দীর্ঘদিনের সাথীদের ফুলেল শুভেচ্ছা আর আনত শ্রদ্ধায় চির বিদায় নিলেন হকির সবারপ্রিয় মিলু ভাই। বৃহস্পতিবার সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত আম্পায়ার মরহুম মির্জা ফরিদ আহমেদ মিলুর প্রথম নামাজ-এ জানাযা রোববার বেলা সাড়ে দশটায় মওলানা ভাসানী হকি ষ্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। তার নামাযে জানাযায় ফেডারেশনের সাবেক ও বর্তমান সকল কর্মকর্তা, খেলোয়াড়, কোচ, প্রিমিয়ার, প্রথম ও দ্বিতীয় বিভাগের ক্লাব কর্মকর্তা উপস্থিত থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের সভাপতির পক্ষ থেকে বিমান বাহিনীর একটি বিশেষ দল তাকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়। মির্জা ফরিদ মিলুর দুই মেয়ো ও এক ছেলে গতকাল সকালেই যুক্তরাষ্ট্র থেকে ঢাকায় আসেন। হকি স্টেডিয়ামে প্রথম নামাযে জানাযার পর উত্তরায় তার দ্বিতীয় জানাযা শেষে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়।
মরহুম আজিজ আহমেদের সন্তান মির্জা ফরিদের জন্ম ২৮ নভেম্বর ১৯৪৫ সালে ফরিদপুরে হলেও তাদের আদিবাড়ি মানিকগঞ্জে। ১৯৫৮ সালে প্রথম বিভাগ হকি দিয়ে তার খেলোয়াড়ি জীবন শুরু। ১৯৬২ সাল থেকে স্বাধীনতার আগ পর্যন্ত পুর্ব পাকিস্তান হকি দলে ছিলেন। তাছাড়া ঢাকা জেলা হকি দলের নিয়মিত খেলোয়াড় ছিলেন। ১৯৬৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হকি দলের অধিনায়কও ছিলেন। খেলোয়াড়ি জীবন শেষে ১৯৭৫-১৯৮১ সাল পর্যন্ত হকি ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক, ১৯৮৪-১৯৮৮ সাল পর্যন্ত সাধারণ সম্পাদক এবং পরবর্তীতে সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সিনিয়র সদস্য ছিলেন । মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্টের পাশাপাশি হকি আম্পায়ার্স বোর্ডের চেয়ারম্যানও ছিলেন। ঢাকা জেলা ক্রীড়া সংস্থার টানা ২৫ বছর হকি কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন।
১৯৭৮ সালে ব্যাংককে ৮ম এশিয়ান গেমস, ১৯৮৮ সালে দিল্লীতে যুব হকি, ২০০২ সালে কোরিয়ার বুশানে এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার ছিলেন। তবে খেলার চেয়ে খেলা পরিচালনায় যথেস্ট অবদান রাখেন। সাবেক পূর্ব পাকিস্তান থেকে হকি আম্পায়ার হিসেবে এবং স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের অধিনে গ্রেড ওয়ান আম্পায়ার হিসেবে দেশে ও বিদেশে (৪টি এশিয়ান গেমস, ভারত পাকিস্তান টেস্ট সিরিজ) ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত খেলা পরিচালনা করেন। জীবনের শেষ দিকেও এশিয়ান গেমস, এশিয়া কাপ, এশিয়ান গেমস কোয়ালিফাইং হকি টুর্ণামেন্টে টেকনিক্যাল অফিসার ও জাজের দায়িত্ব পালন করেন।