বাংলাদেশ সচিবালয় রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে স্থানান্তর করা হবে। মঙ্গলবার একনেক সভায় এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হতে পারে। প্রকল্পটি অনুমোদিত হলে ৪০ বছর আগের প্রকল্পটি সরকার বাস্তবায়ন করবে । সরকার সচিবালয় স্থানান্তর বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সংসদ ভবনের নকশা প্রণয়নকারী বিশ্ববিখ্যাত স্থপতি লুই আই কানের মাস্টার প্লানে একটি প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে। লুই কান রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে চন্দ্রিমা উদ্যানের উত্তরে সচিবালয় কমপ্লেক্স নির্মাণের পরামর্শ দিয়েছিলেন। শেরেবাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের (বিআইসিসি) পাশে বর্তমান আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার স্থানে ৩২ একর জমিতে নতুন সচিবালয় কমপ্লেক্স নির্মিত হবে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার স্থান গাজীপুরের পূর্বাচলে স্থানান্তর করা হবে। এখানে একটি স্থায়ী প্রদর্শনী কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র বাসসকে বলেছে, জাতীয় সচিবালয়ের নির্মাণ প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (একনেক) নির্বাহী কমিটির সভার কার্যতালিকায় রয়েছে। মঙ্গলবার এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। একনেক প্রকল্পটি বাস্তবায়নের অনুমোদন দেবে। বর্তমানে পররাষ্ট্র, শিল্প এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়সহ কয়েকটি মন্ত্রণালয় সচিবালয় কমপ্লেক্সের বাইরে রয়েছে। এতে প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড-নির্বিঘ্নে চালাতে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। সরকারি এই মুখপাত্র জানান, নতুন প্রশাসনিক ফোকাল পয়েন্টে চারটি ব্লক থাকবে। এতে থাকবে প্রশস্ত সড়ক ও সর্বাধুনিক সুবিধা। চারটি ব্লকের মধ্যে দু’টিতে ৩২টি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় এবং বাকি দু’টিতে ১৬টি মন্ত্রণালয় থাকবে। প্রতিটি ভবন হবে ৯ তলা বিশিষ্ট। কমপ্লেক্সটি নির্মাণে ২,২০৯ কোটি টাকা ব্যয় হবে। কমপ্লেক্সে একটি অডিটোরিয়াম, একটি কনফারেন্স সেন্টার, ব্যাংক, ডাকঘর, মসজিদ ও গাড়ি পার্কিংয়ের স্থান থাকবে। গণপূর্ত অধিদফতর ২০১৮ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্প কাজ সম্পন্ন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঢাকা মহানগরীতে ভয়াবহ যানজটের কথা বিবেচনা করে সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারী ও জনগণের সুবিধার জন্য প্রস্তাবিত মেট্রো রেলপথে কিছুটা পরিবর্তন আনা হতে পারে। এতে উত্তরা ও গাজীপুর থেকে সরাসরি নতুন সচিবালয়ের সাথে সংযোগ স্থাপন করা হবে। সচিবালয়টি ঠিক গণভবনের পাশেই হবে। এ কারণে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার জন্য একটি পৃথক পরিকল্পনা করা হবে। সরকারি সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৪ সালে রাজধানীর এই এলাকায় ৪২ একর জমিতে ১০টি ব্লকের সচিবালয় কমপ্লেক্স নির্মাণে যুক্তরাষ্ট্রের ড্যাভিড ওয়াইজডম এন্ড এসোসিয়েটের সঙ্গে বাংলাদেশের একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়। তবে এই চুক্তি দীর্ঘ সময়েও বাস্তবায়িত হয়নি। ১৯৯৬ সালের আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে এলাকায় দশ একর জমির ওপর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রটি (বিআইসিসি) নির্মিত হয়। এরপর পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েও বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়। প্রায় ৪০ বছর পরে এসে বর্তমান সরকারের সময়ে প্রকল্পটি আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে। বাসস