আগামী ১৩ই নভেম্বর অনুষ্ঠিত হচ্ছে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ)’র সম্মেলন। দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় পর এই সম্মেলন হচ্ছে। চলছে ব্যাপক প্রস্তুতিও। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিনের স্থবিরতা ঝেড়ে কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছে সব পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। দীর্ঘদিন চেপে বসা কমিটির পরিবর্তে ভোটের মাধ্যমে নতুন কমিটি নির্বাচন করতে চান বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক নেতারা জানিয়েছেন, রাজধানীর সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে ১৩ই নভেম্বর সকাল ১০ টায় এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। সংশ্লিষ্টরা জানান, এক যুগেরও বেশি সময় পরে আসন্ন স্বাচিপের এই সম্মেলন চিকিৎসকদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আওয়ামীপন্থি চিকিৎসকদের এই সংগঠনে আসন্ন সম্মেলকে ঘিরে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে একাধিক এমপিসহ রয়েছেন বিভিন্ন পর্যায়ের হেভিওয়েট প্রার্থীরা। এদিকে, সম্মেলন ঘোষণার পর সভাপতি পদপ্রার্থী হিসেবে যারা ইতিমধ্যে প্রচার কাজ শুরু করেছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন বিএমএ’র মহাসচিব ও স্বাচিপের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলান, সাবেক সংসদ সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, হলিফ্যামিলি রেডক্রিসেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রিন্সিপাল অধ্যাপক ডা. মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া, বিশিষ্ট নিউরোসার্জন ও বিসিপিএস’র সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া, অধ্যাপক ডা. কাজী শহিদুল আলম, অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার। এছাড়া মহাসচিব পদে যাদের নাম আলোচনায় রয়েছে তাদের মধ্যে আছেন বিএসএমএমইউ’র সাবেক প্রক্টর অধ্যপক ডা. এসএম জাকারিয়া স্বপন, বিএমএ’র যুগ্ম মহাসচিব ডা. আবদুল আজিজ, ডা. হাবিবে মিল্লাত, অধ্যাপক ডা. জামাল উদ্দিন, অধ্যাপক ডা. আবু ইউসুফ ফকির প্রমুখ। বিএমএ’র সাবেক মহাসচিব এবং বিএসএমএমইউ’র প্রো-ভিসি অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ সভাপতি পদে প্রার্থী হবেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। স্বাচিপ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৩ সালের ২৪শে ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠিত আওয়ামীপন্থি চিকিৎসকদের এ সংগঠনের সর্বশেষ নির্বাচন হয় ২০০৩ সালে। সেই নির্বাচনে সংগঠনের সভাপতি হিসেবে নির্বাচত হন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সলান। এ কমিটি প্রায় এক যুগের বেশি সময় ধরে পদ রয়েছেন। ২০১১, ২০১২ এবং ২০১৪ সালে স্বাচিপের সম্মেলন করতে একাধিকবার উদ্যোগ নেয়া হলেও তা শেষ পর্যন্ত সফলতার মুখ দেখেনি। সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক এবং সভাপতি পদপ্রার্থী অধ্যাপক ডা. মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া আসন্ন সম্মেলনে সম্পর্কে মানবজমিনকে বলেন, সম্মেলনের পুরো প্রস্তুতি চলছে। আশা করি সফলভাবে সম্পন্ন হবে সম্মেলন। নিজের প্রার্থিতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ছাত্র রাজনীতি থেকেই এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত আছি। ডা. মনিরুজ্জামান নিজেকে স্বাচিপের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের একজন বলে উল্লেখ করেন। সিনিয়রিটি দিকে দিয়েও সভাপতি পদের দাবি রাখি। তবে, নেত্রী শেখ হাসিনা যাকে নির্বাচিত করবেন তাকেই মেনে নিয়ে কাজ করবেন বলে এই চিকিৎসক নেতা মন্তব্য করেন। এদিকে শনিবার বিএমএ ভবনে সম্মেলন উপলক্ষে প্রস্তুতি সভায় সংগঠনটির কার্যনির্বাহী কমিটির (ইসি) নেতৃবৃন্দ একটি বিষয়ে একমত হয়েছেন বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে। সভায় আলোচনায় শেষে সংগঠনটির নেতারা সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে যাকে নেতা নির্বাচন করে দেবেন তাকে বা তাদেরকে তারা মেনে নেবেন। সারা দেশে স্বাচিপের কাউন্সিলরের সংখ্যা ১৩ হাজার ১৪৩ জন। যদি ভোট হয়, তারাই এই সম্মেলনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন বলে সূত্র জানিয়েছে।