নিজস্ব প্রতিবেদকঃআশুলিয়ায় বিভিন্ন সেক্টরে চাঁদাবজিকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও শ্রমিক লীগের ৩ গ্রুপের মধ্যে শনিবার দুপুরে রক্ত ক্ষয়ি সংঘর্ষ হয়েছে।এ সময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া,গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে এনাম মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল পৌঁছলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এসময় পুলিশ ২ জনকে আটক করেন তাদের একজনের নাম লরিন । অপরজনের নাম প্রকাশে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছে পুলিশ।
থানা পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, আশুলিয়া থানা ছাত্রলীগের নতুন কমিটির সভাপতি শামিম নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে বেশ কয়েকদিন যাবৎ যুবলীগ কর্মী সোহাগ ও আশুলিয়া থানা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক রাসেল দেওয়ানের মধ্যে বিভিন্ন সেক্টরে চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে প্রায় সময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় নবীনগর, টাকসু, বেলতলা, নয়ারহাটসহ বিভিন্ন এলাকার জনগণ আতংকে রয়েছে।
জানা গেছে, শুক্রবার বিকেলে নবীনগর বাসস্ট্যান্ডে পরিবহন সেক্টরে দেওয়ান, সৈকত, ম্যাক্সি, লেগুনা থেকে দীর্ঘদিন যাবৎ মালিক সমিতির পক্ষ থেকে চাঁদা তুলে শ্রমিক কল্যাণ ফান্ডে জমা দিয়ে আসছে শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক রাসেল দেওয়ানের লোকজন। অপর দিকে আশুলিয়া থানা ছাত্রলীগ সভাপতি এস এম শামিম নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে যুবলীগকর্মী সোহাগের নেতৃত্বে ফুটপাতের দোকান, পরিবহনসহ বিভিন্ন সেক্টরে চাঁদাবাজি করতো। এরই জের ধরে গত শুক্রবার বিকেলে নবীনগর এলাকায় বাসস্ট্যান্ডে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতা কর্মীরা পরিবহন শ্রমিকদের নিকট থেকে চাঁদা আদায় করতে গেলে ত্রিমুখি সংঘর্ষ হয়েছে। এ সংঘর্ষে সুমন, মাসুদ,সিরাজ, মজিবর, রফিকসহ অন্তত ৬-৭ জন আহত হয়েছে। শুক্রবারের ঘটনাকে পুজি করে শনিবার ছাত্রলীগ সভাপতি এস এম শামিমের চাচাতো ভাই রুপুসহ ২৫-৩০ জন বিশ্বাস গ্রুপের জুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার জন্য দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রসহ টাকসু এলাকায় রাসেল দেওয়ানের বাংলো বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় রাসেল দেওয়ান গ্রুপ টের পেয়ে তারাও অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে। এ সংঘর্ষে রুপু গুলিবিদ্ধ হয়। এ খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। পরে গুলিবিদ্ধ রুপুকে সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক রাসেল দেওয়ান স্বদেশ নিউজ ২৪ ডটকমকে বলেন, আশুলিয়ায় ছাত্রলীগের নতুন থানা কমিটির সভাপতি শামিম নির্বাচিত হওয়ার পর যুবলীগকর্মী সোহাগ পাথালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান পারভেজ দেওয়ানের নেতৃত্বে আমার বিভিন্ন সেক্টরের ব্যবসা দখল করার জন্য এ ঘটনা ঘটিয়েছে।এ ব্যাপারে সোহাগ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, রাসেল দেওয়ান নিজে এবং তার ভাইয়েরা দীর্ঘদিন যাবৎ সন্ত্রাসী কর্মকান্ড সৃষ্টি করেছে। যা বিভিন্ন পত্রিকা, টিভি মিডিয়া এবং প্রত্যেক প্রশাসনের নজরে আছে।
এ ব্যাপারে ঢাকা জেলা সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) নাজমুল হাসান এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে স্বদেশ নিউজ ২৪ ডটকমকে বলেন , এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস ও অস্ত্র আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।আশুলিয়ার বিভিন্ন সেক্টরে আধিপত্য বিস্তার করা নিয়ে প্রায় সময় ত্রি-গ্রুপের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া,গোলাগুলির ঘটনায় সাধারণ জনগণ আতঙ্কিত। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোস্তফা কামাল স্বদেশ নিউজ ২৪ ডটকমকে জানান, রাসেল দেওয়ান এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তার নামে অস্ত্র ও হত্যাসহ অন্তত ১০টি মামলা রয়েছে। দোষিদের আটকে পুলিশের আভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।