এমনিতে ক্রিকেট মাঠে খুব একটা আবেগ প্রকাশ করতে দেখা যায় না সাকিব আল হাসানকে। তবে গতকাল জয় শেষে রংপুর রাইডার্স অধিনায়ক সাকিব আল হাসান নাচতে নাচতে এগিয়ে গেলেন সতীর্থদের দিকে। আবার ম্যাচের একপর্যায়ে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে নাখোশ সাকিব দেখালেন ভিন্ন মেজাজ। সংবাদ সম্মেলনে শুরুতেই উঠলো প্রশ্নটি। ম্যাচের ১৮তম ওভারে পেরেরার বলে মুশফিকুর রহীমকে আম্পায়ার আউট না দিলে ক্ষেপে যান সাকিব। দেখা যায় আম্পায়ারের সঙ্গে দূর্ব্যবহার করতেও। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে সাকিব বলেন, ‘মাঝে-মধ্যে এ রকম হয়ে থাকে। আমি আসলে ওটা নিয়ে কথা বলতে চাচ্ছি না।’ জয় উদযাপনে নিজের নাচ নিয়ে সাকিব বলেন, ‘ওইটার আউটপুট ঠিক বলবো না। ম্যাচটি জেতা আমাদের খুব দরকার ছিল। আমরা বেশ এগিয়ে গেলাম, চার ম্যাচে তিন জয়। সেরা দুইয়ে থাকার অবস্থায় অনেক বড় সুযোগ এখন আমাদের। আর প্রতিটি ম্যাচ জিতলেই ভালো লাগে, ক্লোজ ম্যাচ জিতলে আরও বেশি ভালো লাগে।’ আসরের শুরুর ৪ দিন দ্বিতীয় ম্যাচে ভিন্ন আচরণ দেখাচ্ছিল শেরেবাংলা মাঠের উইকেট। রান তুলতে ব্যাটসম্যানদের ঘাম ঝরছিল রীতিমতো। কিন্তু পঞ্চম দিন এসে দুপুরের ম্যাচেও একই চিত্র। সাকিব বলেন, ‘উইকেটে প্রতিদিন খেলা হচ্ছে, বিশ্রাম পাচ্ছে না। বিশ্রাম না পেলে স্বাভাবিকভাবেই কিউরেটররা ওভাবে প্রস্তুত করতে পারবেন না উইকেট।’ টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে ১০৯ রান তুলতে সক্ষম হয় সাকিববের দল। তবে সাকিব বলেন, আরও বেশি রান পেতাম আমরা। এই উই?কেটে ১৩০-১৩৫ রান পাওযা কঠিন ছিল না। শেষ ওভারে বোলার আবু জায়েদকে নিয়ে কিছু আলোচনা করেছিলেন সাকিব। সেই ওভারেই হয় ম্যাচের নিষ্পত্তি। সাকিব বলেন ‘আমি ওকে (জায়েদ) বলছিলাম যে ওই পরিস্থিতিতে বোলারের করার খুব বেশি কিছু থাকে না। এজন্যই ওকে বলছিলাম , ‘দেখো, তোমার হারানোর কিছু নাই, জেতাতে পারলে নায়ক হওয়ার সুযোগ আছে।’ পরপর দুই ম্যাচে সাকিবই রংপুরের জয়ের নায়ক ও ম্যাচসেরা খেলোয়াড়। সর্বশেষ বিপিএল-এ ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট খেতাব জেতেন সাকিব। এবার লক্ষ্য কি? উত্তরে মজা করলেন সাকিব। বলেন, ‘আসলে শেষ দুই বিপিএল-এ গাড়ি ছিল, এবার গাড়ি তো দেখছি না। সবসময় চেষ্টা করি দলের জন্য অবদান রাখতে। যেখানেই খেলি, সেরাটা দিতে চাই। খারাপ খেললে কেমন লাগে আমি জানি। ওই অনুভূতি আমি কখনোই পেতে চাই না। আজ শুরুতে ব্যাটিং ভালো করছিলাম। তবে অন্যপ্রান্তে উইকেট পড়তে দেখে আত্মবিশ্বাস আবার কমে যাচ্ছিল। ২-১টা বাউন্ডারি মারার পর মনে হচ্ছিলো ব্যাটিংটা ভালো হবে। যদিও ইনিংসের ৬ ওভারের পর বাউন্ডারি মারা কঠিন ছিল। তারপরও উইকেটে কিছু সময় কাটাতে পেরেছি, যেটা আমার দরকার ছিল। সব মিলিয়ে আমি খুশি। গতকাল সাকিবের ৩৩ রানের ইনিংসে এসেছে একটি ছয়ের মার। চলতি বিপিএল-এ সাকিবের এটি প্রথম ছক্কা। ক্লান্ত সাকিব শক্তি ফিরে পাচ্ছেন এটা কি তার প্রমাণ! সাকিব বলেন, ‘হ্যাঁ, আসলেই। তাও আবার ব্যাটের মাঝখানে লাগেনি। এরপর যখন অন্যপ্রান্তে ক্রমাগত উইকেট পড়ছিল, আর সাহস করে উঠতে পারিনি। উইকেট পড়লে অন্যপ্রন্তে আসলেই শক্তি কমতে থাকে।’