৫০ রান করতে না করতেই দক্ষিণ আফ্রিকা হারিয়ে ফেলেছিল চারটা উইকেট। আর তারই মধ্যে শেষ ১৫.১ ওভারের খেলা। আর বাংলাদেশ ঠিক একই সময়ে রান করলো ৯৭ রান; কোন উইকেট না হারিয়েই।
আসলে এখানেই, দু’দলের মধ্যকার পার্থক্যটা স্পষ্ট। আর বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল আরেকবারের জন্য বুঝিয়ে দিলো ওয়ানডে ক্রিকেটে এখন তারা ‘বড় ব্যাপার’। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ জিতে গেল নয় উইকেটের বড় ব্যবধানে।
এই নিয়ে তৃতীয় বারের মত কোন দলের বিপক্ষে নয় উইকেটের ব্যবধানে জিতলো বাংলাদেশ। আগের দুটো অবশ্য ছিল দুর্বল শক্তি জিম্বাবুয়ে ও কেনিয়ার বিপক্ষে। বড় শক্তির বিপক্ষে এবারই প্রথম। ওহ আরেকটা কথা; উইকেটের হিসেবে এটাই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জয়।
১৭০ রানের টার্গেটটা দেশের মাটিতে কখনওই বাংলাদেশের জন্য বড় কোন সমস্যা নয়। আর দক্ষিণ আফ্রিকার দীর্ঘদেহী বোলারদের পাড়ার বোলার বানিয়ে সেটাকে আরও ছেলেখেলা বানিয়ে দিলেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার।
১৫৪ রানের জুটি গড়ে এই দুই ব্যাটসম্যানই বাংলাদেশকে এনে দেন সিরিজ জয়ের স্বাদ। সৌম্য ৯০ ও তামিম ৬১ রান করেন। পাঁচ রান করে অপরাজিত থাকেন লিটন কুমার দাস। ১৩ ওভার পাঁচ বল বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।
মিরপুরে দ্বিতীয় ম্যাচের মত এবারও টসে জিতেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু, নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানোর খেসারত দিয়ে খুব বেশিদূর যেতে পারেনি হাসিম আমলার দল।
চার উইকেটে ৭৮ রান থাকতে নামে বৃষ্টি। আর তাই দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের ২৩ ওভার পর ম্যাচ বন্ধ থাকে প্রায় দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা। পরে ম্যাচ শুরু হলে ওভার কমে ৪০-এ নেমে আসে।
নির্ধারিত ৪০ ওভারে নয় উইকেট হারিয়ে মোটে ১৬৮ রান করতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকা। সর্বোচ্চ ৫১ রান করেন জে পি ডুমিনি। এছাড়া ৪৪ রান আসে ডেভিড মিলারের ব্যাট থেকে।
বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নেন সাকিব আল হাসান। আর তিনি এর মধ্য দিয়ে মাত্র দ্বিতীয় বাংলাদেশি বোলার হিসেবে পৌঁছে গেছেন ২০০ উইকেটের ক্লাবে। আর ক্রিকেটের ইতিহাসে মাত্র ষষ্ট অলরাউন্ডার হিসেবে ২০০ উইকেট আর চার হাজারী রানের ক্লাবেও নাম লিখিয়ে ফেললেন সাকিব।
আর একটি উইকেট নিয়ে তৃতীয় বোলার হিসেবে ২০০ রানের মাইলফলকে পা রাখলেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। আর এর আগে ২০৭ উইকেট নিয়ে আগেই সেই এলিট ক্লাবে ছিলেন বাঁ-হাতি স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক। এছাড়া দুটি করে উইকেট নেন দুই পেসার রুবেল হোসেন ও মুস্তাফিজুর রহমান।
বাকিটা তো ইতিহাস। সৌম্যের ইতিহাস; তামিমের ইতিহাস। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথমবারের মত সিরিজ জয়ের ইতিহাস!