শ্রীপুরে স্কুলছাত্রীকে গলা কেটে হত্যা
-
Update Time :
শনিবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১৫
-
২৩২
Time View
শ্রীপুরে এক স্কুলছাত্রীকে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। নিহত নাজনীন আক্তার (৭) স্থানীয় চকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী এবং আক্কাছ আলীর মেয়ে। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে উপজেলার চকপাড়া (মোড়ল মার্কেট) এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আমিনুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার রাতে নানী মিনুজা বেগমের সঙ্গে ঘুমিয়ে ছিল নাজনীন। রাত ২টার দিকে পুলিশ পরিচয়ে দিয়ে কয়েকজন লোক দরজা খুলে দিতে ধাক্কা দেয়। একপর্যায়ে নানী দরজা খুলে দিলে তিনজন লোক ঘরে ঢুকে এবং নাজনীনকে ঘুম থেকে তুলে টেনেহিঁচড়ে ঘরের বাইরে নিয়ে যায়। এ সময় নানী বাধা দিলে তাকে ঘরে রেখে দুর্বৃত্তরা বাইরে থেকে দরজার ছিটকানি আটকে দেয়। এরপর চিৎকার করতে থাকেন। গতকাল ভোর চারটার দিকে তার চিৎকার শুনে প্রতিবেশী এক মহিলা ঘরের দরজা খুলে দেয়। নানী তাকে সব ঘটনা খুলে বলে এবং নাতনীকে খুঁজতে থাকেন। এ সময় তিনি ঘরের সামনে বারান্দায় নাজনীনের লাশ দেখতে পান। পরে এলাকাবাসী খবর দিলে পুলিশ সকাল সাড়ে ৬টায় লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে থেকে নিহতের বাবা আক্কাছ আলী দ্বিতীয় বিয়ে করে গাজীপুরের কোনাবাড়ি এলাকায় বসবাস করেন। পরবর্তীতে নাজনীনের মা আসমা বেগমও বিয়ে করে স্থানীয় সলিং মোড় এলাকায় দ্বিতীয় স্বামীর কাছে চলে যান। চকপাড়া এলাকায় নাজনীনের নানা হাসমত আলী হাসু নানী মিনুজা বেগম, মামা রিপন মিয়া ও নাজনীনকে নিয়ে বসবাস করতেন। ঘটনার রাতে নানা হাসু টাঙ্গাইলে এক আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলেন। রিপন ছিলেন ঢাকায়। বাড়িতে শুধু নানী ও নাতনি ছিলেন। নিহতের মামা রিপন মিয়া জানান, প্রায় তিন বছর আগে স্থানীয় আজগর আলীর ছেলে আব্দুল করিম ও আব্দুল কাদির মধ্যস্থতা করে রিপনের বাবা হাসমত আলী ওরফে হাসুর চকপাড়ার প্রায় ১১ শতাংশ জমি শ্রীপুরের নয়নপুর এলাকার ইয়াকুব আলী মেম্বারের ছেলে এমদাদুল হকের কাছে বিক্রি করে দেন। এ সময় তারা তার কাছ থেকে ১৭ লাখ টাকা নিয়ে অন্যত্র জমি কেনার আশ্বাস দেন এবং চকপাড়ায় তাদের জমিতে তিন কক্ষের একটি বাড়িতে থাকার ব্যবস্থা করেন। টাকার বদলে ওই বাড়িসহ কিছু জমি হাসুর কাছে বিক্রিরও প্রতিশ্রুতি দেন তারা। পরে ওই বাড়িতেই বসবাস শুরু করেন তারা। কয়েক বছর পর ওই বাড়িসহ জমি রেজিস্ট্রি করার জন্য চাপ দিলে করিম ও তার ভাই কাদির নানা টালবাহানা শুরু করেন এবং ওই বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হুমকি দেন। এ নিয়ে করিম ও কাদিরের সঙ্গে রিপনদের বিরোধ চলছিল। দেড় বছর আগে ষড়যন্ত্র করে রিপনকে একটি মোটরসাইকেল চুরির মিথ্যা মামলায় আসামি করে তাকে এলাকা ছাড়া করা হয়। নাজনীন হত্যার ঘটনায় তাদের হাত রয়েছে। তাকে হত্যা করে আমাদের ওই বাড়িছাড়া করার চক্রান্ত করছে তারা।
Please Share This Post in Your Social Media
More News Of This Category