যশোরের মনিরামপুরে ইটভাটায় আটকে রেখে ইট তৈরির কাজ করানোর অভিযোগে ২ শিশুসহ ১২ জন ভাটা শ্রমিককে উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল এক অভিযোগের ভিত্তিতে মনিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন লাভলু ইটভাটা থেকে তাদেরকে আটক অবস্থায় উদ্ধার করে। উদ্ধারকৃতরা হলো খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার ন’হাটী গ্রামের রাশিদা (৫০), একই গ্রামের আসমা খাতুন (২২), চম্পা (২০), জাহিদুল ইসলাম (২৪), সাইদ গাজী (৩৫) এবং একই উপজেলার সনাতনকাটি গ্রামের কুলছুম (৪৭), ফাতেমা (২৮), আজিজুল হক (৩৪), নজরুল ইসলাম (২৪) ও সুলতান গাজী (৫৮)। এছাড়া আসছা খাতুনের দেড় বছরের শিশুপুত্র হৃদয় ও ফাতেমা খাতুনের ২ বছরের কন্যা সাথীকে উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া শ্রমিক রাশিদা খাতুন জানান, ইটভাটায় রাতের বেলা আমাগে ঘরে তালা দিয়ে ও দিনের বেলা পাহারা দিয়ে কাজ করাতো। সপ্তাহে তিনদিন কিছু চাল আর অল্প সবজি দিত। আর অনেকদিন না খেয়ে থাকতে হয়েছে। ভাটা শ্রমিক নজরুল ইসলাম বলেন, আমাগে রাতে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হতো এবং রাতে ঘরের দরজায় বিদ্যুৎ দিয়ে রাখতো। আমাগে এছাড়া না খেয়ে কাজ করতে কষ্ট হলে একটু বিশ্রাম নিতে চাইলেই মারপিট শুরু করতো। নির্যাতনের শিকার হওয়া লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাইকগাছা উপজেলার ন’হাটী গ্রামের সবুর গাজী নামের এক শ্রমিক সর্দারের সঙ্গে চুক্তিতে পাইকগাছা উপজেলা বিভিন্ন গ্রামের প্রায় ৫০ জন শ্রমিক মনিরামপুরের মেসার্স মুরাদ ব্রিক্সে (সাবেক মদিনা ব্রিক্স) যোগ দেন। এরপর থেকে ভাটা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের চুক্তি মোতাবেক পারিশ্রমিক না দেয়ায় অনেকে কাজ ছেড়ে পালিয়ে যায়। বাকি শিশুসহ ১২ জনকে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখে কাজ করায় ভাটা মালিক। সোমবার এদের মধ্যে থেকে সাইদ গাজী পালিয়ে গিয়ে স্থানীয় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এ ব্যাপারে মেসার্স মুরাদ ব্রিক্স এর স্বত্বাধিকারী আবু সাঈদ এর ভাই মুরাদ হোসেন বলেন, তাদের অভিযোগ সত্য নয়, বরং আমরাই শ্রমিক সরদারের কাছে টাকা পাবো। মনিরামপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন লাভলু জানান, অভিযোগ পেয়ে তাদেরকে উদ্ধার করা হয়েছে। উভয়পক্ষের কাছে ঘটনাটি শুনে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।