আসন্ন এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের গুজবে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের বিভ্রান্ত না হওয়ার আহবান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি বলেন, প্রশ্ন ফাঁসের চেষ্টা কেউ করলে তাদের হাত ভেঙে যাবে। দেশবাসীর প্রতি এই মেসেজ পৌঁছে দিতে চাই প্রশ্ন ফাঁস হবে, নকল করতে পারবেন এই আশায় বসে থাকবেন না। তাহলে বিপদে পড়বেন, সর্বনাশ হয়ে যাবে। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হতে যাওয়া এসএসসি পরীক্ষা উপলক্ষে আজ সোমবার সচিবালয়ে এক বৈঠকে মন্ত্রী একথা বলেন। দেশের ৩ হাজার ২০৩টি কেন্দ্রে এবার ১৬ লাখ ৬৯ হাজার ৩১৭ জন পরীক্ষার্থী এবারের পরীক্ষায় অংশ নেবে। শিক্ষামন্ত্রী নাহিদ বলেন, একটি স্বার্থান্বেষী মহল সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে পাবলিক পরীক্ষার সময় প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুজব ছড়ায়। এ ধরণের দুষ্ট চক্র নিজেদের বানানো প্রশ্নপত্র ফেসবুকের মাধ্যমে ছড়িয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করে, তাদের মনোবল নষ্ট করে দিয়ে পরীক্ষা প্রস্তুতিতে ব্যাঘাত ঘটায়। ফেসবুকে প্রশ্ন ছড়িয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি বন্ধে পরীক্ষার সময় বিটিআরসি তৎপর থাকবে। বিজি প্রেস থেকে ফাঁস হওয়ার সুযোগ বন্ধ করা হয়েছে বলে দাবি করে তিনি বলেন, সেখান থেকে অটোমেটিক সিলগালা হয়ে প্রশ্ন চলে যাবে। সেখানে কারো পক্ষে একটি প্রশ্নও মুখস্ত করা সম্ভব না। তবে প্রশ্নপত্র ফাঁসের সুযোগ বন্ধে আধা ঘণ্টা আগে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রশ্ন পৌঁছানো এই মুহূর্তে প্রয়োগ করা সম্ভব নয় বলে জানান তিনি। মন্ত্রী বলেন, শিক্ষক নামধারী কিছু ‘কুশিক্ষক’ পরীক্ষা শুরুর আগে নিজ নিজ ছাত্রদের এমসিকিউ প্রশ্ন ফাঁস করে দিত। তাদের অনেককে শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে। এজন্য সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রণয়ন বন্ধ করা হয়েছে। কোচিং সেন্টারসহ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের চেষ্টা চালাতে পারে এমন সব চক্রকে কঠোর নজরদারিতে রাখার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার নিরাপত্তা নিয়ে ‘জাতীয় মনিটরিং কমিটির সভায় সভাপতির বক্তৃতায় শিক্ষা মন্ত্রী উপরোক্ত কথা বলেন। সভায় শিক্ষা সচিবের দায়িত্ব পালনরত অতিরিক্ত সচিব এ এস মাহমুদ, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ফাহিমা খাতুন, বিভিন্ন শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় জানানো হয়, প্রত্যেকটি বিষয়ের পরীক্ষায় প্রথমে বহু নির্বাচনী ও পরে সৃজনশীল/রচনামূলক (তত্ত্বীয়) অংশের পরীক্ষা নেয়া হবে। পরীক্ষার মাঝে ১০ মিনিট সময়ের ব্যবধান থাকবে। এর আগে, সৃজনশীল পরীক্ষার পর বহুনির্বাচনী পরীক্ষা নেয়া হতো। উল্লেখ্য, গত কয়েক বছর পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ ওঠে। ফেসবুকসহ ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাঁস হওয়া প্রশ্ন ছড়িয়ে দেয়া হয়। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বারবারই গুজব বলে তা নাকচ করে আসছে।