বুড়িগঙ্গা প্রথম সেতুর (চীন-মৈত্রী সেতু) টোল প্রত্যাহারের দাবিতে দ্বিতীয়দিনের মতো অবরোধ কর্মসূচির কারণে রোববারও সকাল থেকে সেতুতে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
দাবি আদায়ে সেতুতে চলাচলকারী বাস, ট্রাক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ সব ধরনের যানবাহনের চালক, শ্রমিক ও মালিকেরা সকাল থেকে সেতুর ওপর অবস্থান নিলে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়।
এতে রাজধানী ঢাকা থেকে খুলনা, বরিশাল, মুন্সীগঞ্জ ও কেরানীগঞ্জ রুটে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা।
দক্ষিণাঞ্চল থেকে ছেড়ে আসা বিভিন্ন পরিবহন পার হতে না পেরে সেতুর দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থান নেয়। এতে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে সৃষ্টি হয় যানজটের।
বাংলাদেশ আন্তঃজেলা ট্রাক চালক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি ও বুড়িগঙ্গা প্রথম সেতু টোলমুক্ত সংগ্রাম পরিষদের উপদেষ্টা মো. আদম আলী বলেন, ‘বুড়িগঙ্গা প্রথম সেতু করা হয়েছে ১৯৮৮ সালে। দ্বিতীয় সেতু হয়েছে ১৯৯৬ সালে। দুই বছর আগে দ্বিতীয় সেতুটি টোলমুক্ত করা হলেও প্রথম সেতুর টোল দিন দিন বৃদ্ধি করা হচ্ছে।’
প্রথম সেতু টোলমুক্ত সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ইমদাদুল হক দাদন বলেন, ‘এ সেতুর টোল ফ্রি করার দাবিতে তিন দিন আগে আমরা আন্দোলন করি। তখন বিষয়টি ভেবে দেখা হবে বলে আমাদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন ফ্রি তো দূরের কথা বর্ধিত হারে তারা টোল আদায় করছে। তাই বাধ্য হয়ে আমরা আন্দোলনে নেমেছি। এখন আমরা ৩৬ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। এতে কাজ না হলে সবাইকে নিয়ে লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচি পালন করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের এ আন্দোলন সরকারের বিরুদ্ধে নয়, জনস্বার্থে। আর জনস্বার্থ দেখাই সরকারের কাজ। টোল বৃদ্ধির ফলে সরাসরি যাত্রী সাধারণের ওপর এর প্রভাব পড়ছে। চালকরা ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছেন। ফলে প্রায়ই যাত্রীদের সঙ্গে চালক-শ্রমিকদের বাকবিতণ্ডা হচ্ছে।’
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘সকাল ৮ থেকে সেতুতে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’
এ ব্যাপারে মুন্সীগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী তারেক ইকবাল বলেন, ‘সরকার সারাদেশে সেতুগুলোর টোলের নতুন নীতিমালা করেছে। সেখানে প্রথম বুড়িগঙ্গা সেতুর মানও নির্ধারিত হয়েছে এবং সেই অনুযায়ী এই সেতুর নতুন টোল র্নিধারণ করা হয়েছে। টোল বাড়া ইস্যুকে কেন্দ্র করে অনেকে ফায়দা লোটার চেষ্টা করছেন। কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুসারে টোল আদায় করা হচ্ছে। বাড়তি কোনো টোল আদায় করা হচ্ছে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘জনপ্রতিনিধিরা যদি সরকারের কাছে আবেদন জানান তাহলে দ্বিতীয় সেতুর মতো এ সেতুর টোলও সরকার ফ্রি করে দিতে পারেন। আমরা বর্তমান আন্দোলনকারীদের দাবিদাওয়া ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি।’