সিলেটের শিশু রাজন হত্যার রেশ এখনো কাটেনি এরই মধ্যে এবার খুলনায় ১২ বছর বয়সী রাকিব নামে এক শিশুকে নির্মমভাবে হত্যার অভিযোগ উঠেছে গ্যারেজ মালিকের বিরুদ্ধে।
সোমবার বিকেলে নগরীর টুটপাড়া কবরখানা এলাকায় রাকিবের মলদ্বারে কমপ্রেসারের পাইপ দিয়ে বাতাস ঢুকিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। নির্যাতনের পর রাত ১২টার দিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে শিশু শ্রমিক রাকিবের। এ ঘটনায় আটক করা হয়েছে তিনজনকে।
খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকুমার বিশ্বাস চিকিৎসকদের বরাতে প্রিয়.কমকে জানান, ‘শিশু রাকিবের শরীরের অস্বাভাবিক পরিমাণ বাতাস প্রবেশ করানোর কারণে তার পেটের নাড়িভুড়ি ছিড়ে যায়, ফুসফুস ফেটে যায়। এছাড়াও তার শরীরের বিভিন্ন অর্গান অকেজো হয়ে যাওয়ার কারণে সে মারা যায়।’ ময়না তদন্তের জন্য তার মরদেহ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
জানা যায়, নগরীর টুটপাড়া এলাকার মিন্টু নামে এক ব্যক্তির মালিকানাধীন একটি গ্যারেজে কাজ করতো রাকিব। সম্প্রতি অন্য গ্যারেজে কাজ নেযায় সোমবার বিকেলে তাকে তুলে নিয়ে আসে মিন্টুর ভাইয়ের ছেলে শরীফ।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, মোটরসাইকেলের টায়ারে হাওয়া দেওয়ার মেশিন রাকিবের মলদ্বারে ঢুকিয়ে পেটে হাওয়া দেয় শরীফ ও মিন্টু। এক পর্যায়ে শিশু রাকিবের পেটসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ ফুলে ফেঁপে ওঠে। এতে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে রাকিব। অবস্থা গুরুতর দেখে নির্যাতনকারীরা রাকিবের শরীরের বিভিন্ন অংশে চাপ প্রয়োগ করে বাতাস বের করার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়। উপায়ন্তর না দেখে রাকিবকে একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেও অবস্থার কোনো উন্নতি না হওয়ায় তাকে ঢাকায় পাঠানোর পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। ঢাকায় নেওয়ার পথেই সে মারা যায়।
এঘটনায় এখনও মামলা দায়ের না হলেও প্রস্তুতি চলছে বলে প্রিয়.কমকে জানিয়েছেন খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুকুমার বিশ্বাস।
শিশু রাকিবের স্বজনদের অভিযোগ, ‘মালিকের অত্যাচার সহ্য না পেরে এক বছর আগেই টুটপাড়া কবরখানা এলাকার মিন্টু মিয়ার সাইকেলের গ্যারেজ ছেড়ে পাশের পিটিআই মোড়ে আরেকটি গ্যারেজে কাজ নেয় রাকিব’।
এ ঘটনায় স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা রাতেই মিন্টু, শরীফ ও শরীফের মা বিউটি বেগমকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে বলে জানিয়েছেন খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।