কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষে অন্তত ৭ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত হাবিবুর রহমান হাবুলকে করিমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অন্য ছয়জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বুধবার সকালে পৌর এলাকার আনন্দবাজারে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক বর্তমান মেয়র হাজি আব্দুল কাইয়ুমের জগ প্রতীকের সমর্থনে প্রচারণা চালানোর সময় কামাল মিয়া নামে এক কর্মীকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবে পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম চৌধুরী মামুনের সমর্থকরা মারপিটে আহত করে। এর জের ধরে দুপুরে পার্শ্ববর্তী নয়াকান্দি এলাকায় বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকরা আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর পাল্টা হামলা চালায়। এতে নয়াপাড়া গ্রামের হাবিবুর রহমান হাবুল (২২), অর্জুন, নান্নু মিয়া, সাইফুল ইসলাম, সাইকুল ও তৌহিদ নামে ছয় আওয়ামী লীগ কর্মী আহত হয়। পাল্টাপাল্টি এ হামলার ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে আনন্দবাজার ও আশপাশের র্যাব ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
করিমগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক নাসিরুল ইসলাম খান আওলাদ জানান, পৌর এলাকার আনন্দবাজারে বুধবার সকালে আ.লীগ প্রার্থী কামরুল ইসলাম চৌধুরী মামুনের পক্ষে পূর্বনির্ধারিত গণসংযোগের কর্মসূচি ছিল। এতে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বাবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আবুল হাশেম চৌধুরী, আওয়ামী লীগ নেতা রুস্তম আলী ও তিনি অংশ নিতে যান। এ সময় স্বতন্ত্রপ্রার্থী বর্তমান মেয়র হাজি আব্দুল কাইয়ুমের সমর্থক উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি রফিকুর রহমান, স্বতন্ত্র প্রার্থীর ভাই আবুল কালাম, উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক জাহাঙ্গীর সিরাজী, টিপু হাজারিসহ কয়েকজন বাধা দেন। তখন দু’পক্ষ মুখোমুখি হলে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। স্থানীয়দের হস্তক্ষেপে দু’পক্ষ ফিরে যায়। পরে বেলা ১২টার দিকে আওয়ামী লীগের ৮-১০জন কর্মী অটোরিকশা করে যাওয়ার সময় নয়াকান্দি এলাকায় হামলার শিকার হন। এ সময় ২০-২২জন যুবক লাঠিসোটা ও রামদা নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে নয়াপাড়া গ্রামের হাবিবুর রহমান হাবুল (২২) মারাত্মকভাবে আহত হন। তিনি ছাড়াও হামলায় অর্জুন, নান্নু মিয়া, সাইফুল ইসলাম, সাইকুল ও তৌহিদ নামে পাঁচজন কমবেশি আহত হয়েছেন। আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক আওলাদ জানান, এ হামলার বিষয়ে থানায় মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তবে বিএনপি নেতা রফিকুর রহমান নিজের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করে জানান, তিনি ওইসময় আনন্দ বাজার ছিলেন না। ওই এলাকায় তখন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হাজি কাইয়ুমের সমর্থকদের প্রচারণার সময় নির্ধারিত ছিল। একই এলাকায় পাশাপাশি দুই প্রার্থীর পক্ষে সভার জের ধরে নৌকার লোকজন হামলা করে প্রতিপক্ষের কামাল মিয়া নামে এক ব্যক্তিকে আহত করে। পরবর্তীতে নৌকার সমর্থকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে বলে তিনি শুনেছেন।
করিমগঞ্জের রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্বে থাকা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মঞ্জুরুল আলম বলেন, আসলে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে একটি ভুল বোঝাবুঝির ঘটনা ঘটেছিল। তবে উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যাটি মিটমাট করা হয়েছে। কোন প্রার্থীর পক্ষ থেকেই লিখিত কোন অভিযোগ করা হয়নি।