এমনিতেই যানজটের যাঁতাকলে পিষ্ট রাজধানীবাসী, এখন শঙ্কিত ঈদবাজারের যানজট নিয়ে। যত্রতত্র পার্কিং আর ট্রাফিকের অব্যস্থাপনাকেই দুষছেন তারা।
এদিকে, নিজেদের সীমাবদ্ধতার মধ্যেই রমজানে যানজট পরিস্থিতি সহনীয় রাখতে এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগ। তবে পূর্ব অভিজ্ঞতার কথা ভেবে রমজানে যানবাহন ও মার্কেটগুলো নিয়ন্ত্রণে আরও জোর দিতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
৩৬০ বর্গকিলোমিটারের মেট্রোপলিটন ঢাকায় ১ কোটিরও বেশি মানুষের বাস, দশ লাখ গাড়ি, তিন লাখ রিক্সা। পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে যানজট যেন এই নগরের নিত্য সঙ্গী। মরার উপর খাড়ার ঘায়ের মত রমজান এলেই এর সঙ্গে যুক্ত হয় ঈদ মার্কেটের জ্যাম। পনের রোজার পর থেকে ঘরমুখো মানুষের ঢলে এ কাতারে শামিল হয় বাস, রেল ও লঞ্চঘাটের এলাকা।
নগরবাসী এ অবস্থার জন্য অনিয়ন্ত্রিত পার্কিং, ফুটপাত দখল আর ট্রাফিক ব্যবস্থায় সমন্বয়হীনতাকে দুষলেও সংশ্লিষ্টরা তা মানতে নারাজ।
ট্রাফিক পুলিশের একজন সদস্য বলেন, ‘কার পার্কিংসহ অনেক ক্ষেত্রেই সাধারণ মানুষ আমাদের নির্দেশনা মানেন না।’
নিজেদের সীমাবদ্ধের কথা মেনে নিয়েই, রমজানকে সামনে রেখে বাড়তি সতর্কতা নিতে এরই মধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগ।
ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘গতবছরের চেয়ে এবার যানজট বেশি হবে- এটা স্বভাবতই ধরে নেওয়া যায়। কেননা, যানবাহন বেড়েছে। অতিরিক্ত ট্রাফিক পুলিশ, মার্কেট গুলোতে বিশেষ পুলিশ ইত্যাদি ব্যবস্থার মাধ্যমে আমরা কিছুটা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি।’
কেবল অতিরিক্ত জনবল নিয়োগে এ সমস্যা সমাধান সম্ভব নয় বলে মনে করেন, বিশেষজ্ঞরা। বললেন, গাড়ি চলাচলের পাশাপাশি প্রয়োজন বিপণীবিতানগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ।
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ সুলতান মোহাম্মদ সালেহউদ্দিন বলেন, ‘বিকেল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত ব্যক্তিগত গাড়িগুলোকে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে নিয়ে আসতে পারলে এবং ইফতারের দুই ঘণ্টা আগে বিপণীবিতানগুলো বন্ধ রাখলে যানজট অনেকাংশেই কমে আসবে।’
শুধু নিয়ম করেই নয় নিয়মিত মনিটরিং ব্যবস্থা চালু করার পক্ষেও মত তাদের।
এমনিতেই প্রতিদিন যানজটের বোঝা মাথায় নিয়ে রাজপথে বের হতে হয় নগরবাসীকে, তার ওপর রমজানে যুক্ত হওয়া বিপণীবিতান আর বাস টার্মিনালগুলোকে কেন্দ্র করে যানবাহনের বাড়তি চাপ- সবকিছু মিলে পরিস্থিতি সামাল দিতে কর্তৃপক্ষকে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।