চলচ্চিত্রে অভিনেতা হিসেবে জায়েদ খানের অভিষেক ঘটে ২০০৭ সালে। ছবির নাম ‘ভালোবাসা ভালোবাসা’। পরিচালক মোহাম্মদ হান্নান। এরপর আর থেমে থাকেননি। ‘মন ছুঁয়েছে মন’, ‘আত্মগোপন’, ‘আমার স্বপ্ন আমার সংসার’, ‘তোকে ভালোবাসতেই হবে’, ‘অদৃশ্য শত্রু’, ‘কাছের মানুষ’, ‘প্রেম করব ‘তোমার সাথে’, ‘নাগ-নাগিনীর স্বপ্ন’, ‘জমিদার বাড়ির মেয়ে’, ‘পাপের প্রায়শ্চিত্ত’, ‘নগরমাস্তান’, ‘ভালোবাসা সীমাহীন’ সহ আরও বেশকিছু ছবিতে অভিনয় করেন। তবে এসব ছবির মধ্যে ‘প্রেম করবো তোমার সাথে’ ছবির সাফল্য তাকে এনে দেয় ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট। আজকের ‘আলাপন’-এ বর্তমান ব্যস্ততাসহ চলচ্চিত্রের নানা বিষয়ে কথা বলেছেন তিনি। তার সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন কামরুজ্জামান মিলু
কেমন আছেন ? বর্তমান ব্যস্ততা নিয়ে বলুন ?
ভালোই চলছে। সম্প্রতি রকিবুল আলম রকিবের ‘মনের রাজা’ ছবির কাজ শেষ করলাম। এছাড়া আজিজুর রহমানের ‘মাটি’ ও মালেক আফসারীর ‘মন জ্বলে’ ছবি দুটিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। ‘মাটি’ মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গল্পের ছবি। মা ও পাকিস্তানি পুত্রকে ঘিরে তৈরি হয়েছে ছবির গল্প। ‘মনের রাজা’ ও ‘মাটি’-দুটি ছবিতেই আমার বিপরীতে অভিনয় করছেন পিয়া বিপাশা। ফেব্রুয়ারিতে পরীমনির বিপরীতে ‘মন জ্বলে’ ছবির কাজ শুরু করছি। এ ছবিটির গল্প লিখেছেন মালেক আফসারী। আর এপ্রিলে ‘মাটি’ ছবির কাজ শুরু করব।
এ পর্যন্ত আপনার অভিনীত কোন ছবিগুলো দর্শকের সাড়া বেশি পেয়েছে?
আমি ’ পত্রিকার ‘প্রিয়মুখ’ হওয়ার পর থেকেই আমার নায়ক হওয়ার স্বপ্ন জাগে। সেই থেকে চেষ্টা শুরু। আজ এসে সেই চেষ্টাটা অনেক সফল, সেটা আমি দাবি করতে পারি। আর আমার ক্যারিয়ারে বড় সাফল্য যোগ করে ‘প্রেম করবো তোমার সাথে’ ছবিটি। তবে এ ছবির বাইরে অন্য ছবিগুলোকেও আমি বাদ দিতে চাই না। কারণ, ওইসব ছবিতে সুযোগ না পেলে হয়তো নতুন নতুন ছবি করা হতো না আমার।
ছবির বাইরেও আপনাকে চলচ্চিত্র বিষয়ক বিভিন্ন কর্মকান্ডে দেখা যায়-এটার বিশেষ কোনো কারণ আছে কি?
শুটিং থাকুক বা না-থাকুক এফডিসিতেই বেশি সময় কাটাতে পছন্দ করি আমি। আমি শতভাগ চলচ্চিত্রের মানুষ। সেই ছোটবেলায় চলচ্চিত্রের প্রেমে পড়ি। পিরোজপুর শহরে বাসার পাশেই ছিল জনতা সিনেমা হল। স্কুল ফাঁকি দিয়ে প্রায়ই সিনেমা হলে ছবি দেখতে যেতাম। বিনা টিকিটে ছবি দেখার জন্য হল মালিকের ছেলের সঙ্গে ভাব জমানোসহ রয়েছে নানা স্মৃতি। মান্না ফাউন্ডেশনের মান্না উৎসব, শাবনূরের জন্মদিনসহ নানা কর্মকান্ডে এগিয়ে গিয়েছি। আমি এফডিসি সংশ্লিষ্ট মানুষদের সঙ্গে কাজ করতে বা আড্ডা দিতে ভালোবাসি।
আগে তো ক্রিকেট খেলতেন ? এখন কি নিয়মিত খেলা হয়?
সত্যি বলতে আমি নিজে ক্রিকেটের অনেক বড় ভক্ত। পিরোজপুর সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ে ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ছিলাম। পরে পিরোজপুর জেলা দলেরও অধিনায়ক হয়েছিলাম। বর্তমানে কাজের ব্যস্ততায় ওভাবে খেলা হয় না। তবে খেলা দেখতে বেশ পছন্দ করি। ইমরান খান, আতাহার আলী খানসহ আমাদের দেশের মাশরাফি, সাকিব আল হাসানসহ অনেকের খেলা আমাকে টানে।
সামনে আপনার অভিনীত কোন কোন ছবি মুক্তির প্রহর গুনছে?
সামনে আমার অভিনীত ‘লাভ ইন মালয়েশিয়া’, ‘জ্বলছে হৃদয়’ ,‘কাটা দাগ’, ‘মিশন সি আইডি’, ‘তোমার প্রেমে পড়েছি’ ছবিগুলো মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে। এছাড়া এফ আই মানিকের ‘ন্যায়বিচার’ ছবির কিছু কাজ করেছি।
চলচ্চিত্রে খুব খারাপ সময় যাচ্ছে। এই খারাপ সময় কাটানোর জন্য কি পদক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করছেন?
চলচ্চিত্রের বর্তমান সময়টা খুব খারাপ যাচ্ছে। এটা কাটাতে আমাদের শিল্পীদের এক হয়ে কাজ করতে হবে। পাশাপাশি পাইরেসি, হলের পরিবেশসহ নানা বিষয়ে চলচ্চিত্রের উন্নয়নে সরকারকেও ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে হবে। আর শিল্পী হিসেবে আমি আত্মবিশ্বাসী। আমার বিশ্বাস, সামনে বেশকিছু ভালো ছবি দেখবেন দর্শকরা। আর চলচ্চিত্রের খরা কেটে আবারও ফিরে আসবে সুসময়। ভালো মানের কিছু নির্মাতার সঙ্গে কাজ করছি এখন। আশা করি, নতুন বছরের কাজগুলো দর্শক পছন্দ করবে।