বেশিরভাগ মানুষ মেটাবোলিজম বলতে ক্যালরি পোড়ানোকে বোঝেন। কিন্তু মেটাবোলিজম বলতে আরো অনেক কিছুকে বোঝায়। কোষীয় পর্যায়ে খাদ্যের পুষ্টি উপাদান গুলোকে শক্তিতে রূপান্তরিত করে মেটাবলিজম বা বিপাক ক্রিয়া। যকৃত, ব্রেইন, থাইরয়েড, পরিপাক ক্রিয়া এবং শরীরের অন্যান্য অংশের সাথে এই বিপাক ক্রিয়ার সম্পর্ক আছে। শরীরের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কাজের জন্য শক্তির এই রূপান্তর অতীব গুরুত্ব পূর্ণ। মেটাবলিজম ঠিকমত না হলে যে লক্ষণ গুলো প্রকাশ পায় তা হল-
আপনার এমন কিছু বদ অভ্যাস আছে যার কারণে আপনার বিপাক ঠিকমত হচ্ছে না, অর্থাৎ কমে গিয়েছে বিপাক ক্রিয়ার হার। আসুন তাহলে জেনে নিই সেই বদ অভ্যাস গুলো কী কী?
১। আপনার শরীর পর্যাপ্ত পানি পাচ্ছেনা
মানুষ যখন ঘুমিয়ে থাকে তখন ৬-৮ ঘন্টা শরীর কোন পানি পায়না। রাতের বেলা ঘুম থেকে জেগে এক গ্লাস পানি খেতে পারেন, এতে শরীর হাইড্রেটেড থাকবে। প্রতিদিন ২ লিটার পানি পান করা উচিৎ।
২। অনেক বেশি ক্যাফেইন গ্রহণ করা
কম অথবা বেশি আমরা সবাই ক্যাফেইন সমৃদ্ধ পানীয়ের প্রতি আকৃষ্ট, এটা হতে পারে চা-কফি অথবা কোমল পানীয়। পুষ্টিবিদদের মতে ক্যাফেইন ক্ষুধামন্দা সৃষ্টি করে। তাই দিনে ১ কাপের বেশি কফি খাবেন না। কোমল পানীয় খাওয়া কমিয়ে দিন।
৩। অনেক বেশি লবণ ও প্রক্রিয়াজাত খাবার গ্রহণ করা
বেশি লবণ খেলে মেটাবলিজমের হার কমে, ব্লাড প্রেশার বৃদ্ধি পায় এবং হার্ট ডিজিজ হয়। তাই লবণ খাওয়া কমিয়ে দিন। রসুন, পুদিনা, অরিগেনো ও মরিচ খান। প্রসেসড ফুডে সোডিয়াম, অ্যাডিটেটিভস ও বিভিন্ন উপাদান থাকে যা বিপাককে বাধাগ্রস্থ করে। প্রসেসড ফুড খাওয়া কমিয়ে দিন।
৪। অনেক বেশি চর্বিযুক্ত খাদ্য গ্রহণ করা
উচ্চ মাত্রার চর্বিযুক্ত খাবার হজমে সমস্যা হয়। মাংস, ভাজাপোড়া খাবার, পেস্ট্রি, কুকিজ ইত্যাদিতে অনেক বেশি অস্বাস্থ্যকর ফ্যাট থাকে যা মেটাবলিজমের হার কমায়। তাই এগুলো খাওয়া কমিয়ে দিন।
৫। পর্যাপ্ত সময় না ঘুমানো
ঘুম মানুষের শরীরের পুনরুদ্ধার ও পুনঃনির্মাণের কাজ করে। পর্যাপ্ত ঘুমে করটিসল-এর নিঃসরণ কমিয়ে স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ করে। যদি দিনের কাজের জন্য এনার্জি চান তাহলে রাতে ভালো করে ঘুমান।
৬। অনেক বেশি জুস খাওয়া
অনেক বেশি জুস খেলে শরীরে পানির পরিমাণ বৃদ্ধি পায়, যার ফলে ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য নষ্ট হয়। এতে শারীরিক অন্যান্য সমসার পাশাপাশি মেটাবোলিজমেও সমস্যা সৃষ্টি করে।
এছাড়াও অনেক বেশি সময় বসে থাকলে, দিনের শেষে অনেক বেশি ক্যালরি গ্রহণ করলে, বাসা বা অফিসের তাপমাত্রা বেশি থাকলে, ভুল সময়ে ওয়ার্ক আউট করা, পেস্টিসাইড গ্রহণ করা, অপ্রয়োজনীয় ঔষধ গ্রহণ করা, পর্যাপ্ত প্রোটিন না খাওয়া, অনেক কম খাওয়া, বেশি মিষ্টি খাওয়া ইত্যাদি কারণেও বিপাকের হার কমে যায়।