মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নিবন্ধিত গ্রাহক ৩ কোটি ছুঁই ছুঁই। গত এক মাসেই বেড়েছে প্রায় সাড়ে ৯ লাখ গ্রাহক। আগস্ট মাসে নিবন্ধিত গ্রাহকসংখ্যা ছিল ২ কোটি ৮২ লাখ ৫৭ হাজার। আর সেপ্টেম্বর মাসে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৯২ লাখ ১২ হাজারে। সে হিসাবে এক মাসের ব্যবধানে গ্রাহকসংখ্যা বেড়েছে ৩.৩৮% বা ৯ লাখ ৫৫ হাজার। খবর দৈনিক মানবজমিনের। পত্রিকাটির তথ্যমতে এর আগে গত জুলাই মাসের চেয়ে আগস্টে পৌনে ৫ লাখ গ্রাহক কমে গিয়েছিল। পাশাপাশি কমেছিল লেনদেনের পরিমাণও। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, গ্রাহক বাড়ার পাশাপাশি মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে গড় লেনদেনও বেড়েছে। গত সেপ্টেম্বর শেষে দৈনিক গড় লেনদেনের দাঁড়ায় ৫০২ কোটি ১৯ লাখ টাকা, যা আগস্টে ছিল ৪২৮ কোটি ৫ লাখ টাকা। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সঙ্গে যুক্ত একাধিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা জানান, গত সেপ্টেম্বরে ঈদুল আজহা পালিত হয়েছে। ধর্মীয় ওই উৎসব ঘিরেই মূলত লেনদেন বেড়েছে। তথ্য অনুযায়ী, মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে বিভিন্ন ধরনের সেবা মাশুল বা ইউটিলিটি বিল পরিশোধে। এই একটি খাতেই আগস্টের তুলনায় সেপ্টেম্বরে প্রায় ৪৩% প্রবৃদ্ধি ঘটেছে। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সেপ্টেম্বরে ১৬৮ কোটি ২১ লাখ টাকা সেবা মাশুল লেনদেন হয়েছে, যা আগস্টে ছিল ১১৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। লেনদেনের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্সে। এ খাতে আগস্টের তুলনায় সেপ্টেম্বরে ৪০ শতাংশেরও বেশি প্রবৃদ্ধি ঘটেছে। সেপ্টেম্বরে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার আওতায় ৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকা প্রবাসী আয় লেনদেন হয়েছে। আগস্ট মাসে যার পরিমাণ ছিল ২ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বরে সক্রিয় গ্রাহকের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ১৭ লাখ ২৭ হাজার। আগস্টে সক্রিয় গ্রাহকসংখ্যা ছিল প্রায় ৯৬ লাখ। সেপ্টেম্বর মাসজুড়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রায় ১৫ হাজার ৬৬ কোটি টাকার লেনদেন হয়। আগস্টে যার পরিমাণ ছিল প্রায় ১২ হাজার ৮৪২ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক মাসের ব্যবধানে মোট লেনদেন ২ হাজার ২২৪ কোটি টাকা বা ১৭ শতাংশ বেড়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাধারণত যেসব হিসাবে একটানা তিন মাসের বেশি লেনদেন হয় না, সেসব হিসাবকে নিষ্ক্রিয় হিসাব বলে ধরা হয়। আর অন্ততপক্ষে তিন মাসের মধ্যে একবার লেনদেন করেছে, এমন হিসাবকে সক্রিয় হিসাব বলে ধরা হয়। এদিকে গ্রাহক ও লেনদেনের পাশাপাশি মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিনিধি বা এজেন্টের সংখ্যাও বেড়েছে। আগস্টের চেয়ে সেপ্টেম্বরে এজেন্টের সংখ্যা ৮ হাজার ৫০২ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৪২ হাজার ৪০০। বর্তমানে ২৮টি ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিংয়ের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন পেয়েছে। এর মধ্যে ২০টি ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিং সেবা কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে।