সৌদি আরবে ২০১৪ সালে ৮০ জন নারীর দেহে ধরা পড়ে এইডস। সেখানে বর্তমানে এইডস আক্রান্তের সংখ্যা ২১ হাজার ৭৬১। এ ঘটনায় সেখানকার অনেক বিশেষজ্ঞ বিস্ময় প্রকাশ করেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন সৌদি গেজেট। সৌদি আরবের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এইডস কর্মসুচি বিষয়ক পরিচালক সানা ফিলিমবান বলেছেন, এ খবরটি অনেক নারীর কাছে হতাশার। কারণ, তাদের বেশির ভাগই সৌদি আরবের বাইরে যান নি কখনো। তাহলে তারা কিভাবে এইডসে আক্রান্ত হলেন? এর জবাব সোজা। তারা এইডসে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের স্বামীদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে। এ সব স্বামী কখনও দেশের বাইরে যান অথবা অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। ফলে তাদের দেহে এইচআইভি ভাইরাস সংক্রমিত হয়। আর তা তিনি ছড়িয়ে দেন তার স্ত্রীর শরীরে। ১লা ডিসেম্বর বিশ্বজুড়ে পালিত হয় বিশ্ব এইডস দিবস। এ দিনটিতে সৌদি আরবেও নেয়া হয় পদক্ষেপ। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ দিনের কর্মসুচিতে সচেতনতা বৃদ্ধিতে অংশগ্রহণ করে। পরিচালিত হয় ওয়ার্কশপ, লেকচার। সানা ফিলিমবান বলেন, এইডস পরীক্ষা ও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পরামর্শ দিতে সৌদি আরবে স্থাপন করা হয়েছে ৪৮টি সেন্টার। এর মধ্যে ৩৬টি স্থাবর সম্পত্তির ওপর। ১২টি ভ্রাম্যমাণ। সানা বলেন, আমরা এ সংক্রান্ত সেবা গ্রহণকারীর নাম ঠিকানা প্রকাশ করি না। শুধু তাদের চিকিৎসক তার নাম, ঠিকানা জানেন। তিনি উল্লেখ করেন, বর্তমানে সৌদি আরবে এইডস রোগির সংখ্যা ২১ হাজার ৭৬১। এর মধ্যে সৌদি আরবের নাগরিক ৬ হাজার ৩৩৪ জন। অন্য দেশের নাগরিক ১৫ হাজার ৪২৭ জন। ২০১৪ সালের রেকর্ড অনুযায়ী ওই বছর নতুন ১ হাজার ২২২ জন রোগির দেহে এইডস পাওয়া যায়। তার মধ্যে ৩৬৪ জন সৌদি আরবের পুরুষ ও ৮০ জন নারী। বাকি ৭৭৮ জন অন্য দেশের নারী। সানা ফিলিমবান বলেন, সৌদি আরবে প্রথম এইডস রোগি সনাক্ত করা হয় ১৯৮৪ সালে। পরিসংখ্যান বলে যে, যেসব রোগির দেহে এইডস পাওয়া গেছে তার মধ্যে শতকরা ৩ ভাগই হলো শিশু। মায়ের বুকের ধুভ পান ও মায়ের দেহ থেকে সংক্রমিত শিশুর পরিমাণও শতকরা ৩ ভাগ। শতকরা ২ ভাগ রোগি এইডসে আক্রান্ত হয়েছেন সিরিঞ্জের মাধ্যমে মাদক গ্রহণের মাধ্যমে। সানা ফিলিমবান বলেন, অনিরাপদ শারীরিক সম্পর্কের মাধ্যমে সাধারণত এইডস ছড়ায়। উন্নত বিশ্বে যেখানে বেশির ভাগ মানুষ নিরাপদ শারীরিক সম্পর্ক গড়ে, সেক্ষেত্রে সমকামীরা বেশি এইডস ঝুঁকিতে থাকে। ওদিকে পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলোর সংগঠন জিসিসির স্বাস্থ্য মন্ত্রীদের নির্বাহী পরিচালনা পর্ষদের মহাপরিচালক প্রফেসর তাওফিক বিন আহমেদ খোজা বলেন, জিসিসিভুক্ত দেশগুলোতে প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে এইডস আক্রান্ত নাগরিকের পরিমাণ ০.১৫ থেকে ১.৯৫। তিনি বলেন, জিসিসিভুক্ত দেশগুলোতে সাম্প্রতিক সময়ে এইচআইভি সংক্রমণ বেড়েছে কিছু মানুষের অস্বাস্থ্যকর লাইফস্টাইলের কারণে। এই রোগের ভয়াবহতা সম্পর্কে তাদের জ্ঞানের অভাব রয়েছে। বিশেষ করে বেশি বেশি বিদেশ ভ্রমণ, বড় বড় শহরগুলোতে লোকজনের যাতায়াত, ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে মাদক গ্রহণ বেড়ে যাওয়া, বিভিন্ন দেশের বিদেশীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার কারণে এইডস ছড়ানো ত্বরান্বিত হচ্ছে।