১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকবাহিনীর আত্মসমর্পণের পর সারাদেশ যখন বিজয়ের আনন্দে মেতেছিলও, তখনও পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখ সমরে শেষ পর্যায়ে প্রাণপণ লড়াই চালাচ্ছিল চট্টগ্রামের মুক্তিযোদ্ধারা।
পাকবাহিনীর বর্বর আক্রমণ প্রতিরোধে মীরসরাই থেকে সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী পর্যন্ত দিনভর চলা সম্মুখ যুদ্ধের পর ১৭ ডিসেম্বর শত্রু মুক্ত হয় বন্দরনগরী। এদিন চট্টগ্রামে স্বাধীনতার পতাকা উড়িয়ে বিজয় উল্লাস করেন মুক্তিকামী মানুষ।
বন্দরের অবস্থানসহ কৌশলগত কারণে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর কাছে চট্টগ্রাম ছিলো গুরুত্বপূর্ণ স্থান।
তাই দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় চট্টগ্রামে তাদের শক্তি সঞ্চার করেছিলও বেশি। একই সাথে মুক্তিযোদ্ধারাও উপূর্যপরি গেরিলা হামলা চালিয়ে ব্যতিব্যস্ত করে রেখেছিলো পাক বাহিনীকে।
১৬ ডিসেম্বর তৎকালীন ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে মিত্রবাহিনীর কাছে পাক বাহিনীর আত্মসমর্পণের পর মুক্তির উল্লাসে মেতেছিলও সারা দেশ। কিন্তু তখনও চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে পাক হানাদার বাহিনীকে রুখে দিতে সম্মুখ সমরে প্রাণপণে লড়ছিল মুক্তি সেনারা বলে জানান মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান ডা. মাহফুজুর রহমান।
মুক্তিযুদ্ধে পাক সেনারা প্রথম প্রচণ্ড প্রতিরোধের মুখে পড়েছিলো চট্টগ্রামেই। পাক বাহিনীর জন্য আনা অস্ত্র খালাস বন্ধ করতে সোয়াত জাহাজ অবরোধ করেছিলো শ্রমিক-জনতা।
আর কিভাবে তারা একি করেছিলেন সে কথা সময় সংবাদকে জানান অস্ত্র বাহী পাকিস্তানী সোয়াত জাহাজ অবরোধকারী মুক্তিযোদ্ধা রইসুল হক বাহার।
চট্টগ্রামের বেশক’টি বিহারী কলোনী ও তার আশপাশে স্বাধীনতা বিরোধীদের শক্ত অবস্থান থাকলেও সাধারণ মানুষ মুক্তিবাহিনীকে প্রতিনিয়ত সহযোগিতা করেছে।
ঢাকা থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পাঠানো স্বাধীনতার ঘোষণাটি ২৬ মার্চ চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে পাঠ করেছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা এম এ হান্নান। পরদিন ২৭ মার্চ একই ঘোষণা পাঠ করেন তৎকালীন মেজর জিয়াউর রহমান।