মাথাপিছু আয়ের ভিত্তিতে তৈরি করা বিশ্বব্যাংকের রিপোর্টে বাংলাদেশ এখন নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে স্বীকৃত। কিন্তু শহরের বস্তিবাসী আর ছিন্নমূল মানুষের জীবনে বাস্তবে এর প্রতিফলন অর্থহীন। তাই সমাজে ধনী আর দরিদ্রের বৈষম্য দূর করে রাজনৈতিক সদিচ্ছার ভিত্তিতে এসব সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
যেখানে কোন মতে খেয়ে- পরে টিকে থাকা আর একটু মাথা গোজার ঠাই বড় বিষয় সেখানে প্রতিদিনের খাবার তালিকায় মাছ বা মাংস আশা করা অথবা সুন্দর পরিবেশে সন্তানের বেড়ে ওঠা অনেকটাই বিলাসিতা এসব সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কাছে। রাজধানীসহ সারাদেশের মেট্রোপলিটন সিটির গুরুত্বপূর্ণ এসব মানুষ জানেন না মাথাপিছু আয়ের ক্যালকুলেশন, বোঝেন না উন্নয়নের অ্যালগরিদম। তারা জানেন- শুধু বেঁচে থাকতে হবে।
যেখানে জীবনের মৌলিক চাহিদা পূরণ করাই সবচে বড় চ্যালেঞ্জ, যেখানে প্রতিদিনের আয় ব্যয়ের যোগ-বিয়োগের হিসেব মেলে না সেখানে বিশ্বব্যাংকের দেয়া রিপোর্টে বাংলাদেশের নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশের সুসংবাদটি এসব মানুষের জীবনে কতটুকু আনন্দ বয়ে আসবে, কতটুকু রং বয়ে নিয়ে আসবে সেটি এখনো প্রশ্ন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, আনুপাতিক হারে বস্তিবাসীর সংখ্যা কমলেও জনসংখ্যা বাড়ার কারণে এই সংখ্যা কম নয়। তাই সমাজের এসব মানুষকে প্রাপ্য সুযোগ সুবিধা দিয়ে এগিয়ে নিয়ে আসতে হবে।
অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জামান বলেন, ‘অতি দারিদ্র্য ১১ শতাংশে কমে এসেছে। জনসংখ্যার অনুপাতে এটি একটি ইতিবাচক দিক। আমাদের গড় আয় একটা পর্যায়ে এস পৌঁছেছে এটি একটি সুখবর। সবার আয় সুবন্টিত হতে হবে।’
শিক্ষক ও সাংবাদিক আফসান চৌধুরী জানান, ‘গ্রাম ও শহর দুই স্থানেই বৈষম্যটা বাড়ছে। দরিদ্রদের ন্যায্য সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করছি।’
তারা বলেন, সমাজের এসব মানুষকে মূল স্রোতধারায় এগিয়ে আনা গেলে বিশ্বের কাছে এক অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করবে বাংলাদেশ ।