেদ প্রমুখ।