ডিপ্রেশন ব্যথার কারণ আবার ব্যথাও ডিপ্রেশনের কারণ হতে পারে। সেরেটোনিন ও ডোপামিনের লেভেল একে অন্যের ভারসাম্যের জন্য কাজ করে। ব্যথার জন্যও অ্যাংজাইটি হতে পারে। এজন্য ইতিবাচক আচরণ, সামাজিক সম্পর্ক বজায় রাখা এবং কোন বিষয়টি আপনাকে সুখী করে তা খুঁজে বের করা জরুরি। নিয়তিতে বিশ্বাস করা আর আশাবাদী হওয়া এক বিষয় নয়।
এবার আসুন, আমরা এমন কিছু কথা জেনে নিই যেগুলো মানসিক কষ্ট বা ডিপ্রেশনে আক্রান্ত মানুষকে বলা ঠিক নয়।
১। কেউ ডিপ্রেশনে ভুগলে তাঁকে কখনোই বলা উচিৎ নয় যে, ‘তোমার চেয়েও খারাপ অবস্থায় অনেকেই আছেন’। বরং আপনি তাঁকে এই বলে আশ্বস্ত করুন যে, ‘তুমি একা নও, আমি আছি তোমার পাশে’।
২। চরম বিষণ্ণতায় ভুগছেন এমন মানুষকে ‘জীবনের সবকিছুই মানুষের অনুকূলে থাকেনা’ এই কথাটি বলবেন না। বলুন, ‘তুমি আমার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ’।
৩। তাঁকে সরাসরি, ‘তুমি বিষণ্ণতায় ভুগছ’ না বলে বলুন ‘এমন সময় জীবনে আসতেই পারে, বিষণ্ণ হওয়া খারাপ কিছু না’।
৪। ‘তোমার অবকাশ যাপনে যাওয়া উচিৎ’ এই কথাটি বলা ঠিক নয়। কারণ কোথাও বেড়াতে গেলেই সে ডিপ্রেশন থেকে সত্যিকার ভাবে মুক্ত হতে পারবেনা। নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের Langone Medical Centerএর মনোবিজ্ঞানের প্রফেসর, MD, Norman Sussman বলেন, ‘ডিপ্রেশন তাঁদের সাথে থাকে এবং তাঁরা ভালো অনুভব করছেনা এজন্য অপরাধ বোধে ভোগে’।
৫। ‘হাসো বা উল্লাস কর’ এই কথাটি বলে আপনি তাঁকে সবচেয়ে সহজ ও ভুল পথ দেখাচ্ছেন। Sussmanএর মতে এটা বলা আর একজন পা ভাঙ্গা লোককে হাঁটার চেষ্টা করতে বলা একই কথা।
৬। অ্যাংজাইটিতে ভুগছেন এমন মানুষ আপনি যখন বলেন যে, ‘তোমার কৃতজ্ঞ হওয়ার মত অনেক কিছু আছে’ তখন সে বিচার করে এইভাবে, ‘আমি সুখি হওয়ার জন্য কিছুই করিনি, আমি জীবনের প্রতি কৃতজ্ঞ না’। যিনি অ্যাংজাইটিতে ভুগছেন তিনি সবসময় লজ্জা ও অপরাধবোধে ভোগেন। আপনি যদি কোন ভাবে পরিমাপ করতে পারতেন তাহলে বুঝতে পারতেন যে, অ্যাংজাইটিতে ভুগছেন এমন মানুষ তাঁর শরীরের প্রতিটা বিন্দু দিয়ে চেষ্টা করেন ভালো থাকতে। কেউ ইচ্ছা করে দুঃখী থাকতে চায় না।
মানুষের স্বাস্থ্য রক্ষার ক্ষেত্রে তাঁর সামর্থ্য অনেক গুরুত্ব পূর্ণ। Bandura’s theory of social action এর মতে, আপনার জীবনকে ভালো রাখার জন্য আপনার একটি পদক্ষেপই যথেষ্ট। আপনাকে বিশ্বাস করতে হবে যে আপনি ভিন্ন কিছু করবেন। আপনার ইতিবাচক আচরণ আপনার বিশ্বাস বাড়িয়ে দিবে। অদৃষ্টবাদ এই বিশ্বাস নষ্ট করে। অদৃষ্টবাদে বলা হয় যা হবার তা হবেই তুমি যত চেষ্টাই করনা কেন। তাই আপনাকে বিশ্বাস রাখতে হবে যে আপনি চাইলেই নিজের পরিস্থিতির উন্নয়ন করতে পারেন।