পোস্ট বাই আরজে রাফিঃ যাত্রা শুরু ২০১২ তে। পরের বছরেও আসর শুরু নিয়ে বিপত্তি হয়নি। জাঁকজমকভাবেই শেষ হয়েছে টি-টোয়েন্টির ঘরোয়া টুর্নামেন্ট বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)। কিন্তু দ্বিতীয় আসর শেষ হতেই সবকিছু টালমাটাল।
ফিক্সিংয়ের কালো পর্দা উন্মোচনে কলঙ্কিত বাংলাদেশের পুরো ক্রিকেট। মাঝবিরতির কারণ এটাই। ২০১৪ তে কোনো বিপিএল ছিল না। এক বছর বিরতির পর আবারো মাঠে গড়িয়েছে টি-টোয়েন্টির এই আসর।
সোমবার দ্বিতীয় পর্ব শুরু হচ্ছে চট্টগ্রামে। আর নামটা চট্টগ্রাম বলেই দৃশ্যপটে উঠে আসছে দ্বিতীয় বিপিএলের ফিক্সিং কান্ডের ইতিহাস। এখানেই যে রচিত হয়েছিল ফিক্সিংয়ের সেই কালো অধ্যায়।
এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্স ও চিটাগং কিংসের মধ্যকার সেই ম্যাচ দিয়েই বাংলাদেশের ক্রিকেটে ঢুকে পড়েছিল ফিক্সিং। ওই ম্যাচে চিটাগং কিংস ৫৪ রানে জয় পেয়েছিল। প্রথমে ব্যাট করে চিটাগং কিংসের করা ১৪২ রানের জবাবে ৮৮ রানেই থেমেছিল ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্সের ইনিংস।
যে ম্যাচে নিয়মিত অধিনায়ক মাশরাফিকে বসিয়ে অধিনায়ক করা হয়েছিল আশরাফুলকে। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা দলটা ম্যাচ হেরেছিল অনায়াসেই। এই এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে থাকা দর্শকসহ বিপিএল অনুরাগীরা হয়েছিলেন বড় ধরণের প্রতারণার শিকার। অবশ্য এর জন্য পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিলেন আশরাফুল। সেই চট্টগ্রামেই আবারো ফিরল বিপিএল।
২০১২ সালে নানা অনিয়ম, অসংলগ্নতার পরও দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছিল বিপিএল। ২০১৩ সালে দ্বিতীয় আসরও খুব বেশি আলাদা ছিল না দর্শকজনপ্রিয়তার দিক থেকে। কিন্তু আসরটি আলাদা হয়েছে শুধমাত্র ফিক্সিংয়ের থাবায়। আইসিসির দুর্নীতি দমন ইউনিটের (আকসু) তদন্ত উঠে আসে পর্দার আড়ালের কাহিনী।
আকসুর তদন্ত শেষে জানানো হয় ২০১৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্স ও চিটাগং কিংসের মধ্যকার ম্যাচটি ছিল পাতানো! অভিযুক্ত করা হয় ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্সের খেলোয়াড়, কর্মকর্তা ও মালিকসহ ৯ জনকে।
শাস্তি দেয়া হয়েছিল ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্সের ওই ম্যাচের অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল, কৌশল্য লুকুয়ারাচ্চি, ড্যারেন স্টিভেন্স, দলের মালিক সেলিম চৌধুরী ও শিহাব চৌধুরী। অভিযোগ থেকে মুক্তি পান মাহবুবুল আলম রবিন, মোশাররফ হোসেন রুবেল, বোলিং কোচ মোহাম্মদ রফিক ও দলটির সিইও গৌরব রাওয়াত।
ফিক্সিং থাবায় কলঙ্কিত বিপিএল আবারও চট্টগ্রামে। এবার অবশ্য ম্যাচ আর এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে হচ্ছে না। প্রাথমিক তালিকায় থাকলেও এমএ আজিজ স্টেডিয়াম বাদ পড়ে। এবারের বিপিএলে চট্টগ্রাম পর্বের চার দিনে ৮টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে।
১৬ কোটি মানুষের কাছে আবেগ হয়ে ওঠা ক্রিকেট নিয়ে এবার আর প্রতারণা হবে না এমন প্রত্যাশা সবার। ফিক্সিং কান্ডে জড়িয়ে অকালে ঝরে যাবে না মোহাম্মদ আশরাফুলের মতো তারকা ক্রিকেটার- এমন প্রার্থনাও থাকছে। সব মিলিয়ে চারদিনে মাঠে শুধু ধুন্ধুমার লড়াই-ই হবে, আর সেটা দেখার অপেক্ষাতেই ক্রিকেটমোদীরা।